ঢাকা: করোনা ভাইরাস মহামারিতে দেশে টেলিমেডিসিন সেবায় কার্যত বিপ্লব ঘটেছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তবে করোনা চিকিৎসায় সবাই ট্রায়াল অ্যান্ড এরর মেথডের পথে হাঁটছে বলেও জানান তিনি।
মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ‘জয় বাংলা টেলিমেডিসিন অ্যাপ’ উদ্বোধনের সময় তিনি একথা বলেন। ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে অনলাইনে এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে এই অ্যাপ উদ্বোধন করেন। আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটির উদ্যোগে অ্যাপসটি চালু হয়।
জয় বাংলা টেলিমেডিসিন মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে রোগী ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন,
জয় বাংলা টেলিমেডিসিন অ্যাপের মাধ্যমে মোবাইলে ঘরে বসেই দূর-দূরান্তের রোগীরা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছ থেকে চিকিৎসাসেবা নিতে পারবেন।
‘বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবিলায় বেশি অভিজ্ঞ হলেও করোনার মতো বৈশ্বিক মহামারি মোকাবিলায় অভিজ্ঞতা আমাদের তেমন ছিল না। কারণ নিকট অতীতে বাংলাদেশ এ ধরনের ভয়াবহ মহামারির মুখোমুখি হয়নি। মার্স, সার্স ও ইবোলার মতো মহামারির আচ বাংলাদেশে তেমন লাগেনি। করোনা পুরো বিশ্বের জন্য একটি নতুন অভিজ্ঞতা। সমৃদ্ধ দেশগুলোও করোনা মোকাবিলা করতে গিয়ে হিমশিম খেয়েছে। ’
তিনি বলেন, এ ধরনের বৈশ্বিক মহামারি মোকাবিলায় সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা পদ্ধতি না থাকায় বিশ্ব ট্রায়াল অ্যান্ড এরর মেথডের পথে হাঁটছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়।
‘এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিশ্ব টালমাটাল। অর্থনৈতিক ও সামাজিক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম। চিকিৎসকরা নিজে ও রোগীর কথা বিবেচনা করে এই মহামারি থেকে বাঁচতে চেম্বারে রোগী দেখা অনেকটা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এ অবস্থায় সময়ের প্রয়োজনে চিকিৎসাসেবায় নতুন ধারার সৃষ্টি হয়েছে। যেটা হলো টেলিমেডিসিন সেবা। ’
তিনি বলেন, করোনা মূলত এই পথ দেখিয়েছে। দেশে টেলিমেডিসিন সেবায় কার্যত বিপ্লব ঘটেছে। দ্রুতগতির ইন্টারনেট ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে চিকিৎসাসেবা দেওয়া। অন্যথায় এই সেবা দেওয়া সম্ভব হতো না। এই সবকিছুই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী পরিকল্পনা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে।
জয়বাংলা টেলিমেডিসিন অ্যাপ বাংলাদেশের চিকিৎসাখাতে একটি নতুন অধ্যায় উল্লেখ করে কাদের বলেন, জয়বাংলা টেলিমেডিসিন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে রোগী প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা নেবেন। এই অ্যাপে রোগীদের তথ্য সংরক্ষণ থাকবে। ফলে এই তথ্য পরবর্তীসময়ে রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা কাজে ব্যবহার করা যাবে।
ওবায়দুল কাদের এসময় জয় বাংলা টেলিমেডিসিন অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস সংস্কার করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আমি চাই বিস্তার ঘটুক এই অ্যাপ্লিকেশন। মানুষ উপকৃত হোক এ সেবার মাধ্যমে। পাশাপাশি এই অ্যাপ ব্যবহারের রোগীদের কোনো কমপ্লেইন থাকলে তা জানার এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রাখা দরকার।
এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন দেশে দুই ধারার রাজনীতি চলছে। তিনি ঠিকই বলেছেন। দেশে চলমান রাজনীতির দু’টি ধারা- একটি একাত্তরের চেতনার রাজনীতি অপরটি ৪৭'র চেতনার। একদিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রযাত্রা। অপরদিকে অসাম্প্রদায়িক ভাবধারার দেশকে পেছনের দিকে ঠেলে দেওয়ার অপচেষ্টা। একটির উৎস জনগণ এবং জনআস্থা অপরটির উৎস বন্দুকের নল।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও উপকমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হোসেন মনসুর।
উপকমিটির সদস্য সচিব প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর বলেন, মহামারি করোনা ভাইরাসের শুরুতে ডাক্তাররা যখন চেম্বারে সরাসরি রোগীদের সেবা দিতে পারছিলেন না, তখন টেলিমেডিসিন সেবাই একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছিল। এর পরই ‘জয় বাংলা টেলিমেডিসিন অ্যাপ’ নিয়ে কাজ শুরু করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০
এসকে/এএ