ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খেলা

ফুটবলকে জাগাতে একসঙ্গে কাজ করবে শেখ রাসেল-ইস্ট বেঙ্গল

মোস্তফা শামীম, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২২
ফুটবলকে জাগাতে একসঙ্গে কাজ করবে শেখ রাসেল-ইস্ট বেঙ্গল সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের সহ-সচিব রূপক সাহা ও এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য দেবব্রত সরকার | ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: বাঙালির প্রিয়তম খেলা ফুটবল। ফুটবলকে পুঁজি করে এশিয়া মহাদেশে নতুন করে আলোড়ন, উদ্দীপনা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একসঙ্গে পথ চলার অঙ্গীকার করেছে বাংলাদেশের সেরা ক্লাব শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ও কলকাতা তথা ভারতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ইস্ট বেঙ্গল।

শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীরের আমন্ত্রণে ভারতবর্ষের শতাব্দীপ্রাচীন ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের কর্মকর্তাদের কয়েকজন ঢাকায় এসেছেন।

বুধবার (১৬ মার্চ) ঢাকার এক হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করার সময় ইস্ট বেঙ্গলের কর্মকর্তারা জানান, ভবিষ্যতে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ও ইস্ট বেঙ্গল একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে একমত হয়েছে। দ্রুতই একসঙ্গে কাজ করার কৌশল ঠিক করবেন তারা।

ফুটবলকে জাগাতে, ফুটবলের পরিকাঠামোর উন্নয়নে এবং নতুন প্রতিভা অন্বেষণে সর্বোপরি ফুটবলের গুণমান বাড়ানোর স্বপ্নের সার্থক দিশারি হবে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ও ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব। আগামী দিনের এই ভাবনাকে বাস্তবায়িত করার উদ্দেশে উভয় বাংলা একসাথে কাজ করবে শ্রেষ্ঠত্বের খোঁজে।

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের সহ-সচিব রূপক সাহা ও এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য দেবব্রত সরকার।

রূপক সাহা বলেন, দুই বাংলা আমরা এক ভাষায় কথা বলি, এক পোশাক পরি, একভাবে ভাবি। তারপরও আমরা বলি এপার বাংলা ওপার বাংলা। অদ্ভুতভাবে, আমরা ভৌগোলিক কারণে আলাদা। এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। যদি জন্মগতভাবে দেখেন, আমরা এপার বাংলার লোক। কোনো কারণে ওপার বাংলায় গিয়ে একটি ক্লাবের জন্ম হয় আজ থেকে ১০৩ বছর আগে। সেই ক্লাবটিই হলো ইস্ট বেঙ্গল। ইস্ট বেঙ্গলের নাড়ির টান এখানে, সেজন্যই আমাদের বার বার এখানে ফিরে আসা। কিছুদিন আগে আমাদের অত্যন্ত প্রিয় মানুষ, প্রিয়জন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীরকে আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের তরফ থেকে, তাঁকে আজীবন সদস্যপদের জন্য। আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ যে, তিনি রাজি হয়েছিলেন এবং তিনি কলকাতায় গিয়েছিলেন, আমাদের ক্লাবে গিয়েছিলেন। আমাদের শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাব, ঐতিহ্যবাহী ক্লাব, আমরা তাকে বরণ করেছিলাম। আমাদের দুই বাংলার সম্পর্ক হৃদয়ের সম্পর্ক। সেদিনের সেই অনুষ্ঠান ও তাঁকে বরণ করে নেওয়াটা তাঁরও ভালো লেগেছিল। তিনি সেদিনই আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছিলেন। এরপর আবারও তিনি আসার আমন্ত্রণ জানান এবং নির্ধারিত দিনেই আমরা এসেছি।

