ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

কারসাজি চক্রের খপ্পরে ওয়াটা কেমিক্যাল!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৯ ঘণ্টা, জুন ২, ২০১৪
কারসাজি চক্রের খপ্পরে ওয়াটা কেমিক্যাল!

ঢাকা: পরিচালক ও প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের খপ্পরে পরে আকাশ ছোঁয়া দামে লেনদেন হচ্ছে ওয়াটা কেমিক্যাল কোম্পানির শেয়ার।
 
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা যায়, বাজারে এ কোম্পানির মোট ৪৮ লাখ ৬০ হাজার শেয়ার রয়েছে।

এর মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে মাত্র ২৩ দশমিক ৯০ শতাংশ, প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ এবং কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৪০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
 
অভিযোগ ওঠেছে, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে কম সংখ্যক শেয়ার থাকায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) এক কমিশনারের ইন্ধনে কোম্পানির পরিচালক এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের একটি দল এ শেয়ার নিয়ে কারসাজি করছে।
 
এদিকে বিএসইসিকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, একদিনের ব্যবধানে ওয়াটা কেমিক্যালের শেয়ার দর যে পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে, তা স্বাভাবিক নয়। এর পেছনে স্বার্থান্বেষী একটি মহল জড়িত রয়েছে।
 
এ বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক সভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটু বাংলানিউজকে বলেন, ওয়াটা কেমিক্যালের যে পরিমাণ দর বৃদ্ধি পেয়েছে, তা স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না। বিষয়টি বিএসইসির খতিয়ে দেখা উচিত।
 
তিনি আরও বলেন, আমি সভাপতি থাকার সময় কোম্পানির ভিত্তি শক্তিশালী না হওয়ায় ওয়াটা কেমিক্যালকে তালিকাভুক্ত করিনি। তবে ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন বোর্ড পরবর্তীতে তথ্য যাচাই বাছা‌ই করে কোম্পানিটিকে তালিকাভুক্ত করেছে।
 
একদিনের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৮ গুণ বা ৭শ’ শতাংশের বেশি। শেয়ারটির এমন অস্বাভাবিক দর বাড়ায় আশ্চর্য হয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরাসহ সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
 
গত ১৪ মে ওটিসি মার্কেট থেকে মূল বাজারে ফেরার পর মাত্র দুদিন শেয়ারটির লেনদেন হয়। গত ১ জুন কোম্পানিটি লভ্যাংশ ঘোষণা করে। ফলে সোমবার এর শেয়ার লেনদেনে সার্কিট ব্রেকার বা কোনো মূল্য সূচক ছিল না। আর এই সুযোগে শেয়ারটির মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে।
 
অন্যদিকে, ডিএসইর সাবেক এক সভাপতি বলেন, শোনা যাচ্ছে ওয়াটা কেমিক্যালের দর বৃদ্ধিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার এক কমিশনার জড়িত রয়েছেন। এটা সত্য হলে তা বাজারের জন্য খুবই দুঃখজনক বিষয়। এর আগে সিভিও পেট্রোকেমিকেল কোম্পানির শেয়ার দর বাড়াতেও ওই কমিশনার ভূমিকা রেখেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
 
তিনি বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিএসইসির প্রতি আহ্বান জানান। এমনকি এ কোম্পানির শেয়ার কারা ক্রয় করছে বা কারা বিক্রি করছে তা বিএসইসিকে অবশ্যই খতিয়ে দেখতে বলেন তিনি।
 
সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) শেয়ারটি ৪০০ টাকা মূল্যে লেনদেন শুরু করে।
 
বিশ্লেষণে দেখা যায়, মাত্র আধঘণ্টায় শেয়ারটির দর ৩৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৪০০ টাকায় দাঁড়ায়। এরপর থেকে একটানা বাড়াতে থাকে এ কোম্পানির শেয়ার দর। দিনের সর্বোচ্চ ৫১৫ টাকায় লেনদেন হয় এ কোম্পানির শেয়ার। তবে সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৪৮৮ টাকায়। গত কার্যদিবসে এ কোম্পানির শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছিল ৫৯ দশমিক ৮০ টাকা। যা গত কার্যদিবসের চেয়ে ৮.২৫ গুণ বা ৭১৬ শতাংশ বেশি।
 
এদিন কোম্পানিটির ৩ লাখ ২ হাজার ৬০০ শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১১ কোটি ৯১ লাখ ৮০ হাজার টাকার কিছুটা বেশি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৮ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।