আজিমপুর কবরস্থানে কাইয়ুম চৌধুরীর মরদেহ

আদিত্য আরাফাত, সাঈদ শিপন ও ইমরান আহমেদ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম | আপডেট: ১৬২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১৪
ছবি: কাশেম হারুন / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ছবি: কাশেম হারুন / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

আজিমপুর থেকে: শেষ নামাজে জানাজার পর বরেণ্য চিত্রশিল্পীর কাইয়ুম চৌধুরীর মরদেহ আজিমপুর কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এইখানেই চিরতরে সমাহিত করা হবে নন্দিত এই চিত্রশিল্পীকে।

সোমবার (০১ ডিসেম্বর) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তার মরদেহ বাড়ি থেকে ছাপড়া মসজিদে নিয়ে আসা হয়। এখানে শেষ দফা জানাজা সম্পন্ন হয়।

এর আগে, বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কাইয়ুম চৌধুরীর নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়। সেখানে জানাজা শেষে মরদেহ তার আজিমপুরের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।

ঢাবির কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজায় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে অংশ নেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রমুখ।

ছাপড়া মসজিদে জানাজা শেষে বাদ আসর আজিমপুর গোরস্থানে শ্বশুর খান সাহেব বদরুদ্দীন আহমেদের কবরে কাইয়ুম চৌধুরীকে দাফন করা হবে হবে বলে বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন তার ভাগ্নে (শ্যালিকার ছেলে) বজলুল করিম জোবায়ের।

এর আগে, দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অফুরান ভালোবাসা ও ফুলেল শ্রদ্ধায় বরেণ্য চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীকে শেষ বিদায় জানান সর্বস্তরের জনতা।

তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অস্থায়ী মঞ্চে রাখা হলে ঢল নামে ফুলেল শ্রদ্ধা জানাতে আসা বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের। শিল্পীকে শেষবারের মতো দেখে তার মরদেহে বিনম্র শ্রদ্ধা জানান শোকাহত অশ্রুসিক্ত জনতা।

বরেণ্য এ শিল্পীর মরদেহে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষেও শ্রদ্ধা জানানো হয়। রাষ্ট্রপতির পক্ষে শ্রদ্ধা জানান তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল আবুল হোসেন, আর প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা জানান তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল জয়নাল আবেদীন।

এছাড়া, তার মরদেহে একে একে শ্রদ্ধা জানান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, তথ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একান্ত সচিব শহীদ উল্লাহ ভূঁইয়া, গণবিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মেসবাহ উদ্দিন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ফরিদুর রেজা সাগর, উদীচীর সভাপতি ও সাংবাদিক কামাল লোহানী, কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক, মুক্তিযোদ্ধা জাদুঘরের ট্রাস্টি গোলাম সারওয়ার, আওয়ামী লীগের পক্ষে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, বিএনপির পক্ষে যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির পক্ষ থেকে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, নাট্য ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম, রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশের অধ্যাপক সুলতানা কামাল, গীতিকার শহীদুল্লাহ ফরায়েজী, নাট্য ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, মহিলা পরিষদের আয়েশা খানম, মানবাধিকার নেত্রী মালেকা বেগম,  ছড়াকার আখতার হুসেন, বিটিভির মহাপরিচালক আবদুল মান্নান, শিল্পী কালিদাস কর্মদাস প্রমুখ।

শ্রদ্ধা জানায় আবৃত্তি সংগঠন কণ্ঠশীলন (এ সংগঠনের সভাপতি ছিলেন কাইয়ুম চৌধুরী), স্বাধীনতা শিক্ষক পরিবার, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্র, ধরিত্রী বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক লীগ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশের পুস্তক প্রকাশক সমিতি, নাট্যদল আরণ্যক, আবৃত্তি পরিষদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ প্রভৃতি সংগঠনও।

বরেণ্য শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর মরদেহে সর্বস্তরের শ্রদ্ধা নিবেদনের এ আয়োজন করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।

এখানে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর দুপুর সোয়া একটার দিকে তার মরদেহ ঢাবির কেন্দ্রীয় মসজিদে নিয়ে যাওয়া হয়।