দেবব্রত সরকার বলেন, আমরা বেশকিছু দিন ধরেই ভাবছিলাম, গত দুই-তিন বছর ধরে আমাদের একটা প্রয়াস ছিল শেখ রাসেল ক্লাবের সাথে বা বসুন্ধরার সাথে আমরা এশিয়ার বৃহত্তম একটা ইনফ্রাস্ট্রাকচার এবং ফুটবলকে প্রমোট করতে পারি, এশিয়ার এক নম্বর হতে পারি, মানুষকে পথ দেখাতে পারি—এরকম একটা ভাবনা ছিল। আলটিমেটলি আমরা গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আনভীর সাহেবের সঙ্গে বসে এই কথাগুলো আলাপচারিতা করতে পেরেছি। তিনিও সহমত পোষণ করেছিলেন। তারপর তিনি আমাদের এখানে আমন্ত্রণ জানান। আমরা আসি এবং আসার পর থেকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, ভারত থেকে অনেক মিডিয়া যোগাযোগ করেছে। আমরা আজ সকালে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করি এবং আমরা দুটো ক্লাবই অঙ্গীকার করেছি, আমরা যৌথভাবে চলতে পারি কিনা। দুজনই সহমত হয়েছি এবং সব পরিস্থিতি ও প্রতিকূলতা ঠিকঠাক থাকে তবে আমরা আগামী দিনে এক হয়ে চলবো। আমাদের ক্লাবের তরফ থেকে আমরা করেছি, তাঁর ক্লাবের তরফ থেকে তিনি করেছেন। আগামী দিনে ফুটবলের উন্নয়নে কী কী করা যায় সেই আলোচনাই আমরা করেছি। তাঁদের আমন্ত্রণে আমরা বসুন্ধরা ক্রীড়া কমপ্লেক্স দেখতে গিয়েছি। এই স্পোর্টস কমপ্লেক্স দেখে আমরা অভিভূত। ফুটবলের জন্য এই ধরনের কর্মকাণ্ডে আমরা মুগ্ধ এবং আমরা তাঁকে বলেছি, ভবিষ্যতে আমরা দুটো ক্লাব মিলে ভারতবর্ষে এমন কিছু করা যায় কিনা। এই উদ্যোগে তিনি সহমত পোষণ করেছেন। আমরা এ নিয়ে খুবই আনন্দিত।

এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিশিষ্ট ক্রীড়াপ্রেমী ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীরকে সংবর্ধনা দেয় ভারতের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ইস্টবেঙ্গল। একইসঙ্গে তাকে ক্লাবটির আজীবন সদস্য করা হয়।

সংবর্ধনায় ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের পক্ষ থেকে সোবহান দম্পতির হাতে তুলে দেওয়া হয় ক্লাবের লাল-হলুদ জার্সি, উত্তরীয়, ক্লাবের গোল্ড কয়েন, ফলের বাস্কেট, কলকাতার নানা স্বাদের মিষ্টি, বাংলার পাঞ্জাবি ও শাড়ি।

অনুষ্ঠানে সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, আপনাদের আন্তরিকতা আমাকে শুধু মুগ্ধ করেনি, আমাকে ভালোবাসা দিয়ে আপনারা কিনে নিয়েছেন। আমিও বাংলাদেশে আপনাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। এখানে অনেকবার শুনছি এপার বাংলা-ওপার বাংলা। আসলে বাংলা তো একটাই, ভাষা তো এক, মানুষগুলো তো এক, শুধু মাঝখানে একটা লাইন এসে গেছে। তাই বলে খেলা বন্ধ থাকবে? আসুন বাংলাকে খেলাধুলার মাধ্যমে এক করি। আমি চাই শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের সঙ্গে ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের খেলা হোক। আমি আশা করব, ক্লাবের কর্মকর্তারা আমার প্রস্তাব গ্রহণ করবেন। খেলার পুরো স্পন্সর বসুন্ধরা করবে।

এরপর শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের সঙ্গে কলকাতাবাসীর পরিচয় করাতে গিয়ে তিনি বলেন, শেখ রাসেল হলেন বাংলাদেশের জাতির পিতার সন্তান। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা। তিনি আমাকে এই ক্লাবের দায়িত্ব দিয়েছেন চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে ইস্ট বেঙ্গলের সহযোগিতার বিষয়ে সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, আমাকে যা বলবেন সব করে দেবো। আপনারা আন্তরিকতা দিয়ে আমাকে কিনে নিয়েছেন।

সে সময় ইস্ট বেঙ্গলের সভ্য-সমর্থকরা হাততালি দিয়ে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীরকে অভিনন্দন জানান।

বাংলাদেশ সময়: ২২১০ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২২
এমএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।