রাজশাহী : উৎসবমুখর পরিবেশ ও জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হলো ‘বসুন্ধরা সিমেন্ট শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা-২০১২।’
শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা বিভাগে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
পাশাপাশি এ সময় ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেওয়া হয় রাজশাহী বিভাগ থেকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ৬৩ প্রতিযোগীর হাতে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাবির চারুকলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. বিলকিস বেগম।
বসুন্ধরা সিমেন্ট সেক্টরের চিফ মার্কেটিং অফিসার সাইফুল ইসলাম হেলালীর পরিচালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের প্রভাষক কনক কুমার পাঠক, এ কে এম আরিফুল ইসলাম, সিমেন্ট সেক্টরের ব্র্যান্ড ম্যানেজার শামীম আল মামুন, রিজিওনাল সেলস ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চারুকলা বিভাগের সভাপতি ড. বিলকিস বেগম বলেন, শিশুদের প্রতিভা বিকাশের উল্লেখযোগ্য একটি ক্ষেত্র হচ্ছে চিত্রাঙ্কন। ক্যানভাসে রঙ-তুলির অাঁচরে শিশুরা তাদের নিজস্ব চিন্তা-চেতনার বহির্প্রকাশ ঘটায়।
তিনি আরও বলেন, শুরুতেই তাদের যথাযথ দিক-নির্দেশনা ও সুযোগ সৃষ্টি করে দিলে ভবিষ্যতে তারা দেশ ও জাতির জন্য সুনাম বয়ে আনে।
এ ক্ষেত্রে দেশের অন্যতম ব্যবসায়ী আইকন বসুন্ধরা গ্রুপের এ উদ্যোগ শিশুদের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করায় ড. বিলকিস বেগম বসুন্ধরা গ্রুপের প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
এ প্রতিযোগিতার প্রথম পর্বে রাজশাহী বিভাগের সাত জেলা থেকে পাঁচ শতাধিক শিশু-কিশোর অংশ নেয়। এর মধ্যে ক, খ ও গ বিভাগে প্রত্যেক জেলা থেকে তিনজন করে মোট ৬৩ জনকে দ্বিতীয় পর্বের জন্য নির্বাচিত করা হয়।
পাশাপাশি ওই ৬৩ জনকে শুক্রবার সনদপত্র ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এর মধ্যে রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী জেলা থেকে নাজিম ফয়সাল সদয় (ক বিভাগ), হাসনা হুমায়রা (খ বিভাগ) ও ফাহিম রাজিত হোসেন (গ বিভাগ) প্রথম হয়েছে।
এছাড়া বিভিন্ন জেলায় প্রথম স্থান অধিকারী প্রতিযোগীরা হলো-বগুড়া জেলার সাহিব আল কবির (ক বিভাগ), কাজী ফিরোজ মাহমুদ বাপ্পী (খ বিভাগ) ও সাদিয়া মুসতারিন (গ বিভাগ), নাটোরের তাইয়েবা আফসীন সুবহা (ক বিভাগ), নাফিস পাটোয়ারী (খ বিভাগ) ও অমর্ত্য অর্ণব মিত্র (গ বিভাগ), নওগাঁর মারজিনা মাহজাবিন তমা (ক বিভাগ), সাদিয়া আফরিন অনিকা (খ বিভাগ) ও নিশাত সুবা (গ বিভাগ), চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাইকা রহমান হিয়া (ক বিভাগ), মনোয়ার আহমেদ(খ বিভাগ) ও সাদিয়া আফরিন (গ বিভাগ), পাবনার তানভিন আহমেদ (ক বিভাগ), সাবিত ইবনে নূর (খ বিভাগ) ও রুবাইয়াত শারমিন (গ বিভাগ) এবং সিরাজগঞ্জের সুবাতা ইসলাম পিয়াস (ক বিভাগ), নাসির আহমেদ (খ বিভাগ) ও নীলাদ্রি শেখর রায় (গ বিভাগ)।
রাজশাহী জেলায় দ্বিতীয় স্থান অধিকারী মাসকুরা রহমান শ্রাবণীর মা জেসমিন আরা বেগম মেয়ের এ সাফল্যে মহাখুশি।
তিনি জানান, ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী শ্রাবণী লেখাপড়ার পাশাপাশি ছবি আঁকাতেও সমান পারদর্শী। তবে বসুন্ধরা গ্রুপ এ ধরনের আয়োজন না করলে অঙ্কুরেই তার প্রতিভা ঝরে যেতো, এভাবে বিকশিত হতো না।
একই ধরনের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন নাটোর জেলার দ্বিতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত তানজিনা রহমান অভির মা আবেদা রহমান।
তিনি এ রকম আয়োজনের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের প্রশংসা করেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, দেশের সব বিভাগ থেকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রতিযোগীদের মধ্যে ঢাকায় জাতীয় পর্যায়ের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এতে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হবে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে।
প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্যায়ে ক, খ ও গ বিভাগের বিজয়ীদের ১ম পুরস্কার ল্যাপটপ, দ্বিতীয় পুরস্কার নগদ ১০ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার নগদ ৫ হাজার টাকা ও বিশেষ পুরস্কারসহ মোট ৩০টি পুরস্কার দেওয়া হবে।
এছাড়া জেলা, বিভাগ ও চূড়ান্ত জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগীদের ক্রেস্ট, সনদপত্র ও পুরস্কার দেওয়া হবে। প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে থাকছেন দেশবরেণ্য শিল্পী হামিদুজ্জামান খান ও শিল্পী আবুল বারক আলভী।
বাংলাদেশ সময় : ১৮৪৯ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১২
প্রতিবেদন : শরীফ সুমন ও জনাব আলী /সম্পাদনা: শিমুল সুলতানা, নিউজরুম এডিটর ও অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর