ঢাকা: ১৯৩০ সালের এই দিনে (১৩ জুলাই) ফিফা বিশ্বকাপ প্রথম অনুষ্ঠিত হয়। জুলাই ১৩ থেকে জুলাই ৩০ পর্যন্ত এটি উরুগুয়ের মোন্তেবিদেও শহরে অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৩০ বিশ্বকাপে মোট ১৩টি দল প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এর মধ্যে আমেরিকা অঞ্চলের ৯টি ও ইউরোপের ৪টি দল ছিল। 'এ' গ্রুপে ছিল চিলি, আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স ও মেক্সিকো। 'বি' গ্রুপে ছিল যুগোস্লাভিয়া, ব্রাজিল ও বলিভিয়া। 'সি' গ্রুপে ছিল উরুগুয়ে, রোমানিয়া ও পেরু। 'ডি' গ্রুপে ছিল যুক্তরাষ্ট্র, প্যারাগুয়ে ও বেলজিয়াম।
ভ্রমণের খরচ ও সময় বিবেচনা করে অনেক ইউরোপীয় দল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেনি। বিশ্বকাপের প্রথম দুটি ম্যাচে জয় পায় ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র। ফ্রান্স ও মেক্সিকোর মধ্যকার ম্যাচে ৪-১ গোলে ফ্রান্স জয়ী হয় এবং যুক্তরাষ্ট্র ও বেলজিয়ামের মধ্যকার ম্যাচে ৩-০ গোলে যুক্তরাষ্ট্র জয়ী হয়।
উল্লেখ্য, বিশ্বকাপের প্রথম গোল করেন ফ্রান্সের লুসিয়েন লরেন্ত।
প্রতিযোগিতার সবগুলো খেলা অনুষ্ঠিত হয় উরুগুয়ের মোন্তেবিদেও শহরে। এখানে তিনটি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় ম্যাচগুলো। এস্তাদিও সেন্তেনারিও, এস্তাদিও পোসিতস, এস্তাদিও পারেক সেন্ট্রাল। এরমধ্যে এস্তাদিও সেন্তেনারিও ৯০,০০০ দর্শক ধারণক্ষমতার স্টেডিয়াম। এটি উরুগুয়ের স্বাধীনতার শতবর্ষ উপলক্ষে নির্মাণ করা হয়। এটিই ছিল প্রতিযোগিতার প্রধান স্টেডিয়াম যাকে "ফুটবলের মন্দির" বলা হয়।
এই স্টেডিয়ামে ১৮টি খেলার মধ্যে সেমি-ফাইনাল ও ফাইনাল সহ মোট ১০টি খেলা অনুষ্ঠিত হয়। তবে নির্মাণ কাজ ঢিমেতালে চলার কারণে ও বর্ষা মৌসুমের কারণে প্রতিযোগিতার মাত্র ৫ দিন আগে স্টেডিয়ামটি ব্যবহার উপযোগী হয়েছিল। শুরুর দিকের খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হয় ছোট স্টেডিয়ামে যা সাধারণত মন্তেবিদেওর ক্লাবগুলো ব্যবহার করত। এর মধ্যে ২০,০০০ দর্শক ধারণ ক্ষমতার পারেক সেন্ট্রাল ও পোসিতস উল্লেখযোগ্য।
এ আসরের ফাইনালে মুখোমুখি হয় ফেবারিট উরুগুয়ে ও আর্জেন্টিনা। ৯৩,০০০ দর্শককে সাক্ষী রেখে উরুগুয়ে আর্জেন্টিনাকে ৪-২ গোলে পরাজিত করে প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপার স্বাদ গ্রহণ করে। ফিফার সাবেক সভাপতি জুলে রিমের স্মরণে এ ট্রফির নাম 'জুলে রিমে ট্রফি' ছিল। ১৯৭০ সালে ব্রাজিল তৃতীয় বারের মত বিশ্বকাপ জিতলে তাদেরকে স্থায়ীভাবে ট্রফিটি দেয়া হয়।
উরুগুয়েতে অনুষ্ঠিত ১৯৩০ বিশ্বকাপের সবচেয়ে মজার বিষয়টি ছিল বল নিয়ে। ফাইনাল ম্যাচের দুই অর্ধে ব্যবহার করা হয়েছিল দুটো আলাদা বল। কারণ ফাইনালে মুখোমুখি উরুগুয়ে ও আর্জেন্টিনা দুই দলই খেলতে চেয়েছিল নিজেদের বল দিয়ে। তাই প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনার ‘১২ প্যানেল মডেল’ বল দিয়ে খেলা হয়। ও দ্বিতীয়ার্ধে উরুগুয়ের ‘টি-মডেল বল’ দিয়ে খেলা হয়। আরো মজার বিষয় নিজেদের বল নিয়ে খেলার ফলে প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনা ২-১ গোলে এগিয়ে ছিল। কিন্তু শেষ নিজেদের বল দিয়ে খেলার ফলে উরুগুয়ে ৪-২ গোলে ম্যাচে জয় পায়। দুই বলেই ১২টি করে সেলাই ছিল।
পুরো বিশ্বকাপে মোট ৭০ টি গোল হয়েছিল। যা ম্যাচ প্রতি ৩.৮৯। সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন আর্জেন্টিনার গিয়ের্মো স্তাবিলে (৮ গোল)।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, ১৩ জুলাই ২০১৫
ইয়া/এমআর