ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খেলা

মেসির শাপমোচনের ফাইনাল!

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০১৫
মেসির শাপমোচনের ফাইনাল! লিওনেল মেসি

ঢাকা: ২০০৪ সাল থেকে তিনি খেলছেন স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনার হয়ে। ‍আর পরের বছর থেকে খেলছেন আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে।

বার্সেলোনার হয়ে পরিসংখ্যান ঘাঁটলে যতোখানি উচ্ছ্বসিত হতে হয়, ঠিক ততোখানিই হতাশায় মুষড়ে পড়তে হয় আর্জেন্টিনার হয়ে হিসাবের খাতা খুললে।

এই এক দশকে বার্সেলোনার হয়ে দলের এবং নিজের ব্যক্তিগত শোকেসে পুরে নিয়েছেন অর্জনীয় সব মুকুট। আর আর্জেন্টিনার হয়ে? প্রায় শূন্য পড়ে রয়েছে ট্রফি-পদক রাখার ঘরটা! বার্সেলোনার প্রাণভোমরা আর্জেন্টিনার হয়ে খেললে কোন ‘অভিশাপে’ ‘হাসতে’ পারেন না? সে প্রশ্নের উত্তর অজানাই থেকে যাচ্ছে ফুটবলপ্রেমীদের কাছে।

তবে, এ প্রশ্নের উত্তরের অপেক্ষার অবসান ঘটানোর আরেকটি সুযোগ এসেছে ভক্তদের কাছে ‘ভিনগ্রহের ফুটবলার’ খ্যাত লিওনেল মেসির সামনে। সুযোগ এসেছে তার জাতীয় দলের ‘শাপমোচনের’। শনিবার (৪ জুলাই) বাংলাদেশ সময় রাত ২টায় সান্তিয়াগোর স্টাদিও ন্যাসিওনাল স্টেডিয়ামে কোপা আমেরিকার শিরোপা জেতার লড়াইয়ে স্বাগতিক চিলির বিপক্ষে নামবে মেসির আর্জেন্টিনা। এই লড়াইয়ে শেষ হাসিটা আর্জেন্টিনা হাসলেই মেসি ভক্তদের ‘অভিশাপ’মুক্ত হতে পারবেন বলে মনে করা হয়।

কিন্তু কী এ ‘অভিশাপ’, যা বার্সেলোনার দুরন্ত বালককে ঘুমন্ত রাখছে আর্জেন্টিনায়?

পরিসংখ্যান বলছে, বার্সেলোনার হয়ে ৪৮২ ম্যাচ খেলেছেন লিওনেল মেসি। গোল করেছেন ৪১২টি। দলকে জিতিয়েছেন ৭টি লা লিগা শিরোপা, ৩টি কোপা দেল রে, ৬টি স্প্যানিশ সুপার কাপ, ৪টি উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ২টি উয়েফা সুপার কাপ এবং ২টি ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ। আর ব্যক্তিগত শোকেসে পুরেছেন হ্যাটট্রিকসহ ৪টি ব্যালন ডি’র, ১টি ফিফা ওয়ার্ল্ড প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার, ৩টি ওয়ার্ল্ড সকার প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার, ৩টি ইউরোপিয়ান গোল্ডেন সু, একটি উয়েফা বেস্ট প্লেয়ার ইন ইউরোপ অ্যাওয়ার্ড, ৪টি উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টপ গোলস্কোরার, টানা ৫টি এলএফপি বেস্ট প্লেয়ার, হ্যাটট্রিক লা লিগা ফরেইন প্লেয়ার অব দ্য ইয়ারসহ ইউরোপিয়ান ও স্প্যানিশ ক্রীড়াজগতের অসংখ্য পদক-সম্মাননা।

বার্সেলোনার হয়ে মেসি দলীয় ও ব্যক্তিগতভাবে এমন ঔজ্জল্য ছড়ালেও সে তুলনায় বড়ই নিষ্প্রভ আর্জেন্টিনার হয়ে।

তার জাতীয় দলের পরিসংখ্যান বলছে, মেসি আর্জেন্টিনার হয়ে ম্যাচ খেলেছেন ১০২টি। আর গোল? ৪৬টি! ক্লাবে প্রায় প্রতি ম্যাচ হিসেবে তার গোল থাকলেও জাতীয় দলে দু’টি করে ম্যাচেও মেসির একটি গোল থাকছে না! এই বেমানান পারফরম্যান্সে ফুটবলের ‘ক্ষুদে জাদুকর’ আর্জেন্টিনা দলকে স্বভাবতই উল্লেখযোগ্য কোনো শিরোপা উপহার দিতে পারেননি। অথচ খেলে ফেলেছেন ২০০৬, ২০১০ ও ২০১৪ বিশ্বকাপ; ২০০৭ ও ২০০৯ কোপা আমেরিকা এবং ২০০৮ সামার অলিম্পিক। ভক্তদের কাছে সান্ত্বনা কেবল অলিম্পিকের শিরোপাটাই। দেশকে উল্লেখযোগ্য কোনো উপহার দিতে না পারায় মেসির ব্যক্তিগত শোকেসটাও তাই থেকে যাচ্ছে ফাঁকা। আর্জেন্টিনার হয়ে খেলার প্রাপ্তি তার অলিম্পিকের গোল্ড মেডেল আর গত বিশ্বকাপের গোল্ডেন বলটাই!

বার্সেলোনার প্রাপ্তি আর আর্জেন্টিনার অপ্রাপ্তি। গত এক দশকের বেশি সময় ধরে এ দু’টিকে যোগ-বিয়োগ করেই মেসির ওপর জাতীয় দলের অদৃশ্য ‘অভিশাপ’ রয়েছে বলে বারবার ফল‍াফল জানাচ্ছেন ফুটবলপ্রেমীরা। অভিশাপের এই রাহুগ্রাসে পড়ে গত ব্রাজিল বিশ্বকাপে অনেক কাছে গিয়েও শিরোপাটা অধরা থেকে যায় ‘সব জিতেও কিছুই জিততে না পারা’ মেসির কাছে। শনিবার রাতে কি কাটবে অভিশাপের এ রাহুগ্রাস? পারবেন কি ফুটবল বিস্ময় কাঙ্ক্ষিত শিরোপাটা ছুঁয়ে দিতে?

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৩ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০১৫
এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।