ঢাকা: অবিশ্বাস্য মেসি, অসাধারণ মেসি, অতুলনীয় মেসি। যে নামেই বার্সেলোনা স্ট্রাইকারকে ডাকেন না কেন, ভুল হবে না।
সেল্টার বিপক্ষে লা লিগার প্রথম লেগে ৪-১ গোলে হেরে যাওয়া বার্সা ঘরের মাঠ ক্যাম্প ন্যু’তে এদিন ছিলো ভয়ঙ্কর। যেন প্রতিশোধটা সুদে-আসলে নিল লুইস এনরিকের শিষ্যরা। ৬-১ ব্যবধানের জয়ে সুয়ারেজের হ্যাটট্রিক সামনের সারিতে থাকলেও, মাঠে থাকা ৭২ হাজার ৫শ ৮০ জন দর্শকের সামনে উরুগুইয়ান তারকাকে ছাপিয়ে গেছেন মেসি।
এদিন কাতালানদের হয়ে গোলের শুরুটা করেন আর্জেন্টাইন অধিনায়কই। তার গোলে প্রথমার্ধে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। তবে ম্যাচের ৩৯ মিনিটে সমতায় ফেরে সেল্টা। কিন্তু খেলার দ্বিতীয়ার্ধে শুধুই বার্সার গল্প। ৫৯, ৭৫ ও ৮১ মিনিটে গোল করে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন সুয়ারেজ। তবে ৮১ মিনিটে সুয়ারেজের হ্যাটট্রিক করা গোলটি হতো না যদি মেসির উদারতা না দেখতো ফুটবল বিশ্ব।
স্বাভাবিক ভাবে বার্সার পেনাল্টির কারিগর থাকেন মেসি। তবে শটটি করতে গিয়ে দেখা গেল দারুণ এক রোমাঞ্চ। বাঁ পাঁয়ে আলতো শটে বল বাড়িয়ে দিলেন ডানদিকে। অমনি সেল্টা গোলরক্ষক সার্জিও আলভারেজকে বোকা বানিয়ে দ্রুত গতির শটে গোল করলেন সুয়ারেজ। বিস্মিত হয়ে পড়লো পুরো স্টেডিয়াম। একি ফুটবল শৈলি দেখালেন মেসি। অবাক হয়ে যান বার্সার ফুটবলার ও কোচ এনরিক।
এদিন মেসি গোলটি করলে লা লিগায় নিজের ৩০০তম গোলের মাইলফলক ছুঁতে পারতেন। তবে রেকর্ড পঞ্চমবারের মতো ব্যালন ডি’অর জয়ী মেসিই পারে সতীর্থদের প্রতি এমন উদার হতে। আর মেসির ফুটবলীয় এমন দক্ষতাকে স্প্যানিশ গণমাধ্যম ইতোমধ্যে শতাব্দীর সেরা পেনাল্টি হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
এদিকে ২৮ বছর বয়সী এ তারকার এমন কাণ্ড কেউ কেউ আবার নেতিবাচক হিসেবেও দেখছেন। বলা হচ্ছে এমন গোল প্রতিপক্ষকে অসম্মান করার জন্যই। তবে সেল্টা কোচ এডুয়ার্ডো বেরিজ্জো অবশ্য এটাকে খেলারই একটি অংশ হিসেবে দেখছেন।
এদিন দলের হয়ে অন্য দুটি গোল করেছেন ইভান রাকিটিচ ও নেইমার। তবে ব্রাজিলিয়ান অধিনায়ক নেইমারের দাবি মেসি ও সুয়ারেজের মধ্যে পেনাল্টির ঘটনাটি আগে থেকেই নিশ্চিত ছিলো। তবে এটি ছিলো তার ও মেসির মাঝে। আগের দিনই অনুশীলনে মেসি ও নেইমার এমন যুক্তি করে রেখেছিলেন। যা জানতেন না খোদ কোচ এনরিক।
এর আগে ইতিহাসে পেনাল্টি থেকে এমন গোল হয়েছে আরও তিনবার। সর্বপ্রথম ১৯৫৭ সালে বেলজিয়াম ও আইসল্যান্ডের মধ্যেকার ম্যাচে। বেলজিয়ান ফুটবলার রিক কোপেনস ও আন্দ্রে পিটেরসের ওয়ান টু ওয়ান ছোট পাসে শেষ পর্যর্ন্ত কোপেনস গোলটি করেন। পেনাল্টিতে শটটি প্রথমে নিয়েছিলেন কোপেনসই।
১৯৬৪ সালে ঘটে দ্বিতীয় ঘটনাটি। ইংলিশ এফ কাপে ম্যানচেস্টার সিটি ও প্লেমাউথের ম্যাচে মাইক ট্রিইব্লিকক ও জন ইউম্যানের মাঝে হওয়া এ পেনাল্টিতে গোল করেন ট্রিইব্লিকক।
তৃতীয় অদ্ভূত পেনাল্টি শটটি সাবেক বার্সা কিংবদন্তি ইয়হান ক্রইফের। ১৯৮২ সালে তখন ডাচ তারকা খেলতেন আয়াক্সের হয়ে। সতীর্থ জেসপার ওলসেনের সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান পাসে হেলমন্ডের বিপক্ষে গোল করেন ক্রইফ।
এদিকে সর্বশেষ ২০০৫ সালে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে এমন শট নিতে দেখা গিয়েছিল আর্সেনালের স্ট্রাইকার থিয়েরি অঁরিকে। কিন্তু সতীর্থ রবার্ট পিরেসের সঙ্গে ঠিক মতো বোঝাবুঝি না হওয়ায় গোলবঞ্চিত হন এ ফ্রেঞ্চ তারকা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৮ ঘণ্টা, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬
এমএমএস
** ‘এমএসএন’ শো’তে উড়ে গেল সেল্টা