ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

শেষ সময়ে উষ্ণতা ছড়াচ্ছে উপজেলা ভোট

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০১৯
শেষ সময়ে উষ্ণতা ছড়াচ্ছে উপজেলা ভোট উপজেলা ভোটে প্রার্থীদের প্রচারণা। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপেই চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে রাজশাহীতে। জেলার মোট নয়টি উপজেলার মধ্যে এবার আটটিতে ভোট হতে যাচ্ছে আগামী ১০ মার্চ। তবে এরই মধ্যে দুটি উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন নৌকা প্রতীকের দুই প্রার্থী। আর সীমানা জটিলতায় আটকে গেছে একটি উপজেলার ভোট। তাই সব মিলিয়ে শেষ মুহূর্তে উষ্ণতা ছড়াতে শুরু করেছে উপজেলা পরিষদের ভোট।

শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় এখন অনেকটায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজশাহীর উপজেলা নির্বাচনের মাঠ। সকাল থেকে রাত অবধি বিরামহীনভাবে ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে ভোট ভিক্ষা চাইছেন উপজেলার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।

এরইমধ্যে পোস্টার, লিফলেট আর ব্যানারে ছেয়ে গেছে রাজশাহীর আটটি উপজেলার পাড়া-মহল্লা ও গ্রামের মোড় থেকে বাজার-ঘাট।

প্রতীক বরাদ্দের পর গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটের প্রচারণা শুরু হয়েছে রাজশাহীর আটটি উপজেলায়। এরই মধ্যে রাজশাহীর বাঘা ও মোহনপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় দুজন নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেন-আওয়ামী লীগ মনোনীত মোহনপুর উপজেলায় আবদুস সালাম ও বাঘা উপজেলায় লায়েব উদ্দিন লাভলু। ওই দুটি উপজেলায় ভোট হবে ভাইস চেয়ারম্যান পদে। আর অন্য উপজেলাগুলোতে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ভোট।

পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবার বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে মাঠে না থাকলেও আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সঙ্গে লড়াইয়ে নেমেছেন দলের বিদ্রোহীরা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী। এতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলেও দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরাই এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।

প্রতিদিন নানান প্রতিশ্রুতি নিয়ে মাঠ কাঁপিয়ে তুলছেন তারা। রাজশাহীর তানোর, গোদাগাড়ী, বাগমারা, পুঠিয়া, চারঘাট, দুর্গাপুর উপজেলা এখন প্রচার প্রচারণায় সবচেয়ে সরগরম।  

রাজশাহীর তানোর উপজেলায় এবার চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না। তার প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা কৃষক লীগের সাবেক আহ্বায়ক ও সদ্য বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটিতে যোগ দেওয়া শরীফুল ইসলাম। এ উপজেলায় ময়নার অবস্থান অনেক ভালো। তবে তাকে ছাড় দিতে নারাজ শরীফুল ইসলাম। তারা দুজনই নিজ নিজ শক্তি নিয়ে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যানের দুটি পদে লড়ছেন পাঁচজন প্রার্থী।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন চারজন প্রার্থী। এরা হলেন- আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর আলম, একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী বদিউজ্জামান, জাতীয় পার্টির (জাপা) সালাহ উদ্দিন বিশ্বাস ও ওয়ার্কার্স পাটির সাইদুর রহমান।
 
এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে লড়াই চলছে একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী বদিউজ্জামানের। সেখানে এরই মধ্যে বদিউজ্জামানের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। তা নিয়ে টানটান উত্তেজনা চলছে গোদাগাড়ীতে। ওই এলাকার স্থানীয় সংসদ সদস্যকে এরই মধ্যে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন সুফিয়া খাতুন মিলি। তবে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে এখানে লড়ছেন চারপ্রার্থী।

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ফকরুল ইসলামের ছুটে চলা এখন চোখে পড়ার মতো। প্রতিদিনই তিনি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। প্রতিদ্বন্দ্বী অপর দুই প্রার্থী একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী টিপু সুলতান ও জাপার ইকবাল হোসেনের প্রচারণা তেমন একটা সাড়া জাগাতে পারেননি।

এদিকে চারঘাট উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী ছাড়াও সমান তালে ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। নয়জন প্রার্থী রয়েছেন এ দুটি পদে। এর মধ্যে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন তিনজন ও পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছয়জন।

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী অনিল সরকার। তার বিরুদ্ধে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী বাবুল হোসেন। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইজন করে মোট চারজন রয়েছেন ভোটের মাঠে।

রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী নজরুল ইসলামের বিপরীতে ভোটের মাঠে লড়ছেন একই দলের অপর দুইজন প্রার্থী। এরা হলেন- আবদুল মজিদ ও আবদুল কাদের।
 
এদের মধ্যে মজিদের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছিল। কিন্তু পরে উচ্চ আদালত থেকে তা বহাল রাখা হয়েছে। দুর্গাপুর উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যানের দুটি পদে লড়ছেন আটজন প্রার্থী।

এছাড়া রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জিএম হিরা বাচ্চু। তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্থানীয় জাপা নেতা আনসার আলী। তিনি কূল কিনারা না পেলেও এখানে জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত বাচ্চু। এ উপজেলায় পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন চারজন প্রার্থী।

আর বাঘা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে লড়াই না থাকলেও ভাইস চেয়ারম্যানের দুটি পদে লড়ছেন চারজন প্রার্থী। এরা সবাই আওয়ামী লীগের। একই অবস্থা জেলার মোহনপুর উপজেলাতেও। এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচিত হলেও এখানে শুধুমাত্র পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছে চারজন প্রার্থী।  

এ উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সানজিদা খাতুন নির্বাচিত হয়েছেন। সব মিলিয়ে ভোটের দিন ঘনিয়ে আসায় শেষ সময়ের প্রচারণা তুঙ্গে।  

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের পাশাপাশি ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরাও জমিয়ে তুলেছেন ভোটের ময়দান।

আগামী ১০ মার্চ প্রথম ধাপে দেশের ৮৭টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে রাজশাহী বিভাগের চার জেলার ২৮টি উপজেলায় প্রথম ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৯
এসএস/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।