শনিবার (১৮ মে) সকালে পাবনা শহরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে আত্মসমর্পণ করলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস জানান, শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে মারধরের মামলায় শামসুদ্দিন জুন্নুনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল আহাদ বাবু জানান, ছাত্রলীগ নেতা জুন্নুন শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে লাঞ্ছিত করার ঘটনার মামলায় আসামি না হলেও শিক্ষক সমাজের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জুন্নুনকে নির্দেশদাতা হিসেবে অভিযুক্ত করে তাকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। শিক্ষকদের অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করেছে।
জানা যায়, সোমবার (৬ মে) কলেজের ১০৬ নম্বর কক্ষে উচ্চতর গণিত পরীক্ষায় পরীক্ষকের দায়িত্ব পালন করছিলেন ওই শিক্ষক। এ সময় পাবনা মহিলা কলেজের দুই পরীক্ষার্থী দেখাদেখি করায় তাদের সতর্ক করেছিলেন। তারপরেও তারা বিরত না হলে কিছু সময়ের জন্য তাদের খাতা জব্দ করে রাখায় তারা ক্ষুব্ধ হয়। এরপরে রোববার (১২ মে) বাড়ি ফেরার সময় কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি শামসুদ্দীন জুন্নুনের নির্দেশে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা তাকে কিল, ঘুষি, লাথি দিয়ে ফেলে দেয়।
এ ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সারাদেশে নিন্দার ঝড় ওঠে। এ ঘটনার জন্য সারাদেশে শিক্ষক সমাজ প্রতিবাদ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
ঘটনার দিন রাতেই পাবনা সদর থানায় কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এস এম আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় দুইজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩-৪ জনকে আসামি করা হয়। মামলার পর রাতেই অভিযান চালিয়ে এজাহার নামীয় দুই আসামি সজল ইসলাম ও শাফিন শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ ঘটনার পরে পাবনা জেলা ছাত্রলীগ সরকারী শহীদ বুলবুল কলেজের ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে এবং ঘটনার তদন্তের জন্য চার সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করে জেলা ছাত্রলীগ।
অপরদিকে শিক্ষকের নামে পরীক্ষার হলে ছাত্রী হয়রানির অভিযোগ এবং শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় কৃষি বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কৃষ্ণনন্দন কুমার পালকে প্রধান করে একটি ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন শিক্ষক পরিষদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৯
আরএ