আল জাজিরার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সানিয়া তুলে ধরেছেন ছেলে-মেয়েদের বিভেদের প্রসঙ্গ। তুলে ধরেছেন মেয়ে হয়ে খেলতে গিয়ে তাকে কি কি সমস্যার সম্মুক্ষীণ হতে হয়েছিল।
সানিয়া জানান, ‘আমি টেনিস পছন্দ করি, খেলতে ভালোবাসি। আমি জানি এই খেলার উপভোগ্য দিকটি কোথায়। আমি জানি অর্জনের মধ্যে কতটা আনন্দ মিশে থাকে। উপমহাদেশে ক্রিকেট সবসময়ই জনপ্রিয়তায় এগিয়ে। তারপরও আমি চেষ্টা করছি তরুণ-তরুণীদের টেনিসের দিকে এগিয়ে আনতে। ’
সানিয়া আরও বলেন, ‘আমরা এমন জায়গায় রয়েছি, যেখানে কোনো অলিম্পিক গেমস, এশিয়ান গেমস অথবা কোনো কমনওয়েলথ গেমসের দুইমাস আগে সবাই নড়েচড়ে বসি। অন্যথায় নারী অ্যাথলেটদের কোনো খবরই নেওয়ার কেউ নেই। সবাইকে মনে রাখতে হবে উপমহাদেশে ক্রিকেটের বাইরেও বিশ্বমানের তারকা অ্যাথলেটরা রয়েছে। কিছু কিছু গেম আছে যেখানে কোনো স্পন্সর নেই, সহযোগিতা নেই। কিন্তু ভারতীয় ছবির (মুভি) কারণে পুরো বিশ্ব জানতে পারছে আমাদের অ্যাথলেটদের সম্পর্কে। বলিউড এমন একটি জায়গায় আমাদের নিয়ে এসেছে যে আমরা নিজেদের পুরো বিশ্বে তুলে ধরতে পারছি। ’
উপহমাদেশ থেকে নারী খেলোয়াড় বেরুচ্ছে না কেন-এমন প্রশ্নের জবাবে সানিয়া জানান, ‘এটা ঠিক যে ভারত থেকে কোনো নারী টেনিস খেলোয়াড় বেরুচ্ছে না। না কোনো মুসলিম পরিবার থেকে, না অন্য ধর্মের পরিবার থেকে। এটা ধর্মের কোনো বিষয় নয়। এটা আমাদের সংস্কৃতিগত সমস্যা। এখানে মেয়েদের বিয়ে নিয়ে চিন্তা করা হয়, তাদের রান্না করানোর শিক্ষা দেওয়া হয়। তাদের ছেলেদের সঙ্গে মেশার সুযোগ কম থাকে। তাদের ঘরের বাইরে খেলার কোনো সুযোগ থাকেনা। একারণেই টেনিসের কোনো নারী খেলোয়াড় বেরিয়ে আসছে না। ’
‘আমি জাতিসংঘের ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নারীদের নিয়ে অনেক কাজ করেছি, তাদের ঘরের বাইরে আনার চেষ্টা করেছি। শুধু দক্ষিণ এশিয়ার নারীদের না, পুরো বিশ্বের নারীদের দমিয়ে রাখা হচ্ছে। আমরা পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বাস করছি। আমরা এটা ক্ষেত্রবিশেষে মেনেও নিয়েছি। কিন্তু সমতায় ফেরার লক্ষ্যে যদি আমরা লড়াইয়ে নামি তাহলে ভালো কিছুই হবে না, উল্টো সমস্যা বাড়বে। ’ যোগ করেন সানিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৮ ঘণ্টা, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
এমআরপি