শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে শুরু হয় গণফোরামের এ বিশেষ কাউন্সিল। এতে সভাপতিত্ব করছেন দলের সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিসহ কয়েকটি দলের সমন্বয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়ন নিয়ে সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত হন গণফোরাম নেতা মোকাব্বির খান। ভোটে ঐক্যফ্রন্ট মাত্র আটটি আসনে জেতে। এই বিজয়ীদের একজন মোকাব্বির খানও।
বিএনপি-গণফোরামসহ ঐক্যফ্রন্ট ওই নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে ফলাফল বাতিল করে নতুন নির্বাচনের দাবি তোলে। এরপর জোটের আটজন এমপি হিসেবে শপথ নেবেন না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেই সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন মোকাব্বির। তারও আগে শপথ নেন ‘ধানের শীষ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর।
‘সিদ্ধান্ত অমান্য’ করে শপথ নেওয়ায় দু’জনের ওপরই চটেছিলেন ড. কামাল। মোকাব্বির ২ এপ্রিল শপথ নেওয়ার দু’দিন পর ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে সালাম দিলেই চরম রাগান্বিত হয়ে গণফোরাম সভাপতি তাকে বলেন, ‘আপনি এখান থেকে বেরিয়ে যান, গেট আউট, গেট আউট। আমার অফিস ও চেম্বার আপনার জন্য চিরতরে বন্ধ। ’ সেদিন তাকে কামাল হোসেনের চেম্বার থেকে বেরও করে দেওয়া হয়েছিল। যদিও মোকাব্বির খান বিষয়টি অস্বীকার করেন গণমাধ্যমের কাছে।
সেদিন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেছিলেন, মোকাব্বির খান দলের গঠনতন্ত্র ভঙ্গ করেছেন। আমরা এখন বসে সিদ্ধান্ত নেবো। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কারণেই আমরা সুলতান মনসুরকে বহিষ্কার করেছি। একই ঘটনা মোকাব্বিরও ঘটিয়েছেন। তার ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত আসে, তা জানতে দলের সামনের বৈঠক পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
কবে সেই সিদ্ধান্ত এমন প্রশ্নে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সে সময় বলেছিলেন, আগামী ২০ এপ্রিল দলের সাধারণ সভা এবং ২৬ এপ্রিল কাউন্সিল রয়েছে। কাউন্সিলেই সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি।
সেই মোকাব্বির খানকে গণফোরামের কাউন্সিলে দেখে দলটির নেতাদের অনেকের মধ্যেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কেউ কেউ ক্ষোভও প্রকাশ করেন।
কাউন্সিলের উদ্বোধনী বক্তব্যে সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, সংবিধানের অপব্যাখ্যা দিয়ে সরকার যেন জনগণের অধিকার খর্ব করতে না পারে, সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। ৩০ ডিসেম্বর দেশে নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এই নির্বাচন জনগণের মনোপুত হয়নি। ভোটে জনমতের প্রতিফলন ঘটেনি। এই সংসদ যেন সংবিধানের দোহাই দিয়ে জনগণের অধিকার খর্ব না করতে পারে সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
কাউন্সিলে ড. কামাল হোসেনের ডান পাশে দেখা যায় গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, তারপর অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, ড. রেজা কিবরিয়াকে। কিবরিয়ার পরই দেখা যায় মোকাব্বির খানকে। এছাড়াও কাউন্সিলে আছেন গণফোরামের নেতা জগলুল হায়দার আফ্রিক, রফিকুল ইসলাম পথিক প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৯
এমএইচ/এইচএ/