ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ে ডিএসইর খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ

সাঈদ শিপন ও শেখ নাসির হোসেন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৯ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৪
অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ে ডিএসইর খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ

ঢাকা: শেয়ারবাজারে টানা মন্দাবস্থার প্রভাব পড়েছে দেশের প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালন আয়ে। আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে ডিএসইর পরিচালন আয়।

এ পরিস্থিতিতে কর্মকর্তাদের বেতন খাতের খরচ কমিয়েও ডিএসইর ব্যয়ের পরিমাণ কমানো সম্ভব হয়নি। উল্টো তিন অর্থবছর ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির খরচের পরিমাণ। আর এর একটি বড় অংশ ব্যয় হয়েছে অপ্রয়োজনীয় কাজে।
 
প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জনা গেছে।
 
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০০৯-১০ অর্থবছরে ডিএসইর পরিচালন ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ২৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। যা সর্বশেষ অর্থবছর (২০১২-১৩) শেষে  দাঁড়িয়েছে ৫৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ তিন অর্থবছরের ব্যবধানে খরচ বেড়েছে ২৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
 
ডিএসইর খরচ খাতে সবচেয়ে বড় উষ্ফালন ঘটে ২০১০-১১ অর্থবছরে। ওই সময় এক অর্থবছরের ব্যবধানে খরচ ২৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা থেকে এক লাফে দাঁড়ায় ৪৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।
 
এর পর খরচের লাগাম টানতে কমানো হয় কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা খাতের ব্যয়ের পরিমাণ। এক অর্থবছরের ব্যবধানে এ খাতের খরচ দুই কোটি ৪৩ লাখ টাকা কমানো হয়। তারপরও কমেনি খরচের অঙ্কের পরিমাণ। মূলত ডিএসইর পরিচালকদের আমোদ-প্রমোদের জন্য বিভিন্ন সভার নামে মোটা অঙ্কের টাকা খরচের কারণে ব্যয় কমানো সম্ভব হয়নি।
 
২০১২-১২ অর্থবছরে বিনোদন খাতে ব্যয় হয়েছে এক কোটি দুই লাখ ১৬ হাজার টাকা। যা আগের অর্থবছরে ছিল এক কোটি ১০ লাখ ২৬ হাজার টাকা। আর মেম্বার কনফারেন্স ও সেমিনার বাবদ ২০১২-১৩ অর্থবছরে খরচ দেখানো হয়েছে এক কোটি ৯৮ লাখ ১৬ হাজার টাকা। যা আগের অর্থবছর (২০১১-১২) ছিল ৩১ লাখ ৮৩ হাজার টাকা।
 
এছাড়া পরিচালকদের সম্মানী বাবদ সর্বশেষ অর্থবছরে খরচ হয়েছে ৫২ লাখ ৩২ হাজার টাকা। যা আগের অর্থবছরে ছিলো ৩৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। আর ২০১০-২০১১ অর্থবছর ও ২০০৯-১০ অর্থবছরে এ খাতে খরচ হয়েছিল যথাক্রমে ৩৪ লাখ ও সাড়ে ৩২ লাখ টাকা।
 
বেতন ও ভাতার খাতে  ২০১২-১৩ অর্থবছরে ডিএসইর খরচ হয়েছে ২১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। যা ২০১০-২০১১ অর্থবছরে ছিল ২২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এরপর ২০১১-১২ অর্থবছরে এ খাতের খরচ কমে দাঁড়ায় ১৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
 
বরাবরের মতো ২০১২-১৩ অর্থবছরেও অবচয় খাতে বড় ধরনের খরচ দেখানো হয়েছে। এ খাতে খরচ দেখানো হয়েছে ছয় কোটি ৮৮ লাখ টাকা। যা আগের অর্থবছরে (২০১১-১২) ছিল পাঁচ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। আর ২০১০-১১ অর্থবছরে এ খাতে খরচ হয় পাঁচ কোটি  ৬০ লাখ টাকা।
 
ডিএসইর খরচের তালিকায় আরও স্থান পাওয়া খাতগুলোর মধ্যে নিরাপত্তার জন্য মজুরিতে ২০১২-১৩ অর্থবছরে খরচ হয়েছে ৭৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা। ভাড়া, অভিকর ও কর বাবদ খরচ হয়েছে দুই কোটি সাত লাখ ৯৪ হাজার টাকা। মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে খরচ দেখানো হয়েছে ৪৮ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। বিদ্যুৎ খ্যাতে ৬৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, মুদ্রণ ও মনিহারি খাতে ৬১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা।
 
বৈদ্যুতিক টেলিযোগাযোগ খাতের ব্যয় দেখানো হয়েছে, এক কোটি ৩০ লাখ ১০ হাজার টাকা। সিস্টেম রক্ষণাবেক্ষণ খাতে পাঁচ কোটি ৫৮ লাখ ৬৭ হাজার টাকা, বিনিয়োগকারী প্রটেকশন ফান্ডের অনুদান তিন কোটি পাঁচ লাখ ৫৩ হাজার টাকা।
 
বিমা প্রিমিয়াম বাবদ খরচ হয়েছে দুই কোটি ৭৩ লাখ ২৯ হাজার টাকা, যাতায়াত খরচ ৬০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা, প্রশিক্ষণ ও মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতে ১২ লাখ ৫৯ হাজার টাকা এবং সাধারণ খরচের খাতে ডিএসই সর্বশেষ অর্থবছরে খরচ দেখিয়েছে চার কোটি ৪১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা।
 
এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্বপন কুমার বালার মন্তব্য পাওয় যায়নি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৮ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।