ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

খেলা

দূরের স্বপ্ন দেখেন আমের

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪২ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১০
দূরের স্বপ্ন দেখেন আমের

লন্ডন: ছিপ ছিপে গড়ন। কিন্তু বোলিংয়ের সময় খুব বেশি জোর খাটান না।

এককথায় কৌশলী বোলার। সুইংয়ের মিশেল। ব্যাটসম্যানদের ধোঁকা দিতে কখনো ভেতরে, কখনো বাইরে সুইং দেন। সিমার মোহাম্মদ আমেরের কথাই বলা হচ্ছে। পাকিস্তানি এ টিনেজ বোলিং সেনসেশন এরই মধ্যে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন। স্বপ্ন দেখছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারকে অনেক দূর নিয়ে যাওয়ার।  

অনেক অনেক বছর পর পাকিস্তান যে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে তার রূপকার বলতে হয় আমেরকে। অসাধারণ বোলিং দিয়ে হেডেংলি টেস্টে শুধু সাতটি উইকেটই শিকার করেননি। এ তরুণের কল্যাণেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দীর্ঘ ১৫ বছরের ব্যর্থতা ঘোঁচাতে পেরেছে পাকিস্তান। সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে আমেরকে দেওয়া হয়েছে ম্যাচ সেরার পুরস্কার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হেডেংলি টেস্টের সাফল্যকে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরু হিসেবে দেখছেন আমের।

১৮ বছর বয়সী এ তরুণ ১১ উইকেট শিকার করেছেন দুই টেস্ট থেকে। যার মধ্যে তিন উইকেট নিয়েছেন ২০ রান খরচায়। দ্বিতীয় ইনিংসে চার উইকেট পান ৮৬ রানে। যে ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে তিন উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান। সেই সঙ্গে দীর্ঘ ১৫ বছরের অপেক্ষার অবসান।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে ম্যাচ সেরা হওয়ার পর ১৮ বছর বয়সী পাকিস্তানি সিমার বলেছেন,“স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। কারণ আমি সবসময় চাই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভালো করতে। ”

১০৬ রান দিয়ে সাত উইকেট শিকারী আমের বলেন,“আমার পা মাটিতে রাখতে হবে। সব সময় মনে রাখতে হবে সবে শুরু হলো আমার পথ চলা। ” ১০ টেস্টে এটিই তার ক্যারিয়ার সেরা পারফরমেন্স।
 
গত ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়া সফরে ৭৯ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট শিকার করেছিলেন। নানা কারণেই অস্ট্রেলিয়া সফরটা তার মনের মতো হয়নি। এবার লর্ডসে প্রথম টেস্টেও আশানুরূপ বোলিং হয়নি। ৪ উইকেট পেয়েছেন ৭২ রান দিয়ে। তারপরেও ওয়াসিম আকরামের প্রশংসা কুড়িয়েছেন তরুণ আমের। আকরাম বলেছেন, “১৮ বছর বয়সে আমি যা করতে পারতাম তারচেয়েও ভালো বোলিং করে আমের। ”

ইসলামাবাদের ৩০ কিলোমিটার দূরে ছোট শহর গুজ্জার খান থেকে উঠে এসেছেন তরুণ আমের। ২০০৯ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে আর্šÍজাতিক ক্রিকেটে অভিষেক। মফস্বল থেকে এ বাঁহাতিকে তুলে এনেছেন পাকিস্তানের আরেক বিখ্যাত বাঁহাতি পেসার জীবন্ত কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরাম। সর্বকালের অন্যতম সেরা বাঁহাতি পেসারের প্রশংসা তার জন্য প্রেরণা হিসেবেই কাজ করার কথা।

তেমনটাই বলছিলেন আমের,“আমি ওয়াসিম আকরামের ধারে কাছেও নেই। তাঁর মতো হতে হলে আমাকে অনেক দূর যেতে হবে। কিন্তু তিনি আমাকে নিয়ে যে কথা বলেছেন তা অবশ্যই সাফল্য পেতে উজ্জীবিত করবে। ”

আউট সুইং দিয়ে অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ককে যেভাবে কটবিহাইন্ড বানিয়েছেন আমের তার প্রশংসা না করে পারেননি অসি অধিনায়ক। ১৮ বছরের আমের দৃষ্টিতে পন্টিংয়ের আউটটি ছিলো ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার। তার মতে,“রিকি পন্টিংয়ের আউটটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। কারণ অসি অধিনায়ক আমাদের হাত থেকে ম্যাচ বের করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ”

আমেরের গুণের প্রশংসা পন্টিংয়ের মুখে,“আমার মনে হয় শুধু ভালো পেসই নয়, বল সুইং করানোর দারুণ ক্ষমতা রাখেন পাকিস্তানি আমের। আমি নিশ্চিত সে খেলা নিয়ে খুবই ভাবে এবং যার প্রভাব মাঠে থাকে। বয়সের তুলনায় সে অনেক বেশি গতিতে বল করে। ”

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বৃহস্পতিবার থেকে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে পাকিস্তান দল কিছুটা হলেও ঘুড়ে দাঁড়াতে পেরেছে বলে মনে করেন আমের। বলেন,“আমাদেরকে এখনো চারটি টেস্ট খেলতে হবে। অতএব এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে আমাকে ফর্ম ধরে রাখতে হবে। আমার বিশ্বাস অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে ইংল্যান্ড অনেক বেশি কঠিন প্রতিপক্ষ হবে। কারণ পিচ সম্পর্কে তারাই ভাল জানবে। ”

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৪ ঘন্টা, জুলাই ২৫, ২০১০


বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।