প্যারিস: বীরের বেশে দেশে ফিরলেন স্প্যানিশ ফুটবলাররা। জাতির কাছে পেলেন প্রকৃত বীরের সম্মান।
লাখ লাখ স্প্যানিশ জয়ধ্বনি দিয়েছেন খেলোয়াড়দের। জানিয়েছেন আন্তরিক অভিনন্দন। একমাত্র গোলের নায়ক আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা পেয়েছেন বাড়তি সম্মান। পাবেনই তো! কারণ তাঁর গোলেই ফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়েছে লা রোজারা। যে কারণে বিশ্বকাপ শিরোপা আজ স্পেনে।
সোমবার বাংলাদেশ সময় সন্ধা ছয়টা দিকে মাদ্রিদ বিমানবন্দরে পৌঁছায় বিশ্বকাপ জয়ীরা। সোনার ট্রফি হাতে বিমানের গেট দিয়ে বেরিয়ে আসেন অধিনায়ক ইকার ক্যাসিয়াস। সঙ্গে ছিলেন কোচ দেল বস্ক। উঁচুতে তুলে ধরা হয় শিরোপা।
উচ্ছ্বাস আর চেপে রাখতে পারেনি উপস্থিত জনতা। কত অপেক্ষা এই দিনটির জন্য। কত শ্রম-ঘাম আর প্রাণান্তকার চেষ্টার পরই না ধরা দিয়েছে বিশ্বকাপ শিরোপা। এমন ক্ষণে আনন্দ ছাড়া অন্য কিছু ভাবা অন্যায়। স্প্যানিশরা ভাবেনি, ভাবছেও না। তারা সাফল্য উদযাপন করছে খেলোয়াড়দেরকে সঙ্গে নিয়ে।
বিশ্বযুদ্ধ জয় করে বীর সন্তানরা দেশে ফেরার দিনে ঘরে মন টেকেনি ছেলো বুড়ো কারোই। বেরিয়ে এসেছেন রাজ পথে। স্লোগান দিতে। সরকার পতনে নয়! বেকার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আন্দোলনে নামেননি। তারা এসেছেন একদল ফুটবল সৈনিককে বরণ করে নিতে। তাদের স্লোগানে ছিলো অভিনন্দন বার্তা। মুখের ভাষা ছিলো দেল বস্ক এবং তাঁর শীষ্যদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের।
বিমানবন্দর থেকে সোজা রাষ্ট্রপতির প্রাসাদে ছুটে গেছেন খেলোয়াড়রা। ছাদ খোলা টুরিস্ট বাসে চেপে এগিয়েছেন। রাস্তার দুই পাশে অপেক্ষমান মানুষ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে দু’চোখ ভরে দেখেছেন দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। প্রধানমন্ত্রী হোসে লুইস রদ্রিগুয়েস জাপাতেরোর সঙ্গে দেখা হয়েছে তাঁদের।
সন্ধ্যায় ভিক্টোরি প্যারেড স্কয়ারে আনুষ্ঠানিক সম্বর্ধনা দেওয়া হবে। আশা করা হচ্ছে লাখ লাখ মানুষ সমবেত হবেন অনুষ্ঠানে। লাখ লাখ মানে দু’এক লাখ নয়। দশ, বিশ, ত্রিশ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
কারণ বিশ্বকাপের সাফল্য ঘিরে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন স্প্যানিশরা। অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্ন। বেকার সমস্যা থেকে মুক্তি। স্পেনের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ বেকার হয়ে আছেন। আশা করা হচ্ছে বিশ্বকাপ জেতায় অর্থনৈতিক মন্দা কেটে যাবে।
স্পেনের সাফল্য শুরু হয়েছিলো ২০০৮ সালে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে। ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে। আরো অনেকটা পথই হয়তো এগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময় ১০১০ ঘন্টা, জুলাই ১২, ২০১০