ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘আজীবন ক্ষমতায় থাকতে খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হয়েছে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৯
‘আজীবন ক্ষমতায় থাকতে খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হয়েছে’

সিলেট: ‘কোনো অপরাধের জন্য নয়, আজীবন ক্ষমতায় থাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সিলেট শহরের একটি হোটেলে জেলা বিএনপি আয়োজিত ‘কারান্তরীণ দেশনেত্রী খালেদা জিয়া, গুম নামক অপরাজনীতির ভয়াবহতা ও অবরুদ্ধ গণতন্ত্র’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সিলেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা ইলিয়াস আলীকে গুম করা হয়েছে।

জিয়া পরিবারের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়েই তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ফরমায়েশি সাজা দেয়া হচ্ছে।

বক্তব্য রাখতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন আমির খসরু। অশ্রুসিক্ত নয়নে দেয়া মর্মস্পর্শী বক্তব্যে তিনি বলেন, গুমকৃত পরিবারের লোকজন যখন আমাদের জিজ্ঞেস করে, আমরা প্রত্যাশা দেব না-কি দোয়া করবো। তখন তাদের জবাব দেয়ার ভাষা খুঁজে পাই না। যারা গুম নামক অপরাজনীতির শিকার হয়েছেন, তাদের নাম বিএনপির খাতায় আজীবন লেখা থাকবে।

তিনি বলেন, বিএনপিকে দুর্বল বলা হয়। কিন্তু আমরা এতো গুম-খুন, হামলা-মামলা, গ্রেফতার, নির্যাতন ও নিপীড়ন সহ্য করেও আজো মাঠে টিকে আছি। আর আওয়ামী লীগ পুলিশী পাহারায় ক্ষমতায় রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই দিন থাকবে না, দিন পরিবর্তন হবেই। আপোষহীন নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে এদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবোই। এজন্য প্রয়োজন একটি গণ আন্দোলন। এই আন্দোলনকে গ্রামেগঞ্জে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে।

আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক এবং ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মানুষের ভোটাধিকার হরণ করতে যাদের লজ্জাবোধ নেই, তাদের মুখে উন্নয়ন আর মানবতার বুলি শুনলে হাসি পায়। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এমন নিষ্টুর, হৃদয়হীন ও ক্ষমতাপিপাসু সরকার জাতি আর কখনো দেখেনি।

নিজেদেরও ব্যর্থতা রয়েছে উল্লেখ করে মান্না বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ভোট চুরির কারণে লাগাতার হরতাল-অবরোধ পালন করলে এই ভোট ডাকাত সরকার শপথ নিতে পারতো না।

নেতাকর্মীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের মনে রাখতে হবে, আমরা একটা কঠিন শক্তির বিরুদ্ধে লড়ছি। এরা শকুনের চাইতেও খারাপ। সরকার বলছে উন্নয়ন উন্নয়ন। আমরা দেখছি কি, উন্নয়ন নামে মেঘা প্রজেক্ট আর মেঘা প্রজেক্টের আড়ালে চলছে মেঘা লুটপাট।

জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল কাহির চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।

জেলার সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম. ইলিয়াস আলীর ছেলে ব্যারিষ্টার আবরার ইলিয়াস, নিখোঁজ ইফতেখার আহমদ দিনারের বাবা ডা. মঈনুদ্দিন, নিখোঁজ ছাত্রদল নেতা জুনেদ আহমদের ছোট ভাই হাসান মঈনুদ্দিন আহমদ ও আনসার আলীর স্ত্রী মুক্তা বেগম।

সভায় প্রখ্যাত সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ ও বিএনপির অন্যতম শীর্ষনেতা সাবেক মন্ত্রী ব্যারিষ্টার আমিনুল ইসলামের মৃত্যূতে শোক প্রকাশ করে তাদের মাগফেরাত কামনা করা হয়।

জেলা ওলামা দলের সভাপতি মুফতি মাওলানা সাদিকুর রহমানের পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সিলেট বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, কেন্দ্রীয় সদস্য সাবেক এমপি শফি আহমদ চৌধুরী, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদিকা সুলতানা আহমেদ, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ সিলেট জেলা সভাপতি ডা. শামীমুর রহমান ও সিলেট মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী।

এছাড়া বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারাও সভায় বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৯
এনইউ/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।