বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম থেকে: অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যার বিচারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা চলছে। দর্শকে ঠাসা স্টেডিয়ামের গোটা গ্যালারি।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা চলছে। ছোট ছোট মেয়েদের ফুটবল নৈপূণ্য আর খেলার টান টান উত্তেজনায় কাঁপছে গোটা গ্যালারি। প্রথমার্ধ্বের খেলার ১৭ মিনিটে মাথায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রবেশ করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর আগমনে গ্যালারিতে বেড়ে যাওয়া উচ্ছ্বাসের সঙ্গে মাঠের লড়াইটা যেন আরো জমে গেলো।
মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা দেখতে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আসেন প্রধানমন্ত্রী।
দুপুর ৩টা ৪০ মিনিটে শুরু হয় ময়মনসিংহের কলসিন্দুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রাজশাহীর বাঘমারার খর্দ্দকৌড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদে মেয়েদের ফুটবল লড়াই। ৩টা ৫৭ মিনিটে ভিভিআইপি গ্যালারিতে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
খেলাধুলার প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহ প্রবল। ছোট-বড় খেলা যারই হোক, সুযোগ পেলেই মাঠে ছুটে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিজের আগ্রহের পাশাপাশি খেলোয়াড়দের উৎসাহ ও খেলাধুলার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়াতে মাঠে আসেন তিনি।
খেলা উপভোগ শেষে প্রধানমন্ত্রী মাঠে থেকে ক্ষুদে খেলোয়াড়দের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ক্ষুদে খেলোয়াড়দের স্নেহের পরশ বুলিয়ে দেন, উৎসাহ দেন বড় খেলোয়াড় হতে, মানুষের মতো মানুষ হতে। তাদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন। পুরস্কার বিতরণের আগে কথা বলেন তিনি।
মাঠে এসে খেলা দেখা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাঠে এসে খেলা উপভোগ করলাম। মাঠে বসে চিনাবাদাম খেতে খেতে খেলা দেখার মজাই আলাদা’।
ছোটদের খেলার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এরা চমৎকার নৈপূণ্য দেখিয়েছে। মনে হয়, বড়দেরও হার মানিয়ে দিয়েছে’।
ছেলে-মেয়েদের খেলাধুলায় আগ্রহী করে তুলতে অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, স্কুলগুলোতে খেলাধুলার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। যাতে ছেলে-মেয়েদের খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ বাড়ে।
শেখ হাসিনা বলেন, ছেলে-মেয়েরা খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী হলে বিপথে যাবে না। খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে তারা সুস্থ মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে আগামীর নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য।
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ উল্লেখ করে শিশুদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমরা নিজেদের গড়ে তুলবে আগামী সোনার বাংলার সোনার মানুষ হিসেবে।
মেয়েদের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০১৫ এর ফাইনালে ময়মনসিংহের কলসিন্দুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩-১ গোলে রাজশাহীর বাঘমারার খর্দ্দকৌড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়।
এ খেলার আগে একই মাঠে অনুষ্ঠিত হয় ছেলেদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ। কক্সবাজার জেলার পেকুয়ার রাজাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খেলায় জয়ী ও চ্যাম্পিয়ান হয়। ম্যাচে টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে তারা হারায় দিনাজপুরের বীরগঞ্জের মরিচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে।
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টে ৬৩ হাজার ৫০৯টি দল এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টে ৬৩ হাজার ৪৩১টি দল অংশগ্রহণ করে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পৃথিবীতে কোনো টুর্নামেন্টে এতো বিপুল সংখ্যক দলের অংশগ্রহণের নজির আমার জানা নেই।
আয়োজকরাও এ দু’টি টুর্নামেন্টকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট হিসেবে দাবি করেন।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৬
এমইউএম/আরএম/এএসআর
** বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী