ঢাকা: ঐতিহ্যের লড়াইয়ে ডার্বিম্যাচে মাঠে নেমেছিল স্প্যানিশ দুই জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ আর অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ। বিশ্ব ফুটবল মাদ্রিদের দুই নগর প্রতিদ্বন্দ্বীর ম্যাচ দেখার অপেক্ষায় ছিল।
অ্যাতলেতিকোর ঘরের মাঠ ভিসেন্তে দেল কালদেরনে আতিথ্য নেয় রিয়াল। রিয়ালের হয়ে লিড পাইয়ে দেন বেনজেমা। তবে, ভিয়েত্তোর গোলে সমতায় ফেরে অ্যাতলেতিকো।
রিয়াল কোচ রাফায়েল বেনিতেজ শুরুর একাদশে মাঠে পাঠান কেইলর নাভাস, কারভাজাল, রাফায়েল ভারানে, সার্জিও রামোস, মার্সেলো, ক্যাসিমিরো, টনি ক্রুস, লুকা মদ্রিচ, ইসকো, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আর করিম বেনজেমাকে। দিয়েগো সিমিওন অ্যাতলেতিকোর হয়ে মাঠে পাঠান ওব্লাক, হুয়ানফ্রান, জিমিনেজ, দিয়েগো গডিন, ফিলিপ, থিয়াগো, গ্যাবি, অলিভার, গ্রিজম্যান, ফার্নান্দো তোরেস এবং কোরেয়াকে।
ম্যাচের নবম মিনিটেই লিড নেয় অতিথিরা। রিয়ালকে এগিয়ে নিতে গোল করেন ফরাসি তারকা স্ট্রাইকার বেনজেমা। কারভাজালের বামপাশ থেকে তুলে মারা দারুণ এক ক্রসে হেড করে অ্যাতলেতিকোর জালে বল জড়ান রিয়ালের ‘স্পেশাল নাইন’ খ্যাত বেনজেমা। স্বাগতিক গোলরক্ষক ওব্লাক ঝাপিয়ে পড়লেও বল প্রতিহত করতে ব্যর্থ হন।
দুই মিনিট পরেই সমতায় ফেরার সুযোগ পায় স্বাগতিকরা। কোরেয়ার বাঁকানো শটটি গোলবারের ঠিকানা খুঁজে পায়নি। ২০ বছরের এ তরুণ তারকার শটটি গোলবারের বাইরে দিয়ে চলে যায়।
গোল হজমের পরপরই সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠে সিমিওন শিষ্যরা। একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে রিয়ালের ডিফেন্ডারদের বারবার পরীক্ষা নিতে থাকেন গ্রিজম্যান-তোরেসরা। মধ্যমাঠে বল দখলের লড়াইয়েও দেখা যায় অ্যাতলেতিকোর আধিপত্য। তবে, মার্সেলো-মদ্রিচের ডানপাশের জুটি থেকে বেশ কিছু বল তৈরি অবস্থায় পেয়ে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ খুঁজতে থাকে রিয়াল।
ম্যাচের ২১ মিনিটে পেনাল্টি লাভ করে অ্যাতলেতিকো। নিজেদের বক্সে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে রিয়ালের রামোস পা বাড়িয়ে দেন। আর তাতে বাধা পেয়ে পড়ে যান থিয়াগো। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজালে শট নিতে আসেন গ্রিজম্যান। ফরাসি তারকার বাম পায়ের জোরালো পেনাল্টি শটটি রুখে দেন রিয়ালের কোস্টারিকান গোলরক্ষক নাভাস।
ম্যাচের ৩৩ মিনিটের মাথায় গোল করার সুযোগ পেয়েছিলেন রোনালদো। তবে, পর্তুগিজ তারকার নেওয়া শটটি অ্যাতলেতিকোর গোলবারের অনেক উপর দিয়ে চলে যায়।
প্রথমার্ধে আর কোনো গোল না হলে ১-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় রিয়াল মাদ্রিদ।
বিরতির পর আক্রমণের ধার বাড়িয়ে দেয় অ্যাতলেতিকো। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই রিয়ালের ডিফেন্সে জড়ো হতে থাকে স্বাগতিকদের ফরোয়ার্ডরা। মেজাজ হারিয়ে দুই দলের ফুটবলাররা বেশ কিছু ফাউলও করে বসে।
ছোট ছোট পাসে রিয়ালও আক্রমণ শানে অ্যাতলেতিকোর বক্সে। আক্রমণ আর পাল্টা-আক্রমণে এগুনো দুই দলের ফুটবলাররাই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। ম্যাচের ৫৮ মিনিটে সিমিওন কোরেয়াকে তুলে নিয়ে লুসিয়ানো ভিয়েত্তোকে মাঠে পাঠান।
প্রথমার্ধে রিয়ালের সুপার হিরো রোনালদোকে বেশ কয়েকবার আক্রমণের নেতৃত্ব দিতে দেখা গেলেও দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ২০ মিনিটে তাকে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না। ৬৬ মিনিটের মাথায় ইসকোর বদলি হিসেবে মাঠে নামেন ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরা ওয়েলস তারকা গ্যারেথ বেল। ফলে, রিয়ালের আক্রমণ ভাগে অনেকদিন পর আবারো রোনালদো-বেনজেমা-বেলের উপস্থিতির দেখা মেলে।
ম্যাচের ৭৪ মিনিটে স্বাগতিকদের সমতায় ফেরানোর সুযোগ আসে। তবে, অ্যাতলেতিকোর ফরোয়ার্ডদের নেওয়া শট জোড়া জালের ঠিকানা খুঁজে পায়নি।
অবশেষে ম্যাচে ফেরে অ্যাতলেতিকো। ম্যাচের ৮৩ মিনিটে গোল করেন ভিয়েত্তো। বদলি খেলোয়াড় জ্যাকসন মার্টিনেজের মাটি কামড়ানো দারুণ ক্রসে পা ছুঁইয়ে রিয়ালের জালে বড় জড়িয়ে দেন ভিয়েত্তো। ফলে, ১-১ এ খেলা গড়াতে থাকে।
নির্ধারিত সময়ে আর কোনো গোল না হলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়ে তুই নগর প্রতিপক্ষ।
পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠার হাতছানি থাকলেও এ ম্যাচের পর সাত ম্যাচে রিয়ালের সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়ালো ১৫ পয়েন্ট, অবস্থান দ্বিতীয়। আর সমান ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে অ্যাতলেতিকোর অবস্থান পঞ্চম। সাত ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে ভিয়ারিয়াল। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চার নম্বরে বার্সেলোনা।
বাংলাদেশ সময়: ০২২৩ ঘণ্টা, ০৫ অক্টোবর ২০১৫
এমআর