ঢাকা, বুধবার, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ০৩ জুলাই ২০২৪, ২৫ জিলহজ ১৪৪৫

শেয়ারবাজার

৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত লভ্যাংশ করমুক্ত চায় ডিএসই

সাঈদ শিপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৫
৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত লভ্যাংশ করমুক্ত চায় ডিএসই

ঢাকা: শেয়ারবাজারের গতিশীলতা ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে আগামী অর্থবছরের(২০১৫-১৬) বাজেটে বিনিয়োগকারীদের করমুক্ত লভ্যাংশ আয়ের সীমা ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করবে ঢাকা স্টাক এক্সচেঞ্জ(ডিএসই)। বর্তমানে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত লভ্যাংশ আয় করমুক্ত সুবিধা পাচ্ছেন।



এ দাবির পক্ষে ডিএসই’র যুক্তি শেয়ারবাজারের অস্থিরতার কারণে বিনিয়োগকারীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এখন লভ্যাংশ আয়ের ৫০ হাজার টাকা করমুক্ত সুবিধা দিলে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতি কিছুটা কমিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাবেন। এতে বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন। যা বাজারের গতিশীলতা ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে ভূমিকা রাখবে।

বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ আয় ৫০ হাজার টাকা করমুক্ত রাখার পাশাপাশি শেয়ারবাজারের গতি বাড়াতে ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে আগামী অর্থবছরের বাজেটকে সামনে রেখে একগুচ্ছ প্রস্তাব দিবে ডিএসই।
এরমধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হার কমানো, ৫বছরের জন্য স্টক এক্সচেঞ্জের আয়কর অব্যাহতি, শেয়ার লেনদেনে ব্রোকারেজ হাউজের কর হার কমানো উল্লেখযোগ্য।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের(এনবিআর) সঙ্গে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রাক বাজেট আলোচনায় এসব প্রস্তাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএসই’র পরিচালনা পর্ষদ।
এরইমধ্যে প্রস্তাবগুলো অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে ডিএসই সূত্রে জানা গেছে।
 
তালিকাভূক্ত কোম্পানির করপোরেট কর কমানোর বিষয়ে ডিএসই বলছে, বর্তমানে তালিকাভূক্ত কোম্পানি সাড়ে ২৭ শতাংশ হারে করপোরেট কর দিচ্ছে। এই কর হার আড়াই শতাংশ কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা উচিত। এতে ভালো কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত হতে উৎসাহিত হবে। যা বাজারের গভীরতা বাড়াবে।
 
বর্তমানে অতালিকাভূক্ত কোম্পানি ৩৫ শতাংশ হারে করপোরেট কর দিচ্ছে। যা আগের অর্থবছরে ছিলো সাড়ে ৩৭ শতাংশ। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরে অতালিকাভূক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হার আড়াই শতাংশ কমায় সরকার। সে সময়ও তালিকাভূক্ত কোম্পানির কর হার কমানোর দাবি জানায় ডিএসই। তবে ডিএসই’র সে দাবি আমলে নেয়নি সরকার।
 
আগামী ৫ বছর স্টক এক্সচেঞ্জের আয় করমুক্ত রাখার বিষয়ে ডিএসই বলছে, ডিএসই একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ছিলো। কিন্তু প্রশাসন থেকে মালিকানা পৃথকীকরণের (ডিমিউচ্যুয়ালাইজড) পর ডিএসই লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রুপান্তর হয়েছে। এখন প্রতিষ্ঠানের সম্প্রসারণ এবং পরিচালনার জন্য আগামী ৫ বছর শতভাগ কর অব্যহতি সুবিধা প্রয়োজন। এই সুবিধা দিলে সরকারের রাজস্ব আয়ে কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছে ডিএসই।

অবশ্য সরকারের দেওয়া সুবিধা অনুযায়ী চলমান অর্থবছরে স্টক এক্সচেঞ্জ শতভাগ কর অব্যহতি সুবিধা পাচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের(এনবিআর) নির্দেশনা অনুযায়ী, আগামী অর্থবছর থেকে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে কিছু আয়কর দিতে হবে। তবে সে করের পরিমাণও খুব একটা বেশি না।
 
এনবিআর’র কার্যকর থাকা নির্দেশনা অনুযায়ী, আগামী অর্থবছরে স্টক এক্সচেঞ্জ আয়ের ৮০ শতাংশ কর অব্যহতি সুবিধা পাবে। যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আয়ের ৬০ শতাংশ, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪০ শতাংশ এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২০ শতাংশ দিয়েছে সরকার।
 
ব্রোকারেজ হাউজের কর কমানোর দাবির বিষয়ে ডিএসই বলছে, বর্তমানে শেয়ার, ডিবেঞ্চার, মিউচুয়াল ফান্ড, বন্ড বা সিকিউরিটিজ লেনদেন মূল্যের উপর ব্রোকারেজ হাউসের কাছ থেকে শূন্য দশমিক ০৫ শতাংশ হারে কর কর্তন করা হয়। বর্তমান বাজারের অবস্থা বিবেচনা করে এটি শূন্য দশমিক ০১৫ শতাংশ করা প্রয়োজন। এতে শেয়ারবাজারে লেনদেনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
 
চলমান অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবেও এ দাবি জানিয়েছিলো ডিএসই। তবে সে সময় সরকার ডিএসইর ওই প্রস্তাব আমলে নেয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪২ ঘণ্ট‍া, এপ্রিল ১৫, ২০১৫
এএসএস/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।