ঢাকা : তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ বলেছেন, ‘দুর্নীতিবাজ ও নির্বোধদের হাতে দেশের জ্বালানি খাত জিম্মি হয়ে পড়েছে। সরকার পরিকল্পিতভাবে বিদ্যুৎকে ব্যবসায়িক পণ্য বানিয়ে ফেলেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে মুক্তি ভবনে ‘সমুদ্রের গ্যাস ব্লক নিয়ে জাতীয় স্বার্থবিসর্জনকারী চুক্তি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট এবং রামপাল বিষয়ক’ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ৭ দফা দাবিতে আগামী ২৮ এপ্রিল থেকে ৭ মে পর্যন্ত সারা দেশে বিদ্যুৎ অফিস ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সামনে সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে।
আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘রেন্টাল, কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করলেও এখন ভর্তুকি কমাতে তা ঠিকমতো চালানো হচ্ছে না। অথচ অন্ধকারে থেকেও মানুষকে দফায় দফায় বিদ্যুৎতের বাড়তি দাম দিতে হচ্ছে। ’
তিনি বলেন, ‘সরকার এখন ধনিক শ্রেণীর কাছে বেশি দামে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ বিক্রির প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশে বৈষম্য সৃষ্টি করছে। এ প্রক্রিয়ার ফলে যাদের টাকা আছে তারা বিদ্যুৎ পাবে আর দেশের সাধারণ গরীব মানুষ, কৃষকরা বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত হবে। ’
আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘রামপালে প্রস্তাবিত ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মোট খরচের মাত্র ১৫ ভাগ দিয়েও অর্ধেক মালিকানা পাবে ভারত। অথচ এ প্রকল্পের ৭০ ভাগ ঋণের টাকা সুদসহ বাংলাদেশকে পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া সুন্দরবন এলাকার পরিবেশে ২৩ ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।
আনু মুহাম্মদ সমুদ্রসীমা প্রসঙ্গে বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিষ্পত্তির পর কনোকো ফিলিপসকে নতুন করে আরো ছয়টি ব্লক দেওয়ার তোড়জোর করছে সরকার। এরই মধ্যে কনোকো ফিলিপসকে সমুদ্রের ১০ ও ১১ নম্বর ব্লক দিয়ে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলা হয়েছে। ’
তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন গ্যাস ক্ষেত্রে এখনো পর্যাপ্ত গ্যাস মজুদ আছে। এছাড়া পিডিবির নিজস্ব বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো সংস্কার করলে ও গ্যাসের সরবরাহ বৃদ্ধি করলে আরও প্রায় ২৪শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। কিন্তু সরকার তা না করে কমিশনের লোভে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দিকে ঝুঁকে আছে। ’
কলামিস্ট আবুল মকসুদ বলেন, ‘মহাজোটের জ্বালানি নীতি জাতিকে মহাসংকটে ফেলে দিয়েছে। ’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ র্নিবাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ না করে জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। এখন সর্বদলীয় কমিটির মাধ্যমে আন্দোলন করে জাতিকে জ্বালানি সংকট থেকে বের হতে হবে। ’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের আহবায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, কমিটির সদস্য জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১২
ইএস/ সম্পাদনা: জাকারিয়া মন্ডল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর