ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খেলা

বাংলানিউজকে মহাপরিচালক

গতিশীল হচ্ছে বিকেএসপি’র আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

স্পোর্টস টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৫
গতিশীল হচ্ছে বিকেএসপি’র আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছবি : দেলোয়ার হোসেন বাদল / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: জাতীয় পর্যায়ের প্রায় ৮০ ভাগ খেলোয়াড় যোগান দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)। ১৯৮৩ সালে এটি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রীকে প্রধান করে ১০ সদস্যের বোর্ড দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে এটি। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অদ্যোবধি সুনাম, সাফল্য ও গর্ব নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। রাজধানীর অদূরে সাভারের জিরানী এলাকায় ১১৫ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এই ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।

এছাড়াও চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও দিনাজপুরে রয়েছে বিকেএসপির আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল করতে এবং অনন্য উচ্চতায় আসীন করতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন নবনিযুক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী মুরতজা খান।

শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা দূরীকরণ, কোচদের বেতন বৃদ্ধি, পেনসনের ব্যবস্থা ও আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলোকে গতিশীল করতে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন তিনি। তার এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে খেলোয়াড় তৈরির সূতিকাগার হিসেবে বিশ্বের কাছে অনুসরণ, অনুকরণের পর্যায়ে চলে যাবে বিকেএসপি। তার নতুন পরিকল্পনাগুলোর কথা তুলে এনেছে বাংলানিউজ স্পোর্টস টিম।

এসব পরিকল্পনার কথা ছাড়াও বিকেএসপির বিদ্যমান সমস্যা-সংকট, সীমাবদ্ধতার কথাও জেনেছে স্পোর্টস টিম। বিকেএসপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী মুরতজা খানের দীর্ঘ সাক্ষাৎকারটি দুই পর্বে প্রকাশ করবে বাংলানিউজ। আজ থাকছে সাক্ষাৎকারটির প্রথম পর্ব।

প্রশ্ন: মহাপরিচালক হিসেবে আপনি এ বছরের জানুয়ারিতে যোগ দিয়েছেন বিকেএসপিতে। এই সময়ে নতুন কি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন?

আলী মুরতজা খান: আমি জানুয়ারি মাসে বিকেএসপিতে যোগদান করেছি এবং মহাপরিচালক হিসেবে প্রায় ১০ মাস অতিবাহিত হয়েছে। এখানে যোগদান করার পর প্রথমেই আমি আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করি। পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণের আলোকে আমি একটা পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। আমার মনে হয়েছে যে কাজটা প্রথমেই করা উচিত তা হচ্ছে, আমাদের যে আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো আছে সেগুলোকে আরও গতিশীল করা। অনেকের ধারণা আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলো ঢাকা বিকেএসপির মধ্যে, আসলে কিন্ত তা না। আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলো করা হয়েছিল প্রতিভাবান খেলোয়াড়দেরকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে খুঁজে বের করে তাদের স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণদানের জন্য। এর ফলে বছরের অন্যান্য সময় আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলোতে তেমন কাজ হয় না। কিংবা আমাদের ইচ্ছা থাকলেও করতে পারি না। কারণ, ঢাকার মতো সুযোগ-সুবিধা সেখানে বিদ্যমান নয়। আমি মহাপরিচালক হিসেবে যোগদান করার পর ভাবলাম কিভাবে এটিকে আরও গতিশীল করা যায়। ইচ্ছা থাকলেই তো করা যাবে না। এ জন্য প্রজেক্টের প্রয়োজন, প্রচুর টাকার দরকার। যা হোক, এ ব্যাপারে আমি একটা প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। প্রজেক্টটির প্ল্যান আমাদের মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছি। কয়েকটি মিটিং হয়েছে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে। পরবর্তীতে সেটা মন্ত্রণালয় থেকে বর্তমানে পরিকল্পনা কমিশনে গিয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে আশা করছি, ইনশাল্লাহ এ বছরের মধ্যেই এটা অনুমোদন হয়ে যাবে। তখন আমরা কাজগুলোকে আরও গতিশীল করতে পারবো। তবে ইতোমধ্যেই আমি কিন্তু আমার আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ক্রিকেট ও ফুটবলের কিছু অংশ পরীক্ষামূলকভাবে ট্রান্সফার করেছি। ফলে গতিশীল হচ্ছে আঞ্চলিক প্রশিক্ষন কেন্দ্র। তবে এটি পুরোপুরি কার্যকরী হবে যখন প্রজেক্টটি অনুমোদিত হবে।

প্রশ্ন: এই প্রজেক্টটির মধ্যে আর কোনো বিষয় অর্ন্তভূক্ত করেছেন কিনা?

আলী মুরতজা খান: যে প্রজেক্টটির কথা আমি বলেছি সেটা শুধুমাত্র আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের জন্য। যেমন: প্রত্যেকটি আঞ্চলিক কেন্দ্রের মধ্যে দুটি করে মাঠ আছে। সাভার বিকেএসপির মাঠগুলো কিন্তু খেলার জন্য দারুণ উপযোগী। এখানে বৃষ্টি হলেও ঘণ্টাখানেক পর আমার ক্রিকেটাররা মাঠে নামতে পারবে। কিন্তু ওখানকার মাঠগুলো সেভাবে তৈরি করা হয়নি। কারণ, স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষনের জন্য সেগুলো তৈরি করা হয়েছিল। যখন আমাদের ট্যালেন্ট হান্ট কর্মসূচি চলে তখন মাঠগুলো ঠিক করা হয়। পুরো বছরজুড়ে মাঠগুলো দেখভাল করতে প্রচুর টাকা দরকার। তারপর আমাদের প্রতিটি আঞ্চলিক কেন্দ্রে সুইমিংপুল নেই। মাত্র দুটো’তে আছে। অন্যগুলোতেও করতে হবে। জিমনেশিয়ামও করা হয়েছে স্বল্পমেয়াদের জন্য। যখন আমি দীর্ঘমেয়াদের জন্য এগিয়ে যাব, তখন কিন্ত আমাকে সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। সেগুলো যোগ করেছি  প্রজেক্টের মধ্যে। তাছাড়াও আমাদের আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের যানবাহন ‍সুবিধা নেই। একটি কেন্দ্রে কমপক্ষে দুইটি গাড়ি প্রয়োজন। সেই যানবাহনগুলো আমি অন্তর্ভূক্ত করেছি। এছাড়া আমরা যখন ওখানে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করবো তখন মেসের কুক, বাবুর্চি, ওয়েটার দরকার হবে। আমরা সব কিছু নিয়ে বিশদভাবে পরিকল্পনা করেছি। দেখা যাক, এটা হয়ে যাবে আশা করছি।

প্রশ্ন: আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছাড়া ঢাকা বিকেএসপি নিয়ে নতুন কি পরিকল্পনা আছে আপনার?

আলী মুরতজা খান: আমাদের এখানে প্রশিক্ষণার্থী ছাত্র-ছাত্রী দুটো গ্রুপই আছে। তাদের আবাসন ব্যবস্থার বেশ ঘাটতি এখানে। যে রুমে ৪ জন রাখার কথা আমরা সেখানে ৬ জন করে রেখেছি। কোনো সুযোগ নেই আমাদের। কারণ, ভবনগুলো অনেক আগের করা। এটার ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করেছি। ভালো খবর হচ্ছে, ইতোমধ্যেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের একটি প্রকল্প অনুমোদন করেছেন। এ বছরই ছেলেদের জন্য ১০ তলা বিশিষ্ট একটি হোস্টেল হচ্ছে। আর মেয়েদের জন্য করেছি ভার্টিকাল এক্সটেনশন, সেটার কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে।
 
প্রশ্ন: কোন জায়গায় হবে ১০ তলা ভবনটি? 

আলী মুরতজা খান: এটা হবে কলেজ বিল্ডিং ও বিদ্যমান যে হোস্টেলটি আছে তার মাঝামাঝি। একটি খালি জায়গা আছে সেখানে। প্রাথমিক সব কাজ প্রায় শেষ। এখন শুধু আমরা বিজ্ঞপ্তি দেব। কোনো একটি প্রতিষ্ঠান করে দেবে। এবার পাঁচতলা দাঁড়িয়ে যাবে। দুইপর্বে শেষ হবে ১০তলা ভবনটি। সে সময় লিফটও থাকবে। এই কাজগুলো হয়ে গেলে বিকেএসপি আরও গতিশীল হবে।

প্রশ্ন: আপনার অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। কয়েকটি বাস্তবায়নের পথেও আছে। কিন্তু গত তিন বছরে বিকেএসপির মহাপরিচালক তিনবার বদল হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৩ সালেই দু’বার। এতে করে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কতটুকু সম্ভব?

আলী মুরতজা খান: সচরাচর যেটা হয়, শুধু বিকেএসপি না যে কোনো কর্মকর্তা ২-৩ বছর থাকার কথা সরকারী নিয়মানুযায়ী। তারপর তিনি বদলি হয়ে যাবেন। তবে তাতে কাজের কোনো সমস্যা হয়না। আমি বর্তমানে মহাপরিচালক আছি। যে পরিকল্পনা করেছি, যেমন: বললাম হোস্টেলের কথা, দুটো পর্বে হবে। কাজটা আমি শুরু করে যাচ্ছি। আমি থাকাকালীন হয়তো প্রথম পর্বটা শেষ হবে, আর দ্বিতীয় পর্বটা পরবর্তী মহাপরিচালক যিনি আসবেন তিনি নি:সন্দেহে এটাকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। কারণ, কর্ম-পরিকল্পনার মধ্যেই এভাবে বিন্যাস করা আছে। ফলে কাজের অগ্রগতিতে কোনো ভাঁটা পড়বে না।
 
প্রশ্ন: শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে কি এর প্রভাব পড়তে পারে?

আলী মুরতজা খান: ছাত্র-ছাত্রীদের প্রশিক্ষণের ব্যাপারে মূলত আমাদের  আলাদা উইং আছে। কোচদের পরিবর্তন হলে তাদের প্রশিক্ষণে ব্যাঘাত ঘটে। কিন্ত তাদের তো পরিবর্তন হচ্ছে না। যে কোচকে দায়িত্ব দিয়েছি, তিনি কিন্তু একটা পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন। সে আলোকেই তিনি তার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তবে হ্যাঁ, দীর্ঘমেয়াদে মহাপরিচালক যদি থাকে তাহলে কাজটাকে ভালোভাবে এগিয়ে নেয়া যায়। এছাড়া বড় কোনো প্রভাব পড়ে না।
 
প্রশ্ন: বিকেএসপি’র ভর্তি কার্যক্রম নিয়ে তেমন কোনো প্রচারণা নেই। বিকেএসপির ওয়েবসাইট ভিজিট করেও তেমন আপডেট পাওয়া যাচ্ছে না। এ ব্যাপারটাকে কিভাবে দেখছেন?

আলী মুরতজা খান: ওয়েবসাইটের ব্যাপারে যেটা বললেন, তার সূত্র ধরেই বলি, বিকেএসপির অধিকাংশ শিক্ষার্থী কিন্তু প্রত্যন্ত অঞ্চলের। যারা এখানে আসে তারা ওয়েবসাইট দেখার সুযোগ পায়না বা দেখে না। ওয়েবসাইটেও কিন্ত সবকিছু দেওয়া থাকে। তাছাড়া আমরা দেশের প্রিন্ট দৈনিকগুলোতে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দেই। প্রতিটি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাথে যোগাযোগ করে প্রচারণার ব্যবস্থা করি। চেষ্টা করি স্থানীয় যে টিভি চ্যানেল আছে তাদের স্ক্রলের মাধ্যমে সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার। আর আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলোতে অনেকেই যোগাযোগ রাখে। প্রায় প্রতিনিয়তই ফোন আসে। সবাই কিন্ত জানে জানুয়ারি মাসেই মূল বাছাইটা হয়। শুধুমাত্র এ বছরই আমাদের ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করতে একটু সময় লেগেছিল। সেটিও রাজনৈতিক বিরূপ পরিস্থিতির জন্য। তাই এবার বাছাইপর্ব জানুয়ারিতে না করে ফেব্রুয়ারিতে করতে বাধ্য হয়েছিলাম। প্রচার যদি না হতো একটা পদের বিপরীতে ১০০ জন আসতো না। ধীরে ধীরে এটা বেড়েই যাচ্ছে। বাছাইপর্ব আগে মাঠে করতাম, এখন মাঠেও জায়গা হয় না। আমাদের যখন ট্যালেন্ট হান্ট প্রোগ্রাম হয়, তখন দেশের প্রতিটা জেলায় আমাদের কোচরা চলে যান। তখন তারাও প্রচারণা চালান।

প্রশ্ন: জানতে পেরেছি, এখানকার কোচদের কোচিংয়ের পাশাপাশি দাপ্তরিক কাজও করতে হয়। দাপ্তরিক কাজের জন্য অফিস সহকারী নিয়োগের ব্যাপারে ভাবছেন কী না?

আলী মুরতজা খান: যেটাকে আপনি দাপ্তরিক কাজ বলছেন, সেটা কিন্ত আসলে দাপ্তরিক নয়। ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যক্তিগত ফাইল মেইনটেন করার দায়িত্ব কিন্ত কোচদেরই। একজন ছাত্র-ছাত্রীর প্রশিক্ষণের অগ্রগতির মানটা কোচরাই বের করবেন। প্রতিদিনের প্রশিক্ষণের অগ্রগতির মান তারাই দেখবেন। এটা অন্য কাউকে দিয়ে কিন্তু সম্ভব হবে না। দুই সেশনে সকাল-বিকাল ট্রেনিং কিন্তু কোচের অধীনেই হচ্ছে। একটা ছেলে ভালো করছে বা তার কি কি সমস্যা আছে, তা কোচই ধরতে পারবেন। সকালের সেশনের পর প্রশিক্ষণার্থীরা স্কুলে-কলেজে চলে যায় ৯টা থেকে। কোচরা কিন্তু অফিসে আসে ১১টার সময়। তাদেরকে বেশিরভাগ সময় বিশ্রাম দেওয়া হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের ডেভলপমেন্টের জন্য যতটুকু দরকার, ততটুকু কাজই তাদের জন্য দেওয়া থাকে।

প্রশ্ন: কোচদের প্রশিক্ষণটা কিভাবে হচ্ছে?

আলী মুরতজা খান: যখনই সুযোগ থাকে প্রতিবছর কোচদের আমরা দেশের বাইরে পাঠাই। আমার কোচ বর্তমানে চায়নাতে দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণে আছেন। কিছুদিন আগে কয়েকজন কোচ চায়নাতে গিয়েছেন, থাইল্যান্ডে গিয়েছেন, এমনকি আমেরিকাতেও যাচ্ছেন। ৯০ শতাংশ কোচই বিদেশে সফর করেছেন। আমাদের সীমাবদ্ধতার মাঝেও আমরা চেষ্টা করি তাদের অভিজ্ঞতার মূল্যায়ন করতে।
 
প্রশ্ন: কোচরাই তো বিকেএসপির চালিকাশক্তি। শুনেছি কোচদের বেতন খুবই কম। পদোন্নতিও ঠিকমতো হচ্ছে না। পেনশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। এসব প্রতিবন্ধকতার কারণে নাকি কাজের উৎসাহ হারিয়ে যাচ্ছে কোচদের?

আলী মুরতজা খান: আমাদের কোচদের কষ্ট আছে, আমি জানি। আমাদের কোচরা কিন্তু প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা। তাদের বেতন স্কেল সাড়ে এগারো হাজার টাকা। আমার একজন চিফ কোচ যাদের ৪০ বছর চাকরির বয়স হয়ে গেছে, তারা সর্বসাকুল্যে  ৩০-৩৫ হাজার টাকা পান। পক্ষান্তরে বাইরে এর চেয়ে কম যোগ্যতাসম্পন্ন কোচরা দেড় থেকে দুই লাখ টাকা পান। কিন্তু আমি ইচ্ছা করলেও তাদের বেতন বৃদ্ধি করতে পারছিনা। এই ব্যাপারটা আমি পরিচালনা কমিটিতে উপস্থাপন করেছিলাম। বেতন বৃদ্ধির ব্যাপারে একটা কিছু করা যায় কিনা বলেছিলাম। তারা অনুমতি দিয়েছেন। আমরা কাগজপত্র তৈরি করছি কোচদের বেতন বাড়ানোর জন্য। সাকিব-মুশফিক যার নামই বলবেন আমাদের কোচের হাতেই কিন্তু তারা তৈরি। তারা সবাই দক্ষ কোচ। অনেকের অবসরের সময় এসে গেছে। তাদের কিন্তু বিকেএসপি থেকে পেনসন দেওয়ার কাঠামো নেই। পেনশনটা যুক্ত করার চেষ্টা আমরা করছি। পরিচালনা পর্ষদে এমনকি জাতীয় সংসদের সংসদীয় কমিটিতে আমি এটা উপস্থাপন করেছি। আমাদের ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির মাননীয় সভাপতি একমত পোষন করেছেন। তারা এ বিষয়গুলো নিয়ে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন। কোচদের বেতন বাড়ানোর সাথে সাথে তাদের প্রমোশনেরও একটা ব্যাপার আছে। এ বিষয়গুলোতে সরকার অবগত।

প্রশ্ন: বিকেএসপি থেকে অসংখ্য ক্রিকেটার বেরিয়ে এসেছেন। ২৬ জন ফুটবলারও বেরিয়ে এসেছেন। এ দুটি ডিসিপ্লিন বাদে আর কোন ডিসিপ্লিনে সম্ভাবনা দেখছেন জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়াড় তৈরির ক্ষেত্রে?

আলী মুরতজা খান: ক্রিকেট ও ফুটবলের পর আরও দুটি ডিপার্টমেন্ট আছে যেটা ভবিষ্যতে ভালো করবে বলে আমার বিশ্বাস। একটা হলো শ্যুটিং, অন্যটি আরচ্যারি। শ্যুটিং আর আরচ্যারিতে কিন্তু শারীরিক শক্তির তেমন কিছু নেই। এটা হচ্ছে মনোযোগের খেলা। আমাদের খেলোয়াড়রা এতে দিনদিন ভালো করছে। আমার মনে হয় এ দুটো বিভাগ ক্রিকেট-ফুটবলের মতো আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এগিয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, ১৫ অক্টোবর ২০১৫
এসকে/এমআর


** এগিয়ে যাচ্ছে বিকেএসপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।