শুক্রবার (১০ মে) দুপুর সোয়া ১২টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ সেন্টারের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে আগমন ও চেয়ারপারসন হিসেবে তিন যুগপূর্তি উপলক্ষে ‘ত্যাগ’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপি মহাসচিব নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা হতাশ হবেন না।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাবুল তালুকদারকে আন্তরিক ধন্যবাদ, তিনি এমন একটি দিনের কথা স্মরণ করে দিয়েছেন, যেদিন একজন গৃহবধূ মানুষের অধিকার আদায় করতে জাতীয়তাবাদী শক্তির হাল ধরেন। একটি পাল ছাড়া নৌকাকে টেনে তোলা চ্যালেঞ্জিং কাজ। তখন ক্ষমতায় স্বৈরাচার এরশাদ, অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই তাকে এগোতে হয়েছে।
জিয়াউর রহমানকে হত্যা ও স্বৈরাচার এরশাদের রাজনীতিতে আগমন একই সূত্রে গাঁথা মন্তব্য করে দলটির মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়ার মতো সংগ্রামী নেতা এশিয়ায় বিরল। তিনি সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন। সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, ৯১ সালে মুক্তবাজার অর্থনীতি ও নারী শিক্ষায় বেগম জিয়ার যুগান্তকারী পদক্ষেপ ইতিহাস হয়ে থাকবে।
দলের নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা মোটেও বিভ্রান্ত হবেন না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানাভাবে দলের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের নেত্রী ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিকনির্দেশনায়ই দল পরিচালিত হচ্ছে। তাদের নির্দেশ মোতাবেক আমরা কাজ করছি।
‘আমাদের বয়স হয়েছে, আমরা প্রতিনিয়ত মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছি, তাই এদেশকে রক্ষায় তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। এদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে। বিচারব্যবস্থাও একই, এখন আর কেউ ন্যায়বিচার পায় না। আইনশৃংখলা বাহিনী একটি দলের কাছে নির্দেশ মোতাবেক কাজ করে। তাই এ অবস্থা থেকে দেশকে উত্তরণ করতে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে।
উদ্বোধকের বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, একজন গৃহবধূ থেকে হাল ধরলেন জাতীয়তাবাদী রাজনীতির। তিনি মহীয়সী নারী খালেদা জিয়া। বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায় তিনি স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক।
এমাজউদ্দীন আহমদ আরও বলেন, এতো দু:সময়েও বিএনপি ঐক্যবদ্ধ, এটা বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের কারণে সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপির গতিশীলতা বৃদ্ধির প্রয়োজন, নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো দরকার। এছাড়াও ২০ দলের সাথেও মাসে একবার হলেও বসা উচিত।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, খালেদা জিয়ার দুর্লভ ছবি প্রমাণ করে, তিনি ছিলেন আপসহীন। আমরা এখন লড়াইয়ের ময়দানে পেছনে, বয়স হয়েছে, লড়াইয়ে সৈনিকদের সঙ্গে আছি।
তিনি বলেন, এতো নির্যাতনের পরও বিএনপি বড় দল হিসেবে টিকে সাহসী যুবকেরা আন্দোলনে নামলে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে। খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন।
ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টারের সভাপতি
ফটো সাংবাদিক বাবুল তালুকদারের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, সাপ্তাহিক জয়যাত্রার সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু প্রমুখ।
আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ সেন্টার। প্রদর্শনীতে বিএনপি চেয়ারপারসনের দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের নানা দুর্লভ ছবি স্থান পেয়েছে এতে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৯
টিএম/এএ