সকালে কাইয়ুম চৌধুরীর মরদেহ তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হলে একে একে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান চারুকলার বর্তমান ডিন নেসার হোসেন, কালি ও কলমের সম্পাদক আবুল হাসনাত, শিল্পী রফিকুন নবী (র’নবী), নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, অধ্যাপক সমরজিৎ রায়, অধ্যাপক ইউনুস, চারুকলার সাবেক ডিন শিল্পী আবুল বারাক আলভী, নাট্যব্যক্তিত্ব তৌকির আহমেদ, বিপাশা হায়াত প্রমুখ।

এছাড়া, চারুকলার বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরাও প্রিয় শিক্ষক ও শিল্পীর মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা জানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগও।

রোববার (৩০ নভেম্বর) রাতের উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উৎসবে বিশেষ অতিথি ছিলেন কাইয়ুম চৌধুরী। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বক্তৃতা করে তিনি মঞ্চ থেকে নেমে আসেন। পরে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বক্তৃতা দিতে মঞ্চে দাঁড়ালে তিনি ফিরে এসে বলেন, ‘আমার একটি কথা বলার রয়েছে।’ এ কথা বলতেই তিনি মঞ্চে লুটিয়ে পড়েন।

রাত ৯টায় কাইয়ুম চৌধুরীকে হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। রাত পৌনে ১০টার দিকে এ শিল্পীর মরদেহ সিএমএইচ থেকে পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালের হিমঘরে নেওয়া হয়।

এরপর বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের ওই উৎসবের মঞ্চ থেকে কাইয়ুম চৌধুরীর মৃত্যুর কথা জানানো হয় এবং অনুষ্ঠানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

বরেণ্য এ শিল্পীর মৃত্যুর খবরে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমে আসে শোকের ছায়া। অনেকেই গভীর রাতে ছুটে আসেন স্কয়ার হাসপাতালে।

একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত কাইয়ুম চৌধুরীর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তার মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গভীর শোক জানিয়েছেন।

কিংবদন্তি চিত্রকরের চিরবিদায়ের খবর পেয়ে তার ভক্ত, অনুরাগী, সুহৃদ, স্বজনেরা স্কয়ার হাসপাতালে ছুটে যান। হাসপাতালে কান্নায় ভেঙে পড়েন শিল্পীর স্ত্রী তাহেরা বেগম। শিল্পীর একমাত্র ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মাইনুল ইসলাম জাবের মাকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় সেখানকার পরিবেশ শোকে ভারী হয়ে ওঠে।

ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী, মালেকা বেগম, হাসান আরিফ, আবুল মোমেন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের পরিচালক আবুল খায়ের লিটুসহ আরও অনেকেই হাসপাতালে যান। তারা শিল্পীর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

১৯৩২ সালের ৯ মার্চ ফেনীতে জন্ম গ্রহণ করেন কাইয়ুম চৌধুরী। ১৯৫৪ সালে ঢাকা আর্ট কলেজ থেকে ফাইন আর্টসে ডিগ্রি নেন। এরপর নিজের কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন বইয়ের প্রচ্ছদ আঁকায় মনোযোগী হয়েছিলেন তিনি।

বইয়ের প্রচ্ছদ ও অঙ্গসজ্জার পাশাপাশি তেল ও জল রঙে আবহমান বাংলা ও বাংলার লোকজ উপাদানগুলোকে চিত্রে আধুনিক ফর্মে ফুটিয়ে তোলার জন্য কাইয়ুম চৌধুরীর কৃতিত্বকে স্মরণ করেন তার অনুজরা।

জহির রায়হানের ‘শেষ বিকেলের মেয়ে’ গ্রন্থের প্রচ্ছদ আঁকার মধ্য দিয়ে এই শিল্পে তার পদচারণা শুরু। বিশ্লেষকরা বলেন, বইয়ের প্রচ্ছদের শিল্পমানকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন কাইয়ুম চৌধুরী।

