ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খেলা

ঊষা চ্যাম্পিয়নশিপের জন্যই খেলে : মাহবুব

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৪
ঊষা চ্যাম্পিয়নশিপের জন্যই খেলে : মাহবুব

বাংলাদেশের হকিতে ঊষা ক্রীড়া চক্র এক বিরাট নাম; হকির ব্র্যান্ড। পূর্বে অনেক তরুণ এই ক্লাবে খেলে তারকাখ্যাতি পেয়েছেন।

অনেকে ঊষার জার্সিতে প্রিমিয়ার ডিভিশন হকিতে খেলতে পারাকে নিজের ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ সাফল্যও মানেন। তাদেরই একজন জাতীয় দল এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পরিচিত মুখ, পরীক্ষিত ফরোয়ার্ড মাহবুব হোসেন। চলতি মৌসুমে ঊষা ক্রীড়া চক্রে নাম লিখিয়েছেন মানিকগঞ্জের এ খেলোয়াড়।

ক্লাবটিতে এবারই প্রথম খেলতে যাচ্ছেন এমন নয়। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে একবার ঊষার জার্সিতে খেলার সুযোগ হয়েছিল মাহবুবের। সেটি ২০১৬ সালে। সেবার রানার্স আপ হয়েছিল মাহবুবের প্রিয় ক্লাবটি। এরপর ২০১৮ সালে মেরিনার ইয়াং ক্লাব, ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত সবশেষ প্রিমিয়ার লিগে আবাহনী লিমিটেডের জার্সিতে খেলেছেন। তবে মর্যাদার প্রিমিয়ার লিগে আজাদ স্পোর্টিং ক্লাব দিয়ে হকি লিগে যাত্রা শুরু তার। তবে পেশাদার হকিতে শুরুটা প্রথম বিভাগে শিশু কিশোর সংঘে খেলার মধ্য দিয়ে। সেটি ২০১৩ সালে।

পুরনো ক্লাবে ফিরতে পেরে দারুণ খুশি মাহবুব। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি ক্লাব কাপ হকি টুর্নামেন্ট দিয়ে পর্দা উঠবে নতুন মৌসুমের। মাহবুবের দল ঊষা মাঠে নামবে ২৪ ফেব্রুয়ারি। আসন্ন মৌসুমে নিজের দলের লক্ষ্য সম্পর্কে মাহবুব বলেন, ‘ঊষা সব সময়ই চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য মাঠে নামে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে দল গড়ে। এবারো তার ব্যতিক্রম হয়নি। অসীম গোপ দাদা, হাসান জুবায়ের নিলয় ভাই, আরশাদ হোসেন, সোহাগ ভাই, রাসেল ভাই, তপুদের মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের পাশাপাশি তাসিন, তৈয়ব, প্রীতমদের মতো তরুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের নিয়ে এবার দল গড়েছে ঊষা। এর বাইরে ভালোমানের বিদেশিযুক্ত হলেই ষোলোকলাপূর্ণ। আশাকরি পূর্বে যেমন ক্লাবটি অনেক সাফল্য বয়ে এনেছে, এবারও তাই হবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আশিক স্যারের নেতৃত্বে আমরা অনুশীলন করছি। রফিকুল ইসলাম কামাল ভাই সার্বক্ষণিক আমাদের টেককেয়ার করছেন। সব মিলে ঊষাতে আমরা ভালো আছি। এখন মাঠে নামার অপেক্ষায়। ’

২০১৬ সালে সবশেষ প্রিমিয়ার লিগ খেলেছে ঊষা ক্রীড়া চক্র। এরপর দলবদলে অংশ নেয়নি; খেলেনি প্রিমিয়ার লিগ। গত বছর প্রথম বিভাগ হকি লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মধ্য দিয়ে ফিরে এসেছে পুরনো লড়াইয়ে। ঊষা ফেরাতে লিগটা বাড়তি আকর্ষণ ফিরে পেল কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুব বলেন, ‘ঊষা ফেরাতে আমাদের হকি লাভবান হয়েছে। আমরা খেলোয়াড়রা লাভবান হয়েছি। এমন একটা ক্লাব লিগে থাকা মানে প্রতিযোগিতার মাত্রা দ্বিগুণ বেড়ে যাওয়া। হকির সৌন্দর্য এবং আকর্ষণ বাড়াতে ঊষার প্রিমিয়ার লিগে থাকার কোনো বিকল্প নেই। ঊষাকে ছাড়া লিগ কল্পনা করা যায় না। আমাদের মতো তরুণরা কল্পনা করতে পারে না। তাহলে যারা দীর্ঘ বছর-কাল ধরে ক্লাবটিকে দেখে আসছেন; তাদের মনের অবস্থা একবার ভাবুন। এই ক্লাব শুধু চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য নয়; ইতিহাস-ঐতিহ্যের জন্যও সকলের নিকট পরিচিত, সমাদৃত। ’   

মাহবুব হোসেন হকির একজন পরিচিত মুখ, পরীক্ষিত খেলোয়াড়। জুনিয়র দলের পাশাপাশি সিনিয়র দলে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। দেশের অন্যতম সেরা কোচ জাহিদ হোসেন রাজুর হাত ধরে হকিতে আসা মাহবুবের। ২০১১ সালে বিকেএসপিতে ভর্তি হন। কোচ রাজুই মাহবুবকে হকিতে ভর্তি করান। এর আগের বছরও বিকেএসপি ট্রায়াল দেন। তবে হকিতে নয়; ক্রিকেটে। ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বিকেএসপিতে পা রাখা মাহবুবের। প্রথম বছর ট্রায়ালে টিকতে না পেরে নিজের স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিয়ে পরের বছর (২০১১ সাল) হকিতে ট্রায়াল দেন। ট্রায়ালে জাহিদ হোসেন রাজুর নজরে পড়েন। সেই থেকে হকিতেই আছেন। তবে হকি খেলোয়াড় হতে পরিবারের ভূমিকার কথাও অকপটে বলে যান। বিশেষ করে ছোট বোন (মাহবুবের দুই বোন; দুজনই তার চেয়ে বয়সে বড়) মাকসুদা আক্তার শিলার জন্যই হকিতে নাকি আসতে পেরেছেন। বোন শিলার হাত ধরেই বিকেএসপিতে আসেন; পরে ভর্তি হন।

বাবা, মা আর দুই বোনের আদরের ছোট ভাই মাহবুব। বাবা তার পুলিশে কর্মরত। এক সময় কাবাডি খেলতেন মাহবুবের বাবা। খেলাধুলা প্রিয় একজন মানুষ তিনি। বাবাকে দেখেই মূলত খেলায় আগ্রহ জন্মে তার। তাছাড়া যে কোনো খেলাতে ছোট বেলা থেকেই দারুণ পারদর্শী ছিলেন। একবার দেখলেই শিখে নিতেন। বিকেএসপিতে প্রথমবার হকির সঙ্গে পরিচয় মাহবুবের। হকি স্ট্রিকও সেখানেই হাতে নেয়া। হকিতে আমৃত্যু থাকতে চান এই ফরোয়ার্ড। স্বপ্ন দেখেন বাংলাদেশ একদিন বিশ্বকাপে খেলবে। হোক সেটা বয়সভিত্তিক দলের হাত ধরে কিংবা জাতীয় দলে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৪
এআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।