ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

অতিসতর্কতায় পুঁজিবাজারে দরপতন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৭
অতিসতর্কতায় পুঁজিবাজারে দরপতন

ঢাকা: ছয় বছর পর ঘুরে দাঁড়ানো পুঁজিবাজারে আবারো বড় দরপতন হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অতিসতর্কতায় আবারো দরপতন হচ্ছে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

ডিএসইর সূত্র মতে, ১ জানুয়ারি থেকে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৫ কার্যদিবসই সূচকের উত্থান হয়েছিলো। এতে সূচক বেড়েছে ৫৮৬ পয়েন্ট, বাজারে মূলধন যোগ হয় ৩৪ হাজার ২৬৭ কোটি ৫৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকার।

কিন্তু উত্থানপূর্ণ এই বাজারে বিনিয়োগে সতর্ক থাকতে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে মোবাইল ফোনে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। পাশাপাশি যাতে কোনো ভাবেই মূল্যসংশোধন ছাড়াই শেয়ারের দাম না বাড়ে সে জন্য ২৫ জানুয়ারি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের সচেতন করতে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ, মার্চেন্ট ব্যাংকার অ্যাসোসিয়েশন এবং স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর ওয়েবসাইটে বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে।

এতে বলা হয়, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে জেনে-বুঝে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিনিয়োগের জন্য কি কি বিবেচনা করতে হবে এবং বিনিয়োগকারীদের কোনো বিষয়গুলো বর্জন করতে হবে তারও একটি গাইড লাইন ঠিক করে দিয়েছে বিএসইসি। এই দিনের পর থেকেই দরপতন শুরু হয়।

এরপর সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস বোরবার ২০১৭ সালের (জানুয়ারি-জুন) নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণায় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিষয়ে সতর্ক করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, ২০১০ সাল থেকে পুঁজিবাজারে বিরাজমান মন্দা থেকে বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়াটি যে নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সু্দৃঢ নিয়ন্ত্রণে থাকে এ বিষয়ে কার্যকর নজরদারি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। তা না হলে অতীতের মতো এবারও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে।

মূলধন বাজার নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশ সিকিউরিটি একচেঞ্জ কমিশন ইতোমধ্যেই সতর্কতামূলক উপদেশ জারি এবং বিনিয়োগকারীদের উন্নয়নে পদক্ষেপ নিয়েছে। স্পন্সরদের শেয়ার এবং উচ্চ প্রাইস আর্নিংস রেশিওধারী শেয়ারগুলোর বিপরীতে মার্জিন ঋণ যোগানোর ওপর বিধি নিষেধ আরোপের ও প্রয়োজন হতে পারে জানান তিনি।

ফজলে কবির বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে সতর্ক পদক্ষেপ হিসেবে ব্যাংকগুলোর ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপোর আইনে নির্দেশিত মাত্রায় সীমাবদ্ধ রাখার ব্যাপারে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের গ্রাহকদের নেওয়া বিভিন্ন ঋণ সঠিক খাতে ব্যবহার না হয়ে অস্বাভাবিক লাভের আশায় মূলধন বাজারে বিনিয়োগে যেন অপব্যবহার না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে।

গভর্ণরের বক্ত্যবের ফলে পুঁজিবাজারে ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় দরপতন হয়েছে। এদিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক কমেছে ১১৮ পয়েন্ট এবং পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক কমেছে ২৪৭ পয়েন্ট। পাশাপাশি কমেছে বাজার মূলধন ও বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মাচেন্ট ব্যাংকাস অ্যাসোসিয়শনের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ এ হাফিজ বাংলানিউজকে বলেন, পুঁজিবাজার তার নিজস্ব গতিতে চললে। এতে কেউ হস্তক্ষেপ করলে তার গতি হারিয়ে ফেলে, হিতের বিপরীতের চলে।

তিনি বলেন, ৭ বছর পর পুঁজিবাজারে উত্থান হয়েছে কিন্তু এই উত্থান নিয়ে বাজারে চলছে নানা গুজ্জন। নিয়ন্ত্রণ সংস্থাও নাকি শুনেছি ফোন করে এখন বিনিয়োগ না করতে বলে। এ কারণেই দরপতন অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৭
এমএফআই/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।