ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

সবুজের বুক চিরে চেনা নতুন শ্রীমঙ্গল

আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৬
সবুজের বুক চিরে চেনা নতুন শ্রীমঙ্গল ছবি: আসিফ আজিজ-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শ্রীমঙ্গল থেকে: শ্রীমঙ্গলের এ দিকটা আসা হয়নি আগে। এবার এসে বুঝলাম সিলেট-শ্রীমঙ্গলের আগে কেন বারবার হাজির ‘সবুজ’ বিশেষণ।

চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গলও যেন এটাই। শুধু সবুজ নয়, বিশেষণ হিসেবে মোহনীয়, মায়াময়, নয়নাভিরাম, চোখ ধাঁধানো, প্রশান্তিময়সহ যোগ করার দাবিদার আরও।
 

শ্রীমঙ্গল শহর থেকে দক্ষিণ দিকে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইন্সটিটিউট (বিটিআরআই)। যতদূর চোখ যায় সবুজের বুক চিরে চলে গেছে পিচঢালা সড়ক। দু’পাশে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটির চা বাগান।
 

সবুজ বাগানের বুকে মাথা উঁচু করে এরকম কোটি পাতা জানান দেবে এসেছেন দুটি পাতা একটি কুঁড়ির দেশে।
 

বিটিআরআই পার হলেই ফিনলে চায়ের বাগান শুরু। প্রায় ২০ কিলোমিটারজুড়ে বাগান তাদের। এক পাশে দীর্ঘ মেহগনি, অন্য পাশে চায়ের ছায়াবৃক্ষ। এদিকটা এতোই নিরিবিলি যে, সন্ধান দেবে নতুন শ্রীমঙ্গলের। চা গাছের কচি পাতার মিষ্টি মাতাল করা গন্ধ আবিষ্ট করবে অনুভূতিপ্রবণ প্রত্যেককে।
 

বালিশিরা ভ্যালি। সৌন্দর্য এখানে পরতে পরতে সাজানো। সবুজ গাছের ছায়াময় টানেল সঙ্গ দেবে দীর্ঘ সময়। দু’পাশের চা বাগান কিন্তু ঠিক আগের মতোই। মসৃণ পিচঢালা সড়ক দিয়ে প্রিয়জন কিংবা প্রিয় মানুষদের নিয়ে বাহনে চড়ে অথবা হেঁটে প্রকৃতির অন্য রূপ উপভোগ বা অন্য অনুভূতি পাবেন এখানে।
 

বিকেলের শেষ আলো একটি পরিপূর্ণ চা বাগানে। সবুজ আলোয় আলোকিত যেন!
 

এ বাগানটির বয়স মাত্র তিন বছর। সবে বড় হয়ে উঠছে। পাতা সংগ্রহের কাজও শুরু হবে শিগগির। সবুজ ছায়াঘেরা বাগানে শুধু কচি পাতার আলো।

শ্রীমঙ্গল শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে যেতে হবে রাজঘাট লেক। তিনদিক চা বাগান বেষ্টিত লেকটির বয়স বছর পঁয়ত্রিশেক। শাপলা-শালুক ভরা লেকটি ভরবর্ষায় সৌন্দর্যের পেখম মেলে বসে। চা বাগানের ছায়া যখন স্বচ্ছ পানিতে পড়ে, তখন সেটি সত্যি হয়ে ওঠে মোহনীয়।  

এটি জেমস ফিনলে টি কোম্পানির ডিনস্টন সিমেট্রি। ব্রিটিশরা এ অঞ্চলে চায়ের আগমন ঘটায়। কর্মসূত্রে যেসব ব্রিটিশ সেময় মারা যান তাদের সমাধিসৌধটি দেখে আসতে পারেন রাজঘাট লেক থেকে আসা অথবা যাওয়ার পথে। ৪৬টি সমাধি আছে এখানে।
 

এদেশে ব্রিটিশদের ইতিহাস শাসন-শোষণের। শহর থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার দূরের এ পরিত্যক্ত প্রাচীন গলফ মাঠটি সে নিদর্শনই ধরে রেখেছে। রাজঘাট লেক থেকে শ্রীমঙ্গলের দিকে যে সকড় গেছে সেটিতে না ঢুকে সোজা দুই কিলোমিটার গেলেই চোখে পড়বে এটি।

শ্রীমঙ্গল শহরে ফেরার পথে রাস্তার পাশে পড়বে ব্রিটিশদের আরও একটি নিদর্শন। সে আমলের একটি পরিত্যক্ত রানওয়ে। এটিও সংরক্ষণ করা হয়েছে।
 
তাই শ্রীমঙ্গল এলে এদিকটায় সময় নিয়ে একবেলার জন্য হলেও ঘুরে আসতে পারেন। চিনবেন নতুন শ্রীমঙ্গল।

** সাদা-কালো নাগা মরিচে গিনেস রেকর্ডের ঝাল
**তবু থেকে যায় সাতরঙা চায়ের রহস্য
**রাতদুপুরে সবুজবোড়ার রাস্তা পারাপারের দুঃখ
**পর্যটকবান্ধব নয় সিলেট-শ্রীমঙ্গলের ট্রেন
**চুলা নেই পূর্বাঞ্চলের কোনো ট্রেনের ক্যান্টিনে
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, জুলাই ১৬,২০১৬
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