ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

বাস্তবায়নের সময় পরিকল্পনা পরিবর্তন হয়

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৪
বাস্তবায়নের সময় পরিকল্পনা পরিবর্তন হয় ড. তৌফিক-ই-ইলাহী

ঢাকা: ২০৩০ সালে দেশিয় কয়লা দিয়ে ১২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। কিন্তু দেশিয় কয়লা উত্তোলনের কোনো উদ্যোগ নেই।

থমকে আছে কয়লা নীতির কাজও।

প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী জানিয়েছেন, একটা পরিকল্পনা তৈরি হলে বাস্তবায়নের সময় তা পরিবর্তন হয়। বড়পুকুরিয়ার উত্তর দিকে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে বেশি করে কয়লা উত্তোলন করা হবে।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ডিসি সম্মেলনে থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। তবে পরিবর্তিত কী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে তা জানাননি জ্বালানি উপদেষ্টা।

১২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে বছরে ৩৬ মিলিয়ন টন কয়লার প্রয়োজন হবে। এই পরিমাণ কয়লা শুধু বড়পুকুরিয়া থেকে সরবরাহ দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কারণ বর্তমানে দেশের একমাত্র বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে বছরে মাত্র এক মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে।
যদিও সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান জ্বালানি উপদেষ্টা।  

অর্থমন্ত্রী ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, ‘দেশিয় কয়লা ক্ষেত্রসমূহ হতে কয়লা উৎপাদন বৃদ্ধির কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ অতীব জরুরি’।

পিডিবির মাস্টার প্লানে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে। এরমধ্যে কয়লা দিয়ে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। দেশিয় কয়লা দিয়ে ১২ হাজার মেগাওয়াট ও আমদানিকৃত কয়লা দিয়ে ৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।

দেশের কোনো খনি থেকে কয়লা উত্তোলন করতে হলে শুরুর দিন থেকে কমপক্ষে ৫ বছর সময় প্রয়োজন। এর বাইরে রয়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রসঙ্গ। রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের আলোচনা শুরু হয় ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময়ে।

এরপরেই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ৫ বছর পার হয়ে গেছে প্রাথমিক স্তরেই। এখন পর্যন্ত প্রকল্প সাইটে মাটি ভরাট কাজই শেষ হয়নি। ২০১৯ সালের আগে সেখান থেকে বিদ্যুৎ পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
 
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রকে আদর্শ ধরা হলে একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ পেতে কমপক্ষে ৯ বছর সময় প্রয়োজন। সেখানে পিডিবি মনে মনে হিসেবে কষছে, ২০৩০ সালে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে কয়লা দিয়ে। যার জন্য দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।

দেশে ৫টি কয়লা খনির মধ্যে শুধুমাত্র দিনাজপুরের বড়ুপুকুরিয়া খনি থেকে কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে। অন্যগুলো নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্তের অভাবে ঝুলে রয়েছে। আর কয়লা নীতি প্রণয়ন নিয়ে লুকোচুরি চলছে ২০০৪ সাল থেকে। চলছে রিভিউয়ের পর রিভিউ। কিন্তু চূড়ান্ত করা হচ্ছে না সেই নীতিমালা।

সরকারি হিসেব মতে, দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া, ফুলবাড়ি, জয়পুরহাটের দীঘিপাড়া, রংপুরের খালাশপীর এবং বগুড়ার কুচমায়সহ পাঁচটি কয়লা খনি আবিষ্কৃত হয়েছে। এসব খনিতে মজুদ রয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৩০০ মিলিয়ন টন উন্নতমানের কয়লা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৪



বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।