হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ মিলাদ এর পক্ষে গত ৭ মে তার কম্পিউটার অপারেটর অলিউর রহমান ইমরান ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করে নবীগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। ওইদিনই গ্রেফতার করা হয় ছাত্রলীগ কর্মী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে।
জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে অস্বচ্ছলদের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেন এমপি মিলাদ গাজী। এ নিয়ে তিনি তার ফেসবুক টাইমলাইনে প্রচার করেন। সেই অনুযায়ী রাতের বেলা গাড়িতে করে খাবার পৌঁছে দেওয়ার ভিডিও প্রসংশিত হয় এলাকায়।
এদিকে সম্প্রতি ছাত্রলীগ নেতা জাকির হোসেন ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুন তাদের ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস আপডেট করেন। এতে উল্লেখ করা হয়, “দয়া করে নোংরা রাজনীতি বন্ধ করুন, কল করুন খাবার পৌঁছে দিব বাড়িতে, এসব ভাওতাবাজি বন্ধ করুন, অসহায় হতদরিদ্রদের নিয়ে আর খেলা করবেন না, দয়া করে এ সব বন্ধ করুন। আমার এলাকার বেশ কয়েকজন লোকের অভিযোগ, বিগত ২০ দিন আগে কল করেও এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি কোনো সহযোগিতা। অসহায় হতদরিদ্রদের আশা দিয়ে কেনো নিরাশ করা হচ্ছে? অসহায়দের এই প্রশ্নের উত্তর আদৌও কেউ দিবেন কি?
অপরদিকে, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল্লাহ রুহেল এক স্ট্যাটাসে লিখেন “ফোন করলেই ঘরে পৌঁছে যাবে খাবার, আমার জানা মতে, অনেকেই ফোন দিল, কিন্তু কারো ঘরে আজও খাবার পৌঁছে নাই, ব্যাপার কি?
এই স্ট্যাটাসগুলো ব্যাপকভাবে প্রচার হলে পক্ষে-বিপক্ষে মন্তব্য করতে থাকেন বিভিন্ন শ্রেণীপেশার লোকজন এবং রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় গত ০৭ মে সংসদ সদস্যের কম্পিউটার অপারেটর বাদী হয়ে ফেসবুকে প্রচারকারী ওই তিনজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। ওইদিনই গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে গ্রেফতার এবং পরদিন কারাগারে পাঠায় পুলিশ। বাকি দুই আসামি পলাতক রয়েছেন।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুর রহমান জানান, ফেসবুকে ত্রাণ বিতরণকে কেন্দ্র একজন সম্মানী ব্যক্তিকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করা হয়েছে। এই অভিযোগে দায়ের করা মামলায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি দুই আসামি পলাতক রয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী বলেন, যেহেতু সংসদ সদস্য সম্পর্কে সমালোচনাকারীরা দলের নেতাকর্মী। তাই মামলা না করে নিজে বাড়িতে ডেকে এনে শাসন করতে পারতেন। নেতাকর্মীদের অভিভাবক হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা উচিত হয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ ব্যাপারে এমপি শাহ নওয়াজ গাজী মিলাদ বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় শুরু থেকেই অসহায় মানুষদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করে আসছেন। মধ্যবিত্তদের সহায়তায় রাতের আঁধারে বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল তার ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে ফেসবুকে নানা মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়েই তাকে মামলায় যেতে হয়েছে। যারা এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে, তারা আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী এবং সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ওই মহলটি গত সংসদ নির্বাচনেও নানাভাবে সমস্যা তৈরি করেছিল বলে জানান তিনি।
তিনি করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ত্রাণ বিতরণের বাইরেও নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসকদের নিরাপত্তার জন্য সেফটি চেম্বার করে দিয়েছেন বলেও জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৭ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০২০
আরএ