কবি শামসুর রাহমানের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘প্রথম গান, দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে’র প্রচ্ছদশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীই। সৈয়দ শামসুল হকের প্রথম দিককার গ্রন্থগুলোর প্রচ্ছদও তার তুলিতেই আঁকা হয়।

১৯৫৭ সালে আর্ট কলেজে শিক্ষকতায় যোগ দেন কাইয়ুম চৌধুরী। আর্ট কলেজে নিজের দুই বছরের কনিষ্ঠ তাহেরা খানমকে ১৯৬০ সালে বিয়ে করেন তিনি।

ওই বছরই কাইয়ুম চৌধুরী আর্ট কলেজ ছেড়ে যোগ দেন কামরুল হাসানের নেতৃত্বে নবগঠিত ডিজাইন সেন্টারে। ১৯৬১ সালে ডিজাইন সেন্টার ছেড়ে অবজাভার হাউজে চিফ আর্টিস্ট হিসেবে যোগ দেন তিনি।

পরে ১৯৬৫ সালে আবার আর্ট কলেজে ফিরে যান কাইয়ুম চৌধুরী, সবশেষে চারুকলা ইনস্টিটিউট হওয়ার পর এর অধ্যাপক হিসেবে ১৯৯৪ সালে অবসর নেন তিনি।

শিল্পকর্মের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৬ সালে একুশে পদক লাভের পর ২০১৪ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার পান কাইয়ুম চৌধুরী। এছাড়াও কাজের স্বীকৃতি হিসেবে শেলটেক  পুরস্কার, সুলতান পুরস্কারসহ বহু দেশি-বিদেশি সম্মাননা পান তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নোট ডিজাইন এবং ম্যুরাল কমিটির সদস্য ছিলেন কাইয়ুম চৌধুরী।

শিক্ষকতা, পত্রিকার গ্রাফিক্স-অলঙ্করণ, সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ ইত্যাদির পরও চিত্রকর্মই ছিল কাইয়ুম চৌধুরীর প্রধান আরাধ্য। পল্টনের গাজী ভবনের বিশাল স্টুডিওতে ধ্যানমগ্ন কাইয়ুম চৌধুরী দিনের পর দিন এঁকে গিয়েছেন তেলচিত্র, রেখাচিত্র, জলরঙ, ছাপচিত্রসহ শিল্পের যথাসম্ভব সব মাধ্যমে।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, বাংলার চিরকালের কৃষক, কৃষাণি, প্রান্তিক নারী, ষড়ঋতু, পাখি, ফুল- এই সবই ছিল চিত্রকর কাইয়ুম চৌধুরীর প্রিয় বিষয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৪

** ছাপড়া মসজিদে কাইয়ুম চৌধুরীর মরদেহ, বাদ আসর দাফন
** শ্বশুরের কবরে সমাহিত হবেন কাইয়ুম চৌধুরী
** ‘কর্মেই বেঁচে থাকবেন কাইয়ুম চৌধুরী’
** ভালোবাসা-শ্রদ্ধায় কাইয়ুম চৌধুরীকে বিদায়
** ‘প্রথম সার্থক প্রচ্ছদশিল্পী ছিলেন কাইয়ুম চৌধুরী’
** শহীদ মিনারে কাইয়ুম চৌধুরীর মরদেহ
** চারুকলায় কাইয়ুম চৌধুরীর মরদেহে শ্রদ্ধা
** চারুকলায় কাইয়ুম চৌধুরীর মরদেহ
** শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর মৃত্যুতে গবিসাসের শোক
** কী কথা ছিল বরেণ্য চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর!
** চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী আর নেই
** সোমবার আজিমপুর কবরস্থানে দাফন


সম্পাদক : লুৎফর রহমান হিমেল

ফোন: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮১, +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮২ আই.পি. ফোন: +৮৮০ ৯৬১ ২১২ ৩১৩১ নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৬, +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৯ ফ্যাক্স: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২৩৪৬
ইমেইল: [email protected] সম্পাদক ইমেইল: [email protected]
Marketing Department: +880 961 212 3131 Extension: 3039 E-mail: [email protected]

কপিরাইট © 2006-2025 banglanews24.com | একটি ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের (ইডব্লিউএমজিএল) প্রতিষ্ঠান