ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

পুঁজিবাজার থেকে ৯ কোম্পানির ৪শ’ কোটি টাকা উত্তোলন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১১ ঘণ্টা, জুলাই ৩, ২০১৭
পুঁজিবাজার থেকে ৯ কোম্পানির ৪শ’ কোটি টাকা উত্তোলন

ঢাকা: সদ্য বিদায়ী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিংয়ের (আইপিও) অর্থাৎ প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৩৯০ কোটি টাকা উত্তোলন করেছে নয়টি প্রতিষ্ঠান।

ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা যায়, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) অনুমোদন দেওয়ার পর ছয়টি কোম্পানি ও তিনটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে এই টাকা উত্তোলন করেছে।

কোম্পানিগুলো হলো- ইয়াকিন পলিমার, ফরচুন সুজ, প্যাসিফিক ডেনিমস, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, নূরানী ডাইং অ্যান্ড সোয়েটার, বিবিএস ক্যাবলস, ভানগার্ড এএমএল রূপালী ব্যাংক বল ফান্ড, সিএএমপি বিডিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও এসইএমএল আইবিবিএল শরীয়াহ ফান্ড।

এর মধ্যে বিবিএস ক্যাবল ছাড়া বাকি সব কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে।

নতুন করে এই টাকা যুক্ত হওয়ার পর আইপিও পরবর্তী এসব কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৫৪কোটি ৯৫ লাখ ৯ হাজার ৮৬০ টাকায়। বিনিয়োগকারীরা এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। ফলে ছয়টি কোম্পানির এক লট শেয়ার পেতে সর্বোচ্চ ৫৪ জন বিনিয়োগকারী আবেদন করেছেন।

অথচ এর আগের বছর ২০১৫-১৬ অর্থবছর একই সময়ে ১১টি প্রতিষ্ঠান ৮৫৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা উত্তোলন করেছে। এর মধ্যে নয়টি কোম্পানি আর দু’টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড।

বাজার সংশ্লিষ্টারা বলছেন, ২০১০ সালের পর ছোট-বড় অন্তত আরও ১০ বার ধস হয়েছে পুঁজিবাজারে। এসব ধসে নতুন করে হাজার হাজার বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু এসময়েও আইপিও’র বাজার ছিলো চাঙ্গা। এখান থেকে বিনিয়োগকারীরা উল্টো মুনাফা তুলেছেন হাজার হাজার কোটি টাকা।

তারা বলছেন, দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি), অর্থনীতি এবং বাজেটের আকার বৃদ্ধি অনুসারে পুঁজিবাজার বড় হচ্ছে না। তাই পুঁজিবাজারে ভারসাম্য রক্ষায় নতুন করে ভালো ভালো কোম্পানির তালিকাভুক্তি প্রয়োজন।

দেশের জিডিপির শতকরা ২০ শতাংশ অবদান রাখছে পুঁজিবাজার। অথচ পৃথিবীর অন্যান্য দেশে বাজারের অবদান জিডিপির ৭০-১২০ শতাংশ। এমনকি হংকং স্টক এক্সচেঞ্জের অবদান সেই দেশের জিডিপির ৪শ’ শতাংশ।

তাই দেশের অর্থনীতির এই অগ্রযাত্রায় অন্তত পক্ষে এক হাজার নতুন কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া প্রয়োজেন বলে মনে করেন সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাইফুর রহমান মজুমদার।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, দেশে কয়েক লাখ লিমিটেড কোম্পানি নিবন্ধিত রয়েছে। এর মধ্যে কয়েক হাজার বড় কোম্পানি রয়েছে, যেগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির সুযোগ রয়েছে। অথচ আমাদের বাজারে এখন মাত্র কয়েকশ কোম্পানি তালিকাভুক্ত আছে। যা দেশের অর্থনীতির তুলনায় একান্তই নগণ্য।

এমডি বলেন, বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত করতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। তার জন্য প্রয়োজন পুঁজি সঞ্চালনের। আর বিনা সুদে সেই পুঁজি সংগ্রহ করতে পারে পুঁজিবাজার থেকে। এতে কোম্পানি ও শেয়ারহোল্ডার উভয় ভালো মুনাফা।

তাই সরকারকে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদী স্থিতিশীলতা ও আস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা এবং কৌশল গ্রহণের আহ্বান জানান সাইফুর রহমান মজুমদার।

তার এই প্রস্তাবের সঙ্গে একমত পোষণ করেন ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কে এ এম মাজেদুর রহমানও। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ৭ শতাংশ জিডিপিতে পুঁজিবাজারের অবদান মাত্র ২০ শতাংশ। আগামী তিন বছর পর এই অবদান বেড়ে হবে ৫০ শতাংশ। এই লক্ষ্যে ডিএসই কাজ করছে।

মাজেদুর রহমান বলেন, আমরা এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পুঁজিবাজারে বেশকিছু ভালো কোম্পানি নিয়ে আসার চেষ্টা করবো। যেমন বিদেশি কিছু কোম্পানি আছে, বহুজাতিক কোম্পানি আছে, আমাদের লোকাল কর্পোরেট আছে। সেই কোম্পানিগুলো যখন আসবে তখন জিডিপিতে পুঁজিবাজারের অবদান ৫০ শতাংশ হবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১১ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০১৭
এমএফআই/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।