ঢাকা: পুলিশের বাধার কারণে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) সিপিবির (এম) পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি স্থগিত হয়েছে।
দেশের পাট শিল্প রক্ষায় ব্যর্থ পাট ও বস্ত্রমন্ত্রীর পদত্যাগ, বন্ধ সব পাটকল চালু এবং পাটকল শ্রমিকদের চাকরিতে পুনর্বহাল ও সব বকেয়া দেওয়ার তিন দফা দাবিতে এই ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণজমায়েত শেষে সচিবালয়ে অবস্থিত পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও করতে গেলে পরিবহন পুলের একটু আগে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। এ সময় তারা কর্মসূচি স্থগিত করেন।
এর আাগে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক ডা. এম এ সামাদ বলেন, পাটের নিত্যনতুন ব্যবহার উদ্ভাবন, রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল, পাটকল বন্ধ নয় আধুনিকায়ন করা, পাটখাতে দুর্নীতি-লুটপাট বন্ধ, দুর্নীতি পরিহার, দুর্নীতি-অনিয়ম-লুটপাট বন্ধসহ বিভিন্ন ন্যায্য দাবি বাস্তবায়ন না করে উল্টো পাট কল বন্ধ করে দেওয়া পাটশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কৃষক-শ্রমিকদের পেটে লাথি মারার শামিল। তিনি আরও বলেন, করোনা সংক্রমণের এই দুর্যোগকালে প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের বিপুল সংখ্যক শ্রমিক-কর্মচারী কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। বিদেশ থেকেও অনেক শ্রমিক কাজ হারিয়ে দেশে ফিরছেন। এই মহাসংকটে সরকার ২৫টি পাটকল বন্ধ করার গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলে প্রায় ৬০ হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়বে। তাদের পরিবার এবং ৪০ লাখ পাটচাষি ও তাদের পরিবার, পাট ব্যবসায়ী মিলে মোট প্রায় ৪ কোটি মানুষ চরম বিপাকে পড়বেন। যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোকে পিপিপির আওতায় বেসরকারি মালিকদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। শ্রমিকদের কোনো ধরনের দায়িত্ব না নিয়ে সরকার একের পর এক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছে। এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া দ্বিতীয় আর কোনো পথ জনগণের সামনে খোলা নেই।
ওই শ্রমিক নেতা বলেন, এক সময়ে সোনালি আঁশ ও রপ্তানির অন্যতম প্রধান পণ্যের এভাবে মুখথুবড়ে পড়া কোনোভাবেই কাম্য নয়। যদি আমরা সবাই মিলে পাটশিল্পকে রক্ষা করতে পারি তাহলে দেশের অর্থনীতি আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। একবিংশ শতাব্দীতে পাটের যুগোপযোগী ব্যবহার পরিবেশ দূষণের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারে। পাট কল বন্ধ না করে কিভাবে পাটশিল্পকে রক্ষা করা যায় তার সঠিক পরিকল্পনা নেওয়ার জোর দাবি করছি। একইসঙ্গে ব্যর্থ পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পদত্যাগ দাবি করছি। যদি আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া হয় তবে, শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলে দাবি মানতে বাধ্য করা হবে।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক সামছুল আলম, কৃষক মোর্চার আহ্বায়ক মোহাম্মদ মাসুম, সিপিবির কেন্দ্রীয় সদস্য শামসুল হক সরকার, আলাউদ্দিন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময় ১১৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০
ডিএন/এএটি