তিনি বলেন, পুরান ঢাকাকে কিভাবে নিরাপদ করা যায় সে বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশ কেন বাস্তবায়ন হলো না, কেন নয় বছর পর একই ঘটনা ঘটলো এটার জবাব চাই। চকবাজারের ঘটনায় অবহেলার জন্য এ সরকার খুনের অপরাধের দায়ী হবে।
মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী হলরুমে চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে গণফোরাম আয়োজিত নাগরিক শোকসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ড. কামাল হোসেন বলেন, নয় বছরেও কেন হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়ন হয়নি তা জনগণকে জানানো হোক। জনগণ দেশের মালিক, সেই মালিক হিসেবে আমি এর জবাব চাই। আপনারা কি চান না?
তিনি বলেন, আমি স্বচক্ষে দেখে আসলাম, চকবাজারের চুড়িহাট্টায় মসজিদের সামনে আগুনে যে মর্মান্তিক ঘটনার অবতারণা হয়েছে তা সত্যিই খুব হৃদয় বিদারক।
ড. কামাল বলেন, আজকে আমাদের খুব ঠাণ্ডা মাথায় কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। ১৬/১৭ কোটি মানুষের দেশে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দায়িত্ববোধ ও নৈতিকতার প্রয়োজন রয়েছে। দেশের মানুষের প্রতি দরদের প্রয়োজন আছে। নয় বছর আগে (২০১০ সালে) নীমতলীতে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে ১২৪ জন মানুষ নিহত হয়েছিল। তখন হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছিলেন, এ ধরনের হত্যা যেন না ঘটে, তার জন্য এ পদক্ষেপগুলো নেওয়া হোক। যেসব জায়গায় কেমিক্যাল আছে, সেগুলো ওখান থেকে কিভাবে সরানো যায়। নয় বছর আগে এক, দুই, তিন, চার এভাবে সিরিয়াল করে ১৭টি আদেশ দেয়া আছে; পুরান ঢাকাকে নিরাপদ করার জন্য কিভাবে পদক্ষেপগুলো নিতে হবে।
জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, সরকার ২৯ ডিসেম্বর দেশের ১৬ কোটি মানুষের গায়ে আগুন দিয়েছে। সে আগুন তাদের গায়েও লাগবে। তারা স্বাধীনতার চেতনার কথা বলে। স্বাধীনতার চেতনা যদি হয় ২৯ ডিসেম্বর ভোট ডাকাতি, তাহলে সেই চেতনা আমাদের দরকার নেই। চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ব্যর্থতার দায় নিয়ে সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, চকবাজারে যে শোকাবহ ঘটনা ঘটেছে এটা নিয়ে কথা বলা নয়, শোক জানাতেই এসেছি। তিনি বলেন, ঘটনার বাস্তবসম্মত সমাধান করতে হবে। কেমিক্যালের গোডাউন সরিয়ে নিতে হবে। ব্যবসায়ীদের জন্য অন্য জায়গায় ব্যবস্থা করতে হবে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, চকবাজারে আগুন আমাদের অগ্রগতি রোধ করার কোনো ষড়যন্ত্র নয় তো? এটা আমাদের অর্থনীতিকে রোধ করার কোনো বিষয়ের সঙ্গে জড়িত আছে কিনা? এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।
ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরাম নেতা অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, মেজর জেনারেল (অব.) আ ম সা আ আমিন, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের একাংশের সাধারণ সম্পাদক শাহ আহমেদ বাদল প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন গণফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ। শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন গণফোরামের প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিক।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৯
এমএইচ/এসএইচ