কালের সাক্ষী তেওতা জমিদার বাড়ি

সোহেল আহমেদ, ফরিদপুর থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম | আপডেট: ২০৫২ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৫

বিশাল জায়গা জুড়ে তেওতা জমিদার বাড়ি অরক্ষিত-অবহেলিত হয়ে পড়ে রয়েছে। দেখে মনে হয়, মা-বাবা ছাড়া এতিম সন্তানের মতো।

দেশে যে যখন ক্ষমতায় আসে, মুখেই শুধু বলে আমরা পর্যটনের উন্নয়ন করছি, আমরা পর্যটনবান্ধব কিন্তু বাস্তবে বিপরীত। শুধু কী তাই, যে এলাকায় পুরাকীর্তি রয়েছে, সে এলাকার মন্ত্রী বা এমপিরা একটু সদয় হলে সেটি শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের দরবারেও তুলে ধরা যায়।

সারা বিশ্বের পর্যটকরা এসব পুরাকীর্তি দেখতেই ছুটে যায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। আমাদের ক্ষমতাধর মহোদয়েরা চান, পুরাকীর্তি ধ্বংস হয়ে একসময় সরকারি সম্পত্তিতে হলে লিজ নিয়ে নিজের সম্পদে পরিণত করতে।

এক সহকর্মীর মুখে প্রথম শুনেছিলাম, আরিচায় একটি জমিদার বাড়ি রয়েছে। তখনই ভেবেছিলাম একবার যাব।

গত সোমবার (২৭ জুলাই) দুপুরের খাবার শেষ করে যখন ঠাকুরকান্দী থেকে রওনা হই তখন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। ছাতা নিয়ে আমরা চারজন বানিয়াজুরি বাজারে এসে আরিচার গাড়ি খুঁজতেই দেড়শো টাকায় সিএনজি চালিত অটোরিকশা পেয়ে গেলাম। বানিয়াজুরি থেকে আরিচা মহাসড়কের উভয় দিকটা সবুজ ফসলের ক্ষেত। দু’ধারে জলাশয়, বাড়ি-ঘর তেমন একটা নেই তবে কিছু ইট ভাটা রয়েছে।

সবুজের মধ্যে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি মাথায় নিয়ে অটোরিকশা চলছে। এ দৃশ্য ভোলার নয়। দেখতে দেখতে চলে এলাম আরিচা ঘাট। নামতেই পাড়ের ছোট ছোট হোটেল থেকে চা-নাশতা খাওয়ার জন্য ডাকাডাকি। আমরা একটু হেঁটে ঘাটের প্লাটুনে উঠে বিশাল পদ্মাকে মনভরে দেখতে লাগলাম। আমাদের মতো আরও অনেকে এসেছেন প্রমত্তা পদ্মা দেখতে।

এখান থেকে ১০ টাকা ভাড়ায় ইজি বাইকে চেপে যাওয়া যায় তেওতা জমিদার বাড়ি। চেপে বসলাম ইজি বাইকে। পদ্মার পাড় ঘেঁষে ইজি বাইক চলছে। একদিকে অপুর্ব সুন্দর, অন্যদিকে ইজি বাইকসহ পদ্মায় পড়ে যাওয়ার ভয়। পরে আমাদের এক্সপার্ট চালক ধরলো গ্রামের ভেতরের পথ।

বাংলাদেশের গ্রামগুলো এমনিতেই সুন্দর কারণ, ছয় ঋতুতে গ্রামগুলো ছয়রকম সাজে। আরিচার গ্রাম দেখতে দেখতে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে আমরা এসে পড়ি তেওতা জমিদার বাড়ি।

আমাদের দেশের জমিদার বা রাজবাড়িগুলো বেশিরভাগই নদীর পাড়ে গড়ে উঠেছে। তেওতা জমিদারবাড়িও এর ব্যতিক্রম নয়। এখান থেকে একসময় পদ্মা-যমুনা দেখা যেত।

বাড়ি ছাড়াও রয়েছে বিশাল একটি পুকুর ও মন্দির। তবে অনেকেই এসে আমাদের মতো ধাক্কা খাচ্ছেন ধ্বংসস্তূপ দেখে। জমিদাররা রেখে গেছেন তাই সরকারি হাত ঘুরে এখন জনগণের সম্পত্তি। একটু সংস্কার করে প্রচার করলে দেশি পর্যটকের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদেরও আকর্ষণ করবে। টিকিটের ব্যবস্থা করলে বাড়বে সরকারের রাজস্ব। কিন্তু এসব কে কাকে বোঝাবে!

যাই হোক, জমিদার বাড়ির পাশেই একটি বাজার রয়েছে। তারপর যমুনা নদী। দূরে দেখা যায় যমুনার চর। মন চাইলে ট্রলারে চেপে ঘুরে আসা যাবে। প্রমত্তা পদ্মা আর জমিদার বাড়ির সঙ্গে ফ্রি যমুনা নদী!

বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৫
এসএস


সম্পাদক : জুয়েল মাজহার

ফোন: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮১, +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২১৮২ আই.পি. ফোন: +৮৮০ ৯৬১ ২১২ ৩১৩১ নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৬, +৮৮০ ১৭২ ৯০৭ ৬৯৯৯ ফ্যাক্স: +৮৮০ ২ ৮৪৩ ২৩৪৬
ইমেইল: [email protected] সম্পাদক ইমেইল: [email protected]
Marketing Department: +880 961 212 3131 Extension: 3039 E-mail: [email protected]

কপিরাইট © 2006-2024 banglanews24.com | একটি ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের (ইডব্লিউএমজিএল) প্রতিষ্ঠান