ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

বাঘা জার্মানির বিদায়, স্পেন ফাইনালে

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১১ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০১০
বাঘা জার্মানির বিদায়, স্পেন ফাইনালে

ডারবান: ইতিহাস গড়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে স্পেন। সেমিফাইনালে তিনবারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে ১-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বফুটবলে নতুন করে চেনালো নিজেদের।

স্পেনের পক্ষে জয়সূচক গোলটি করেন কার্লেস পুয়োল।

ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ নেদাল্যান্ডস। ১১ জুলাই জোহানেসবার্গের সকার সিটি স্টেডিয়ামে শিরোপা অভিযানে নামবে ইউরোপের এই দুই প্রতিপক্ষ। শিরোপা যাদের দখলেই যাক, নতুন চ্যাম্পিয়ন দেখবে বিশ্ব।

আরো একটি রেকর্ড হবে। এই প্রথমবারের মতো অন্য মহাদেশে শিরোপা জয়ের স্বাদ নেবে ইউরোপের দল। এর আগে জার্মানি, ইতালি, ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্স প্রত্যেকেই শিরোপা জিতেছে ইউরোপের বিশ্বকাপে।

শুরু থেকেই দাপটের সঙ্গে খেলে স্পেন। মোসেস মাভিদা স্টেডিয়ামে ফিরিয়ে আনে ২০০৮ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। দুরন্ত জার্মানিকে নতজানু করে ফেলে ‘লা রোজা’ বাহিনী। দেল বস্কের বেঁধে দেওয়া ছক মেনে একের পর এক আক্রমণ হানে।

পঞ্চম মিনিটে গোলবারের উদ্দেশ্যে ডান পায়ে জোড়ালো শট নিয়েছিলেন ডেভিড ভিয়া। কিন্তু বল গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই নিয়ন্ত্রণ নেন জার্মান গোলরক্ষক মানুয়েল নিউয়ের।

প্রথমার্ধেই এগিয়ে যেতে পারতো স্পেন। ১৪ মিনিটের কর্নার বলে হেড নিয়েছিলেন পুয়োল। গোলপোস্টের ভেতরেই ছিলো বল। এবারো গোলরক্ষকের কল্যাণে বেঁচে যায় জার্মানি।
 
ইউরোপের পাওয়ার-হাউস খ্যাত জার্মানরা প্রথমবার সম্ভাবনা জাগায় ৩২ মিনিটে। পিওটর ট্রোকোভস্কির বাঁ পায়ে শট গোলবারের কাছ দিয়ে বেরিয়ে যায়। নিরাপদে দম ফেলেন গোলরক্ষক ইকার ক্যাসিয়াস।  

প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে মাঝমাঠ দিয়ে স্পেনের বিপদসীমায় ঢুকে পড়েছিলেন মেসুত অজিল। বক্সের ভেতরে তাঁকে ফেলে দিলেও এড়িয়ে যান রেফারি। বল একটু পেছনে থাকায় বোধহয় এমন সিদ্ধান্ত নেন। তার একটু আগেই স্পেনের পেদ্রোর শট ছিলো জার্মানদের গোলপোস্টে। বিরতিতে যাওয়ার আগে অন্তত সাতবার গোলে কিক নেয় স্পেন। সেখানে জার্মানরা একটি শটেই সীমাবদ্ধ থাকে।  

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই মাঠ দাপিয়েছে লা রোজারা। বেশ কয়েকবার দূরপাল্লার শটে নিশানাভেদের চেষ্টাও করে। ৪৯ ও ৫০ মিনিটে পর পর দু’বার গোলবার উদ্দেশ্য করে জোড়ালো শট নিয়েছিলেন জাভি আলোন্স। তবে একবারও বল গোলবারের ভেতরে রাখতে পারেননি।

অল্পের জন্য গোল বঞ্চিত হয় স্পেন। খেলার তখন ৫৮ মিনিট। বক্সের ভেতর থেকে ইনিয়েস্তার ব্যাক পাস বলে গোলে শট নেন পেদ্রো। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে বিপদ মুক্ত করেন মানুয়েল নিউয়ের। ফিরতি বল পেয়ে বাম দিক দিয়ে ডগরান করে মাইনাস করেছিলেন স্প্যানিশ ফরওয়ার্ড। কিন্তু ডান দিকে ডেভিড ভিয়া পা লাগাতে না পারায় বল চলে যায় বাইরে।

লা রোজারদের চাপের মুখে হাঁপিয়ে ওঠে জার্মানরা। প্রতিপক্ষের আক্রমণ থামাতে গিয়ে গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারছিলো না। ৬২ মিনিটে গিয়ে মিরোস্লাভ কোসা গোলবারে শট নিয়ে ইকার ক্যাসিয়াসের প্রতিরোধের মুখে পড়েন। এর আট মিনিট পরই চমৎকার সুযোগ পান টনি ক্রুস। বিধিবাম, এবারও বলের সামনে এসে হাজির স্প্যানিশ গোলরক্ষক ইকার ক্যাসিয়াস। বামদিকে ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে তা প্রতিহত করেন।

৭৩ মিনিট সময়টাকে অনেকদিন মনে রাখবে জার্মানরা। স্প্যানিশরাও ভুলবে না। আচমকা গোল পেয়ে ১-০’তে এগিয়ে যায় স্পেন। আলোন্সর কর্নার থেকে ভেসে আসা বলে হেডে নিশানা ভেদ করেন পুয়োল।

খেলার তখনো ১৭ মিনিট বাকি। একাধিক গোল আদায় করে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট সময়। কিন্তু জার্মানদের স্বরূপে দেখা যায়নি। উল্টো খোলসবন্দি হয়ে পড়ায়, ধীরেই এগিয়ে যায় পরাজয়ের দিকে। শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে মুষড়ে পড়েন জার্মানরা। বিজয়ের হাসি হেসে বীরের বেশে মাঠ ছাড়েন দেল বস্কের ফুটবল সৈনিকরা। কারণ তারা বিজয়ী।

জার্মানদের ভাগ্য এমনই হওয়ার কথা। একদিন আগেই তো অ্যাকুরিয়েমের অক্টোপাস ভাগ্য গণনা করে দিয়েছিলো। হারবে জার্মানি! মিথ্যে তো হয়নি!   

এনিয়ে ১৩ বার বিশ্বকাপে খেলে প্রথম ফাইনালে মুখ দেখলো স্পেন।  

বাংলাদেশ সময়: ০১৫৯ ঘন্টা, জুলাই ০৮, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।