প্রধান গ্রিড আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ পুরোপুরি মেরামত করতে তিন থেকে চার মাস সময় লাগতে পারে বলে বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
তিনি জানিয়েছেন, সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
কয়েক বছর আগে রংপুর অঞ্চলে প্রধান গ্রিডের একটি টাওয়ার উপড়ে পড়েছিল। তখনও অনেকদিন সময় লেগেছিল উপড়ে পড়া টাওয়ার মেরামত করতে। তবে সেখানে অস্থায়ী খুঁটি বসিয়ে বাইপাস লাইন স্থাপন করে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল করা হয়।
একইভাবে এবারও ভৈরবে টাওয়ার উপড়ে পড়েছে। তবে রংপুরে ছিল সমতল ভূমি। কিন্তু এবারে উপড়ে গেছে নদীর তীরবর্তী এলাকায়। এখানে বাইপাস লাইন করা অনেকটাই জটিল বলে জানিয়েছেন পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) সূত্র।
সোমবার (১ মে) রাতেই ঝড়ের কারণে টাওয়ার উপড়ে পড়ে বিকল হয়ে পড়ে প্রধান গ্রিড। তখন বিকল্প গ্রিড ঘোড়াশাল-ইশ্বরদী হয়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন সচল করা হয় দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। কিন্তু মঙ্গলবার (২ মে) বেলা ১১টা ২০ মিনিটে বিকল্প গ্রিড ঘোড়াশাল-ইশ্বরদীও ট্রিপ করে। আর সঙ্গে সঙ্গে ২৭টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছিল। বিকেল ৩টা নাগাদ বিকল্প গ্রিড মেরামত করে চালু করা হয়।
এদিকে বুধবার বিদ্যুৎ বিভাগ গ্রিডের বিপর্যয়ের কারণ উদঘাটনে তদন্ত এবং ভবিষ্যত বিপর্যয় রোধে সুপারিশ প্রদানের জন্য তিন সদস্যের পৃথক কমিটি গঠন করেছে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম সচিব শেখ ফয়জুল আমীনকে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন পিডিবির প্রধান প্রকৌশলী উৎপাদন সাঈদ আহমেদ এবং পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) প্রধান প্রকৌশলী সিস্টেম অপারেশন প্রণব কুমার রায়।
অন্যদিকে মঙ্গলবার ঘটনার পরপরই পিজিসিবি চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক পিজসিবির প্রধান প্রকৌশলী (সঞ্চালন-২) মো. কামরুল হাসান গতকাল কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। ঝড়ের কবলে লাইন ভেঙ্গে পড়ার ঘটনা প্রাকৃতিক হলেও দ্বিতীয় সঞ্চালন লাইনটি কেন ওভারলোডে চালানো হলো তা অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কমিটি সূত্র।
২০১৪ সালের ১ নভেম্বর জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় দেখা দেয়। যার ফলে বিদ্যুৎহীন পড়েছিলো পুরোদেশ। এজন্য উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তারা একগাদা সুপারিশসহ রিপোর্টও জমা দেয়। সেখানে অনেকগুলো সুপারিশ দেওয়া হয়েছিল। যেগুলো ধাপে ধাপে বাস্তবায়নের কথা বলেছিলেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, মোট উৎপাদনের ৫০ ভাগের বেশি আসছে বেসরকারিখাত থেকে। দেশে এখন বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর স্থাপিত ক্ষমতা ১২ হাজার ১৩৩ মেগাওয়াট। এরমধ্যে প্রায় ১০ হাজার মেগওয়াট বিদ্যুৎ সর্বোচ্চ চাহিদার সময় উৎপাদন করা হয়। এতো বিদ্যুৎ উৎপাদন স্বত্ত্বেও কোন কোন এলাকায় লোডশেডিং এর জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ সঞ্চালন সীমাবদ্ধতাকে দায়ী করে থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, মে ৩, ২০১৭
এসআই/জেডএম