জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: বিশ্ববাজারে অব্যাহতভাবে জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ায় অতিরিক্ত মুনাফা হচ্ছে। এই দাম আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
মঙ্গলবার (০২ ফেব্রুয়ারি) রাতে জাতীয় সংসদে জ্বালানি তেলের দাম না কমানোর জন্য সরকারের সমালোচনা করেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিম।
তিনি বলেন, বিশ্ব বাজারে জ্বালানির দাম কমলেও প্রতিমন্ত্রীর কানে পানি আসে না, তিনি কী করছেন?
জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) ৩২ হাজার কোটি টাকা দেনা ছিল। বর্তমানে এটা কিছুটা কমে এসেছে। গত বছর জ্বালানি তেল থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার মতো অতিরিক্ত পেয়েছি। সেখান থেকে ৭ হাজার কোটি টাকা চারটি ব্যাংকের দেনাসহ ভ্যাট-ট্যাক্স পরিশোধ করেও দুই/আড়াই হাজার কোটি টাকা রয়েছে।
তিনি বলেন, বিপিসির নতুন পাইপলাইন ইনফ্রাস্ট্রাকচারের উন্নয়ন চলছে। এই টাকাগুলো আমরা পকেট রেখে দেইনি বা বিপিসি কোনো জায়গায় রেখে দেয়নি, বিদেশেও পাঠানি। আমরা পাইপলাইন নির্মাণে টাকাগুলো ব্যবহার করছি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত যদি পাইপলাইন করতে পারি তাহলে বছরে ৫০ মিলিয়ন ডলার আমরা সাশ্রয় করতে পারব। তেলের যে ভেজাল করা হয় সেখান থেকেও তেলকে সাশ্রয় করতে পারব। গভীর সমুদ্রবন্দরে দুটি পাইপলাইন করার চুক্তি করেছি। সেগুলো একনেক সভায় পাস হয়েছে। এতে সরকার বছরে একশ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করতে পারবে। যখন তেলের দাম অতিরিক্ত ছিল তখন কিন্তু সরকার একসময় ভতুর্কি দিয়ে সবাইকে তেল সরবরাহ করেছে। এখন যেহেতু তেলের দাম কমে গেছে। আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে কিন্তু সরকার লাভবান হচ্ছে না। ভতুর্কিটা পরিশোধ হচ্ছে। অর্থমন্ত্রণালয় আমাদের ভতুর্কি হিসেবে ধরে না। আমাদের ঋণ হিসেবে সুদসহ টাকা নিচ্ছি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেভাবে আমাদের গ্যাসের ব্যবহার বাড়ছে। এভাবে গ্যাস আর আমাদের ১০/১২ বছর চলবে। যদি নতুন আবিষ্কৃত গ্যাস পাইপলাইনে না আসে তাহলে আমাদের এই মজুদকৃত গ্যাস উল্লেখিত বছরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। তবে আমরা বিকল্প হিসেবে একটি পরিকল্পনা নিয়েছি। আবাসিক খাতে পাইপলাইনের ১২ শতাংশ মানুষ ব্যবহার করে। বাকিরা সবাই সিলিন্ডার বা লাকড়ি ব্যবহার করে। সবাই যাতে সুনিশ্চিতভাবে সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি ব্যবহার করতে পারে সেজন্য আমরা একটি অ্যাকশন প্লান তৈরি করছি, আগামীতে আবাসিক খাতে আমরা কী ধরনের জ্বালানি দেব।
তিনি বলেন, ধীরে ধীরে আগামী তিন বছরের মাথায় সারা দেশে ৭০ শতাংশ আবাসিক খাত এলপিজিতে চলে যাবে এবং এটা দেওয়া হবে সাশ্রয়ী মূল্যে। আমরা আরবান খাতে পাইপলাইনের যে গ্যাস ব্যবহার করি তার মূল্য মাসে ছয়শ টাকা। আর এলপিজি যারা ব্যবহার করে তাদের প্রতি মাসে দেড় থেকে আড়াই হাজার টাকা লাগে। তাই আরবান এবং রুরালের মধ্যে এই বৈষম্য সমন্বয় করার অ্যাকশন প্লান নিয়েছি।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, তেল আমরা ইমপোর্ট করি। আমরা বাংলাদেশে যে গ্যাস উৎপন্ন হয় এই গ্যাস ফিল্ড থেকে কনডেনসার নামে একটি প্রোডাক্ট চলে আসে। সেটাকে আমরা রিফাইন করে পেট্রোল পাই। পাশাপাশি পেট্রোলের সাথে কিছু কেরোসিন ও ডিজেল পাই। এই কনডেনসারটাকে যদি আমরা আরও কিছুটা রিফাইন করি তাহলে অকটেন পাই। অর্থ্যাৎ কিছু অকটেন আমরা বাংলাদেশে উৎপাদন করি। বাকিটা ইমপোর্ট করি। পেট্রোল আমরা একদমে ইমপোর্ট করি না।
মন্ত্রী বলেন, প্রেট্রোলের ব্যবহার বাংলাদেশে কমে গেছে। কারণ অধিকাংশ গাড়ি এখন সিএনজিতে চলে। পেট্রোল আর কেউ ব্যবহার করতে চায় না। বাংলাদেশে আমরা ২ লাখ ৮০ হাজার টন পেট্রোল উৎপাদন করতে পারি। কিন্তু সেখানে এখন ১ লাখ ২০ হাজার টন উৎপাদন করছি। এখানে আমাদের ব্যবহারটা বাড়ানো উচিত। আরেকটি বিষয় হলো, যদি আমরা সিএনজি থেকে গ্যাসটা শিল্পতে ব্যবহার করতে পারি তাহলে শিল্পতে আমাদের চাকরির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। তবে বেশ কিছু দিন যাবৎ গ্যাসের সমস্যা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এখন আপাতত অসুবিধা নেই। বাসা-বাড়িতে এখন গ্যাস নিয়মিত হয়ে গেছে। কিছুদিন গ্যাসের পাইপলাইনে ময়লা দেখা গিয়েছিল একারণে সেটা পরিষ্কার বা মেইনটেন্যান্সের জন্য গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৬
এসএম/এমজেএফ
** শেখ হাসিনার নামে টাঙ্গাইলে মেডিকেল কলেজ
** জঙ্গি তৎপরতা রোধে গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার হয়েছে
** প্রতিষ্ঠান প্রধান নারীদের সংখ্যা পাঁচগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে
** পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ে কিছু করছি না
** দেশে কারাগারে বন্দির সংখ্যা ৬৯ হাজার
** পাকিস্তান বরাবর হতাশ করেছে