ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খেলা

বাইলজ ও ডিসিপ্লিনারি কোড নিয়ে বিতর্ক, বিপাকে বাফুফে

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০১৫
বাইলজ ও ডিসিপ্লিনারি কোড নিয়ে বিতর্ক, বিপাকে বাফুফে

ঢাকা: ‘ডিসিপ্লিনারি কোড ও বাইলজ মধ্যে কিছু সাংঘর্ষিক বিষয় আছে। ফরাশগঞ্জের শাস্তি প্রদানের বিষয়ে ডিসিপ্লিনারি কমিটি শুধুমাত্র বাইলজের ভিত্তিতেই ক্লাবটির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি।

এক্ষেত্রে অনুসরণ করা হয়েছে ডিসিপ্লিনারি কোডও। মূলত বিশ্ব ফুটবলে যা হয়, এখানে ডিসিপ্লিনারি কমিটিও সেই ধারাই অনুসরণ করেছে। বাফুফে যদি মনে করে ফরাশগঞ্জের শাস্তি পর্যাপ্ত হয়নি, তখন ইচ্ছে করলে ডিসিপ্লিনারি কমিটির দেওয়া শাস্তির বাইরেও আরও বেশি শাস্তি দিতে পারে। বৃহস্পতিবার (০৬ আগস্ট) মতিঝিলস্থ বাফুফে ভবনে কথাগুলো বলেছিলেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ।

তার কথাতেই প্রতিয়মান শেখ রাসেল বনাম ফরাশগঞ্জের ম্যাচে গোলযোগের কারণে ফরাশগঞ্জকে যে শাস্তি দেওয়া হয় তার খানিকটা অংশ বাইলজ থেকে আর খানিকটা ডিসিপ্লিনারি কমিটির সাহায্যে নেওয়া হয়েছে। তাই স্বাভাবিক ভাবেই সমস্যার সৃষ্টি হয়। আর সে সাথে যথাযথ ভাবে মানা হয়নি বাইলজ। তার উপর ডিসিপ্লিনারি কমিটির সিদ্ধান্তের ফলে বিতর্কের শুরু এখানেই।

মান্যবর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে গত ৩ আগস্ট শেখ রাসেলের বিপক্ষে ম্যাচ অসমাপ্ত রেখে মাঠ থেকে উঠে যাওয়ার ফলে মৌসুমের বাকি তিন ম্যাচ এবং আগামী মৌসুমের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ থেকে নিষিদ্ধ করা হয় ফরাশগঞ্জ ক্লাবকে। সেই সাথে তাদের আর্থিক জরিমানাও করা হয় ৫ লাখ টাকা এবং বাফুফে থেকে লিগে অংশ গ্রহণ করার জন্য ২৫ লাখ টাকার মধ্যে থেকে নেওয়া ১৩ লাখ টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দেয় লিগের ডিসিপ্লিনারি কমিটি।

এছাড়াও ফরাশগঞ্জের দুই কর্মকর্তাকে শো-কজও করা হয়। এদিকে শেখ রাসেলকে ৩-০ গোলে বিজয়ীও ঘোষণা করা হয় ওই ম্যাচে।

কিন্তু লিগের বাইলজ এবং রুলস এ্যান্ড রেগুলেশনের ভিত্তিতেই বাফুফের ডিসিপ্লিনারি কমিটি শাস্তি দিয়েছে ফরাশগঞ্জকে। এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে যে বাইলজ মেনে সে বাইলজেরই উপধারাগুলো সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হয়নি। বরং বাইলজের চেয়ে ডিসিপ্লিনারি কোডকেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বাফুফের লিগের বাইলজের ২০ ধারার ৩.২ উপধারায় উল্লেখ আছে, ‘শাস্তিপ্রাপ্ত দলের সব ম্যাচের পয়েন্ট, স্বপক্ষ ও বিপক্ষ গোলগুলো সবকিছুই কাটা যাবে বা রেকর্ডবুক থেকে মুছে ফেলা হবে। ’ তবে ফরাশগঞ্জকে শাস্তি দিতে গিয়ে বাফুফের ডিসিপ্লিনারি কমিটি এই নিয়মটি অনুসরণ করেনি। তারা শুধু ফরাশগঞ্জের শেষ তিনটি ম্যাচের সব পরিসংখ্যান অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

এছাড়া ডিসিপ্লিনারি কমিটি রহস্যজনকভাবে বাইলজের ধারা বাদ দিয়ে চলে গেছে ডিসিপ্লিনারি কোডে। যদি বাফুফে ২০ ধারার ৩.২ উপধারাটি প্রয়োগ করতো, তাহলে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব লিমিটেড চলমান লিগে নিজেদের দুই ম্যাচ বাকী থাকতেই চ্যাম্পিয়ন হতে পারতো না। এটি প্রয়োগ হলে পয়েন্ট টেবিলের চেহারাই পাল্টে যেত।

গত ৩০ জুলাই মোহামেডানকে হারিয়ে জামাল দুই ম্যাচ আগেই চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিত করে ফেলায় ওই ম্যাচ শেষে তাদেরকে লিগ ট্রফি হস্তান্তর করা হয়। এখানেও শুরু হয় আরেক বিতর্ক।

গত মৌসুমেও এমনটি হয়েছিল। সেবার জামাল দুই ম্যাচ আগেই লিগ শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলায় লিগ শেষ হবার আগেই তাদেরকে ট্রফি দিয়েছিল বাফুফে। ফলে বাফুফের সমালোচকদের মতে, জামালের শিরোপা জয় যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, তাদের বাঁচাতেই ডিসিপ্লিনারি কমিটি ফরাশগঞ্জের সব পয়েন্ট না কেটে শুধু শেষের তিন ম্যাচের পয়েন্ট কেটে নিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সাধারণ সম্পাদক সোহাগ বলেন, ‘বাফুফে এ ব্যাপারে একমত নয়। তারপরও প্রশ্ন যখন উঠেছে, তখন এ বিষয়টি নিয়েও লিগ কমিটির পরের সভায় পর্যালোচনা করব। ’

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, ৬ আগস্ট ২০১৫
ইয়া/এমআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।