ঢাকা, রবিবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিচার চেয়ে আমরা গর্জে উঠতে পারিনি’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২২
‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিচার চেয়ে আমরা গর্জে উঠতে পারিনি’


গোপালগঞ্জ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধারা বঙ্গবন্ধুর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। তাঁর মৃত্যুর পর আমরা গর্জে উঠতে পারিনি।

যেমন তাঁর আহ্বানে ৭ মার্চ নিরস্ত্র বাঙালিরা গর্জে উঠেছিলাম। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমরা হারিয়ে গিয়েছিলাম। স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। নির্বাক হয়ে গিয়েছিলাম। নিজেদের শরীরে চিমটি কেটে অনুভূতি নিতে চেষ্টা করেছিলাম, আমরা আছি না মরে গেছি।

মঙ্গলবার (২২ মার্চ) বিকেল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় কেন্দ্রীয় যুবলীগ আয়োজিত  আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, হে পিতা ক্ষমা করো আমাদের। তোমার মৃত্যুর পরে আমরা তোমার জন্য দাঁড়াতে পারিনি, হুংকার দিতে পারিনি, বলতে পানিনি আমরা তোমার হত্যার বিচার চাই। অপেক্ষা করতে হয়েছিল অনেক দিন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে আসার পর বাংলার মানুষ বুঝেছিলে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার পাবে। তিনিই বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার করেছেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে চার বছরে ধ্বংসস্তূপ থেকে আমাদের দাঁড় করিয়েছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে একের পর এক সফলতার দার উন্মোচিত হচ্ছিল। ঠিক তখন একই গোষ্ঠী তাকে হত্যা করে।

মন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলন বদলে দেবেন বাংলাদেশকে। যথার্থভাবেই তিনি বদলে দিয়েছেন বাংলাদেশকে। আমরা সেই দৃশ্যটাই দেখতে পাচ্ছি। সারা বাংলাদেশ আজ আলোকিত করেছেন। বাংলাদেশ আজ তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে সম্ভাবনাময় দেশ। আমাদের লক্ষ্য কিন্তু অনেক। ২০৪১ সালে আমরা উন্নত বাংলাদেশের যে স্বপ্ন দেখছি, সেই জায়গায় আমরা পৌঁছে যাব ইনশাল্লাহ।

বিশেষ অতিথি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান বলেন, হঠকারী রাজনীতি যারা করে, তারা সফল হয় না। বিএনপি-জামায়াত হঠকারী রাজনীতি করেছে। তার খেসারত খালেদা জিয়াকে দিতে হচ্ছে। খালেদা জিয়ার দলের নেতারা বিভ্রান্তিকর কথা বার্তা বলছেন। যুবলীগকে তাদের মোকাবিলা করতে হবে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে রাজাকার, আলবদর, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাজ শুরু করেছিলেন। তখন বিএনপি-জামায়াত তাদেরকে রক্ষার চেষ্টা করেছে। সেই বিএনপি এখন শেখ হাসিনার সরকার উৎখাত করতে চায়।

তিনি আরও বলেন, রাজনীতির সূত্র না জানলে রাজনীতির হিসেব মিলবে না। খালেদা জিয়া রাজনীতির হিসেব জানেন না বলেই তিনি পেট্রোল বোমা দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বাংলার শ্রমিক-জনতা-কর্মচারী পেশাজীবী তা হতে দেয়নি।

তিনি খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে বলেন, খালেদা জিয়া আপনি মনে করেছিলেন ডাক দিলে মানুষ নেওয়া যাবে। এই বাংলার জনগণ আপনার ডাকে আর সাড়া দেবে না। আপনার নেতারা আজকে উন্মাদের মতো কথা বলছেন। খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার উন্নয়ন নিয়ে নানা কথা বলেছিলেন। পদ্মাসেতু নির্মাণের সময় তিনি বলেছিলেন এই পদ্মাসেতুতে কেউ ওঠবেন না। জোড়াতালি দিয়ে পদ্মাসেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। ভেঙে পড়বে। তার জ্ঞান দেখলে আমরা বিস্মিত হই। অবাক হই।

আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, এমপি।

যুবলীগের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শাসম পরশের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ ফজলে নাঈম, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান  বক্তব্য রাখেন। পরে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

এর আগে গোপালগঞ্জের আশপাশের ১০ জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী এ আলোচনা সভায় যোগ দেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫১ ঘণ্টা, ২২ মার্চ, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।