ঢাকা: বাবা-মায়ের ভালোবাসায় ভাগ বসানো নিয়ে ছোট বোন মিমের (৪) ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে কিশোর বড় ভাই আল আমিন সজীব (১৪)। বাবা-মা দুজনই ছোট বোনের সব আবদার পূরণ করলেও তাকে সবসময় মারধর করেন—এমন ধারণা থেকেই ঘুমন্ত ছোট বোনকে গলা টিপে খুন করে সজীব।
বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে বানানীর জামাই বাজার কড়াইল বস্তি থেকে শিশু মিমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ছায়াতদন্ত শুরু করে র্যাব-১। ঘটনার ১০ ঘণ্টার মধ্যেই বুধবার রাতে কড়াইল বস্তি থেকে নিহতের বড় ভাই আল আমিন সজীবকে আটক করেন র্যাব সদস্যরা।
জানা গেছে, নিহতের বাবা লিটন মিয়া প্রায় তিন বছর ধরে বর্তমান ঠিকানার সপরিবারে বসবাস করে আসছেন। তিনি বনানী এলাকায় পেয়ারা ও আমড়া বিক্রি করেন এবং তার স্ত্রী রূপসানা অন্যের বাসায় কাজ করেন। তাদের দুই সন্তান— ছেলে আল আমিন সজীব (১৪) এবং মেয়ে নিহত মিম (৪)।
প্রতি দিনের মতো বুধবার সকালে লিটন ও রুপসানা বাসার বাইরে কাজে চলে যান। পরে বাসায় ফিরে মেয়েকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করেতে থাকেন রূপসানা। সকাল ১০টায় বাসার কাছের একটি গোসলখানা থেকে মিমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আটক সজীবকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১ এর এএসপি মো. কামরুজ্জামান জানান, সে স্থানীয় আইডিয়াল স্কুলের ৫ম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। তার ভাষ্যমতে, ছোট বোন মিম জন্মের পর থেকে তার প্রতি বাবা-মায়ের ভালোবাসা কমতে থাকে। যত দিন যায় বাবা-মা তার প্রতি উদাসীন হয়ে পড়ে এবং সব ভালোবাসা মিমের দিকে চলে যায়। তার ওপর কারণে-অকারণে চলে বাবার নির্দয় প্রহার।
যার ফলে ছোট বোনের প্রতি তার ক্ষোভ জন্মাতে থাকে এবং সব কিছুর জন্য তাকে দায়ী করতে থাকে সজীব। প্রতি দিন বাসায় ফিরে তার বাবা আদর করে ছোট বোনকে বিভিন্ন কিছু খেতে দেন। বাবা-মা দুজনই তার ছোট বোনের সব আবদার পূরণ করলেও তার বেলায় বিপরীত ঘটনা ঘটে।
এএসপি কামরুজ্জামান জানান, কিশোর সজীব ছোট বোনকে বাবা-মায়ের চোখের আড়াল করার জন্য বিভিন্ন ফন্দি আটতে থাকে। যাতে সে আগের মতো আদর-ভালোবাসা পেতে পারে। বুধবার সকালে বাবা-মা বাসার বাইরে চলে গেলে ঘুমন্ত মিমকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তার লাশ পাশের গোসলখানায় রেখে আসে সজীব।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২০
পিএম/এমজেএফ