ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খেলা

আর্জেন্টিনার হয়ে মেসির ‘দশ’

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৫
আর্জেন্টিনার হয়ে মেসির ‘দশ’ লিওনেল মেসি

ঢাকা: ফুটবল ইতিহাসের সেরা ফরোয়ার্ড হিসেবে আপনাকে কয়েকজনের নাম নিতে বললে, সেখানে নিশ্চিতভাবেই ঠাঁই হবে আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসির। মাত্র ১৮ বছর বয়সে ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের জার্সি গায়ে তার অভিষেক ঘটে।

জাতীয় দলের হয়ে আর্জেন্টাইন ফুটবলের এ ক্ষুদে জাদুকরের দশ বছর পূর্ণ হয়েছে।

পুরো নাম: লিওনেল আন্দ্রেস মেসি
জন্ম: ২৪ জুন ১৯৮৭
জন্ম স্থান: রোজারিও, সান্তাফে, আর্জেন্টিনা
উচ্চতা: ১.৬৯ মিটার (৫’ ৭”)
মাঠে অবস্থান: ফরোয়ার্ড

বর্তমান বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ফুটবলার মেসি। ক্লাব পর্যায়ে মেসি ও বার্সেলোনা আজ মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। মাত্র ২১ বছর বয়সে মেসি প্রথম ব্যালন ডি’অর পুরস্কার পান। ইতোমধ্যে মেসি প্রথম ফুটবলার হিসেবে চারবার ব্যালন ডি’অর পুরস্কার লাভ করেছেন। বার্সার হয়ে তিনি সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে খেলেছেন ৫১৫টি ম্যাচ। যেখানে তার গোল সংখ্যা ৪২৫টি।

দেশের জার্সি গায়ে মেসি মাঠে নামেন ১০৩ ম্যাচে। আর্জেন্টিনার হয়ে তার গোলসংখ্যা ৪৬টি।

এমন কোনো রেকর্ড নেই যা মেসির ঝুলিতে জমা হয়নি। ফিফার সর্বোচ্চ ব্যালন ডি’অর জয়ী এ তারকা ২০১২ সালে সর্বোচ্চ ৯৬ গোল করে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লেখান। একই বছর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ২৫ গোল করে পর্তুগালের ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আর ইংল্যান্ডের ভিভিয়ান উডওয়ার্ডের সঙ্গে রেকর্ড বুকে নাম লেখান। ২০০৯ আর ২০১১ সালে ফিফা ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপের গোল্ডেন বল জেতেন মেসি। যা এখনও অন্য কোনো ফুটবলারের নামের পাশে যোগ হয়নি।

এখানেই মেসির বিশ্বসেরা হওয়ার কাহিনী থেমে থাকেনি। ইউরোপের ক্লাব পর্যায়ে এক মৌসুমে ৭৩ আর এক বছরে ৭৯ গোল করেছেন মেসি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে চারবার আর টুর্নামেন্টটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ পাঁচবার হ্যাটট্রিক করেন তিনি। ৭৭ গোল করে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতাও এ বার্সা তারকা।

দেশের জার্সি গায়ে এক বছরে সর্বোচ্চ ১২ গোল করে গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার সঙ্গে নাম লিখিয়েছেন মেসি। ২০০৬ বিশ্বকাপের আসরে আর্জেন্টিনার হয়ে ১৮ বছর ৩৫৭ দিন বয়সে সার্বিয়ার বিপক্ষে গোল করে সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে নিজেকে হাজির করেছিলেন। ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে সর্বোচ্চ দশটি গোল করেন মেসি।

বার্সার হয়ে সাতবার জিতেছেন লা লিগার শিরোপা। তিনবার কোপা দেল রে, ছয়বার সুপারকোপা ডি এসপানা, চারবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা, তিনবার উয়েফা সুপার কাপ আর দুইবার ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছেন আর্জেন্টাইন এ ক্ষুদে জাদুকর।

আর্জেন্টাইন-স্পেনীয় নাগরিক হিসেবে ২০০৪ সালে মেসিকে স্পেনের জাতীয় অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবল দলে খেলার জন্য আমন্ত্রন জানানো হয়। কিন্তু মেসি তা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি ২০০৪ সালের জুনে, আর্জেন্টিনার অনূর্ধ্ব ২০ দলের হয়ে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে প্রথম প্রীতিম্যাচে মাঠে নামেন। ২০০৫ সালে দক্ষিণ আমেরিকান যুব চ্যাম্পিয়নশিপে মেসির আর্জেন্টিনা তৃতীয় হয়। একই বছর ফিফা যুব চ্যাম্পিয়নশিপে আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হয় যেখানে মেসি ৬টি গোল করে প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় হিসেবে গোল্ডেন বল এবং গোল্ডেন বুটের পুরস্কার জেতেন।

২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট, ১৮ বছর বয়সে হাঙ্গেরির বিপক্ষে জাতীয় দলে মেসির অভিষেক ম্যাচে খেলার ৬৩তম মিনিটে বদলি হিসেবে খেলতে নেমে শুরুটা মেসির ভালো হয়নি। ৬৫তম মিনিটেই তাকে লাল কার্ড দেখে মাঠের বাহিরে চলে যেতে হয়। ম্যাচ-রেফারি মার্কাস মের্ক দাবী করেন, মেসি হাঙ্গেরির ডিফেন্ডার ভিলমস ভ্যানজাককে কনুই দিয়ে আঘাত করেছিলেন। তবে, ভিলমস মেসির শার্ট ধরে আগেই টান দেন বলে রেফারির সে সিদ্ধান্তটি ছিল বিতর্কিত।

২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর, আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে মেসি আবারও খেলতে নামেন। বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ঐ খেলায় প্যারাগুয়ের বিপক্ষে আর্জেন্টিনা ০–১ ব্যবধানে হেরে যায়। এরপর পেরুর বিপক্ষে খেলায় মেসি প্রথম দলের সদস্য হিসেবে মাঠে নামেন এবং খেলায় আর্জেন্টিনা জয় পায়।

২০০৬ সালের ১ মার্চ, আর্জেন্টিনার হয়ে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে একটি প্রীতিম্যাচে মেসি প্রথম গোল করেন। ২০১৪ বিশ্বকাপের আর্জেন্টিনা দলে মেসিকে রাখা হয় অধিনায়ক হিসেবে। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচেই সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন মেসি।

দেশের হয়ে প্রথম একাদশে সুযোগ পাওয়া সে ম্যাচের পর ফুটবলের কিংবদন্তি হোসে পেকারম্যান মেসিকে ‘রত্ন’ হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করেন। আজ বিশ্ব ফুটবলে সত্যি এক রত্নের নাম ‘মেসি’।

মেসির অভিষেক ম্যাচের ভিডিও:



বাংলাদেশ সময়: ১৮০৭ ঘণ্টা, ১৭ আগস্ট ২০১৫
এমআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।