বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলরুমে সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও অন্যান্য নির্বাচনের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
গত নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, বিগত নির্বাচনের জন্য মানুষ আপনাকে যে ধিক্কার দিচ্ছে, সেটা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য সামনের নির্বাচনগুলো সুষ্ঠুভাবে করার সুযোগ করে দেন। তাহলে আপনি গত নির্বাচনে যে ধিক্কার পেয়েছিলেন তা থেকে মুক্তি পাওয়ার অনেকটা সম্ভাবনা আছে।
তিনি বলেন, সবাইকে আপনি একটা আশ্বাস দেন, যে হুমকি, ধামকি, নির্বাচনের দাঁড়াতে পারবে না, ভোট দিতে পারবে না। রাত বারোটার মধ্যে ভোট হয়ে যাবে, গিয়ে দেখবে ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। এ যে প্রশ্নগুলো, সামনের নির্বাচনগুলোতে যেন জনগণ এসব প্রশ্নের জবাব আপনার কাছে না চায়।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ঐক্যফ্রন্টের কেন জন্ম হলো তার ব্যাখ্যা দিয়ে সংগঠনটির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা কোনোভাবেই স্বতন্ত্রদের মেনে নিতে পারছিলেন না। তারা নানা অজুহাতে একের পর এক প্রার্থীকে নকআউট করছিলেন। আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশন থেকে প্রত্যাখাত হলাম। তারপর জাতীয় প্রেসক্লাবে এসে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করলাম। আমরা সব স্বতন্ত্র প্রার্থী এক হয়ে হাইকোর্টে রিট করে আমাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছিলাম।
তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কি হয়েছে তা দেশের সবাই জানেন। এ নির্বাচনের ফলে বিরোধীপক্ষ নির্বাচনের ওপর থেকে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে। তারা সিটি নির্বাচনসহ সব নির্বাচন বয়কট করেছে। সেক্ষেত্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের একটা বিশাল ভূমিকা আছে। আগামী দিনে এ স্বতন্ত্র সত্ত্বা নিয়ে আমাদের মাঠে দাঁড়াতে হবে।
আব্দুর রহিম বলেন, আমরা যা হারিয়েছি তাতো হারিয়েছি, আর হারাতে চাই। সামনে ঢাকা উত্তর সিটি ও সারাদেশে স্থানীয় নির্বাচন হবে। আমাদের সামনে এখন ভরসা আল্লাহ, জনগণ আর প্রধানমন্ত্রী। আমি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো, আপনি সবার প্রধানমন্ত্রী। যেভাবেই হোক, যে যাই বলুক, আপনি আজকের দিন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী। আপনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। আপনার কাছে জাতির অনেক প্রত্যাশা আছে। সেই প্রত্যাশার দৃষ্টিভঙ্গী থেকে আমরা চাই, আজকে থেকে বাংলাদেশে যে কয়টা নির্বাচন হবে সেগুলো অন্ততপক্ষে মানুষ যেন বলতে পারে, অতি উৎসাহী আওয়ামী লীগের কিছু কর্মী, বা কোনো ব্যক্তি ভোট কেন্দ্রে কোনোভাবে ক্ষতি করতে না পারে। ভোট এবং ভাতের অধিকারের জন্য আপনি বহু আন্দোলন করেছেন।
তিনি বলেন, আমি ঢাকা সিটির একজন প্রার্থী। মানুষের মধ্যে একটা সংশয়, ভোট কি একাদশ জাতীয় সংসদের মতো হবে? তাহলে খামাখা কেন কষ্ট করে দাড়িয়েছেন। তাদের এ প্রশ্নের জবাব আমি কি দেব? আমার কাছে আলাদিনের চ্যারাগ নেই যে বলবো, এবারের ভোট একাদশ সংসদ নির্বাচনের মতো হবে না। একাদশ সংসদ নির্বাচনে যা ঘটেছে, সেটা নিয়ে আলোচনা না করাই ভাল। দুর্গন্ধ ছড়াতে চাই না। আমরা আশা করি প্রধানমন্ত্রী যদি ইচ্ছা করেন, যদি সদিচ্ছা থাকে, যে পলাশির প্রান্তে যা হারিয়েছি, তাতো হারিয়েছি। আমাদের জাতীয় অবক্ষয় হয়েছে। সেই অবক্ষয় থেকে আমরা বাঁচতে চাই।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯
এমএইচ/এসএইচ