ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

আ. লীগকেই দেশের ‘প্রথম চোর’ বললেন দলটির সাবেক নেতা মান্না

নিশাত বিজয়, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২২
আ. লীগকেই দেশের ‘প্রথম চোর’ বললেন দলটির সাবেক নেতা মান্না ছবি: ডি এইচ বাদল

ঢাকা: ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। সে সময় দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯৬ ও ২০০১ সালে নৌকার টিকিট নিয়ে নির্বাচন করেন। কিন্তু জাতীয় সংসদের সদস্য হতে পারেননি। সেই মান্নাই তার সাবেক রাজনৈতিক দলকে দেশের ‘প্রথম চোর’ হিসেবে আখ্যা দিলেন।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, আওয়ামী লীগ দেশের প্রথম চোর। স্বাধীনতার পর তারাই প্রথম ব্যালট বাক্স চুরি করেছে। বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেমের স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আখ্যা দেন।

মান্না বলেন, আমরা এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি ভোট ছাড়া ক্ষমতায় থাকার জন্য। শেখ হাসিনাও এখন ভোট ছাড়া ক্ষমতায় আছেন। এরশাদ স্বৈরাচার ছিলেন, তার চেয়ে বেশি স্বৈরাচার এ সরকার। এরশাদ ও আইয়ুব খানও এভাবে উন্নয়নের গল্প শুনিয়েছেন। সবাই একসাথে রাস্তায় নামলে সরকারের পতন হবে। যুগপৎ আন্দোলনে সরকারের পতন ঘটাতে আমাদেরকে পারতেই হবে।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ১২ বছর ধরে প্রমাণ হয়েছে উন্নয়নের নামে সরকার যা করেছে তা একেকটি লুটপাটের প্রজেক্ট। সরকারের লোকেরা হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট ও পাচার করেছে। দেশে এক কোটি শিক্ষিত বেকার। ৬ কোটি টাকার কাজ ১০ কোটি টাকা দিয়ে করেছে।

শেখ হাসিনা আমেরিকা-লন্ডনে গিয়ে দেশগুলোর নেতাদের ‘ম্যানেজ’ করতে গেছেন মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, তিনি দেশগুলোয় গিয়ে বোঝাচ্ছেন আমরা ইভিএম’এ ভোট করি। ইভিএম তো স্বচ্ছ। এজন্যই আমাদেরকে বোঝাতে হচ্ছে এই ইভিএম সেই ইভিএম নয়। বাংলাদেশের ইভিএম চুরির বাক্স। চুরি করার ইভিএম। এখানে ভোটের পর পেপার ট্রেইল বের হয় না।

অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর রায়, ড. মাহবুব উল্লাহ, মনিরুল হক চৌধুরী।

এক নজরে মান্নার রাজনীতি-
১৯৬৮ সালে ছাত্রলীগের আহ্বায়ক হন মাহমুদুর রহমান মান্না ১৯৭২ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালে জাসদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, পরে ১৯৭৬ সালে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি। ১৯৭৯ সালে ঢাকায় এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) নির্বাচিত হন। ১৯৮০ সালে তিনি বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) গঠন করেন।

বাসদের ব্যানারে ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন তিনি। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জাতীয় মুক্তি দলের ব্যানারে ভোট করে মাত্র দুই হাজার ভোট পান। একই বছর তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে নির্বাচনে অংশ নিয়ে হেরে যান।

২০০৭ সালের আলোচিত ১/১১’র সরকারের সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় সংস্কারপন্থী হিসেবে চিহ্নিত হন। ২০০৮ সালে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত হন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তাকে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়।

এর পর মাহমুদুর রহমান মান্না আহ্বায়ক হিসেবে নাগরিক ঐক্য গঠন করেন। বর্তমানে তিনি এ দলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০১৮ সালের জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অংশ নেন। বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করলেও জিততে পারেননি তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২
এনবি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।