বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিতে খুব একটা উপস্থিতি নেই তাদের। রাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসের অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠনগুলো যেখানে চাঙা হয়ে উঠেছে সেখানে মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে ছাত্রদল।
অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের আধিপত্য, ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের যখন তখন পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া, প্রশাসনের অসহযোগিতা এসব কারণে ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা নির্বিঘ্নে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না।
সূত্রে জানা গেছে, সংগঠনটির বর্তমান কমিটির সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ ২০০৪-০৫ সেশনে ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগে ভর্তি হন। ২০১২ সালে তার ওই বিভাগে পড়ালেখা শেষ হয়। বর্তমানে তিনি ঢাকায় আছেন এবং সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিতে দায়িত্ব পালন করছেন। সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ২০০৬-০৭ সেশনে ভর্তি হন। সেখান থেকে পরে মার্কেটিং বিভাগে এমবিএ কোর্সে ভর্তি হন। গতবছর এমবিএ শেষ করার মাধ্যমে তিনি ছাত্রজীবন শেষ করেন। এছাড়া সহ-সভাপতি আহসানুজ্জামান অলিন, ইসমাইল হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক রাজু আহমেদ মামুনসহ অনেকেই পড়াশোনা শেষ করেছেন। অনেকেই চাকরি করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২৪ জুলাই ইমতিয়াজ আহমেদকে সভাপতি ও কামরুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই বছরের জন্য রাবি শাখার কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই সময় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ মাত্র ছয়জনকে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর প্রায় মাস তিনেক পর ১৪৩ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। দুই মাসের মধ্যেই হল ও অনুষদভিত্তিক কমিটি দেওয়ার জন্য আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণাতেই শেষ কার্যক্রম। এরপর থেকে ক্রমেই সংগঠনটির কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে।
হিসাব অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ২৩ জুলাই এই কমিটি মেয়াদ পূর্ণ করে। কিন্তু প্রায় তিনবছর ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই চলছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কার্যক্রম।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রদলের একাধিক নেতা বলেন, নতুন কমিটি না হওয়ায় সংগঠনের তরুণ নেতাকর্মীদের মধ্যেও হতাশা ও ক্ষোভ বাড়ছে। যারা দীর্ঘদিন রাজনীতির সঙ্গে থেকেও মূল্যায়ন পাচ্ছেন না তারা আগ্রহ হারাচ্ছেন, অনেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছেন। ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক কার্যক্রমের মাধ্যমে ফোকাসিং না থাকায় নতুন কর্মীও সংগঠনে আসছে না। এতে নেতাকর্মীরা পরস্পরের মধ্যে বিভক্তিতে জড়িয়ে পড়া ছাড়াও অন্য সংগঠনেও নাম লেখাচ্ছেন।
সাংগঠনিক কাজের এমন স্থবিরতা স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান বলেন, কমিটির জন্য কর্মীসভা, কাউন্সিল ইত্যাদি দরকার। বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন সংগ্রাম, জেল-জুলুমের কারণে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। তবে আমরা কেন্দ্রকে অবগত করেছি। শিগগিরই রাবি শাখায় নতুন নেতৃত্ব আসবে।
জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটি কেন্দ্রিক কিছুটা ব্যস্ত সময় কাটছে। আগামী একমাসের মধ্যেই রাবির নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৯
এসএইচ