ঢাকা: লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা ২২ বছরের শিরোপা খরা কাটাবার লক্ষ্য নিয়ে কোপা আমেরিকার ৪৪তম আসরের ফাইনালে মাঠে নামবে। আর্জেন্টাইনদের প্রতিপক্ষ ৯৯ বছর শিরোপা থেকে নিষ্ফলা থাকার যন্ত্রণায় কাতর স্বাগতিক চিলি।
বলা চলে দুই ফেভারিটের একটি হাইভোল্টেজ ম্যাচ দেখতে চলেছে বিশ্বফুটবল। শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত দুইটায় শুরু হতে যাওয়া এই ম্যাচটি দু’দলের জন্যই শিরোপা খরা ঘুচানোর লড়াই।
চিলির প্রথম নাকি আর্জেন্টিনার পঞ্চদশ শিরোপা? এ প্রশ্নের উত্তর মিলবে আজ রাতে। ৪৪তম কোপা ফাইনালের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে। বিশ্বের সঙ্গে তাল রেখে জমজমাট এক ফাইনালই আশা করছে বাংলাদেশের ফুটবল প্রেমীরাও।
২২ বছর ধরে আর্জেন্টিনায় যায়নি বড় কোনো শিরোপা। ১৯৯৩ সালে গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতা, দিয়েগো ম্যারাডোনা আর দিয়েগো সিমিওনেরা আর্জেন্টিনাকে কোপার শিরোপা পাইয়ে দিয়েছিলেন। সেটিই শেষ মেগা কোনো ইভেন্টের শিরোপা জয়ের স্বাদ।
শিরোপা খরা কাটাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ বিশ্বসেরা স্ট্রাইকারদের নিয়ে গড়া আক্রমণভাগের আর্জেন্টিনা। জেরার্ড মার্টিনোর দলটিতে রয়েছেন মেসি, সার্জিও আগুয়েরো, কার্লোস তেভেজ, ডি মারিয়া, হিগুয়েনদের মতো তারকা। তবে, নিজেদের মাঠে অ্যালেক্সিজ সানচেজ, ক্লদিয়ো ব্রাভো, ভারগাস, মেদেল, ভিদালরা কোপা আমেরিকার টুর্নামেন্টে আর্জেন্টাইনদের প্রথমবারের মতো হারাতে প্রস্তুত। জর্জ সাম্পাওলির শিষ্যরা ফাইনালের মঞ্চেই জিততে আত্মবিশ্বাসী।
দু’বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা এ শিরোপা জিততে পারলে কোপা টুর্নামেন্টে উরুগুয়ের সর্বোচ্চ ১৫বার শিরোপা জয়ের পাশে নাম লেখাবে আর্জেন্টিনা। দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে এর আগে ১৪ বার শিরোপা জিতেছে ম্যারাডোনার দেশটি। অন্যদিকে চিলি কখনোই বিশ্বকাপ শিরোপার স্বাদ পায়নি। তবে, চলতি আসরে নিজেদের সেরাটা দিয়ে বিশ্বফুটবলকে চমকে দিয়েছে তারা। চিলির নতুন প্রজন্ম সানচেজ-ব্রাভো-ভারগাস-ভিদালরা চাপ সামলে মেসির আর্জেন্টিনাকে রুখে দিতে চায়।
শুধু কোপা আমেরিকার শিরোপাই নয়, বড় কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে কখনও শিরোপার স্বাদ পায়নি চিলি। প্রথমবারের মতো মেগা কোনো ইভেন্টের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার হাতছানি চিলির সামনে। সেটিও আবার ঘরের মাঠে, নিজেদের সমর্থকদের সামনে। নিরানব্বই বছর ধরে লাতিন আমেরিকার এই প্রতিযোগিতায় নিষ্ফলা থাকার যন্ত্রণাও মুছে দিতে চায় চিলির সোনালী প্রজন্ম। নিরানব্বই বছর ধরে দেশটি কোপা আমেরিকার আসরে অংশ নিয়েও শিরোপা স্বাদ নিতে পারেনি।
এর আগে আর্জেন্টিনা-চিলি ৮০ বার মুখোমুখি হয়েছে। মুখোমুখি লড়াইয়ের পরিসংখ্যানে এগিয়ে আর্জেন্টাইনরা। ৫৩ ম্যাচে জয়ের পাশাপাশি ২১টি ম্যাচে ড্র করেছে তারা। গত বিশ্বকাপের রানার্সআপরা বাকী ৬টি ম্যাচে চিলির বিপক্ষে হেরেছে।
কোপা আমেরিকায় দু’দলের সাক্ষাৎ হওয়া ২৪ ম্যাচে আর্জেন্টিনার জয় ১৮টি। চিলি কোনো ম্যাচে জয় না পেলেও বাকী ৬টি ম্যাচ ড্র করেছে।
এর আগে আরও ছয়বার কোপা আমেরিকার আয়োজক হয়েছিল চিলি। আর্জেন্টিনা চিলি থেকে চারবারই শিরোপা নিজেদের ঘরে নিয়ে যায়।
তবে, যে দলই কোপার ফাইনালে জিতুক না কেনো, শেষ হাসিটা যে একজন আর্জেন্টাইনই হাসছেন সেটা নিশ্চিত। কারণ, আসন্ন ফাইনালের দুই দলের কোচই আর্জেন্টাইন।
বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, ০৪ জুলাই ২০১৫
এমআর