ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

বিসিবির কাছে উপেক্ষিত তামিম

সেকান্দার আলী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১০
বিসিবির কাছে উপেক্ষিত তামিম

ঢাকা: বাঁহাতের কব্জির ঠিক নিচে ম্যাটাকার্পালের হাড় উঁচু হয়ে আছে। ব্যাটিংয়ের সময় যন্ত্রণা হয়।

তামিম ইকবালের মনের মধ্যে সবসময় খচখচানি থাকে, এই বুঝি হাড়টা ভেঙ্গে আলাদা হয়ে যায়।

জাতীয় দলের নির্ভরযোগ্য এই ব্যাটসম্যান সোমবার পেসার রুবেল হোসেনকে নিয়ে অনুশীলন করছিলেন। নিজে থেকেই ক্রিকেটের চর্চাটা চালিয়ে যাচ্ছেন তামিম। সব কিছুই ঠিকঠাক করছেন। তার মাঝেও একটি শঙ্কা তাড়িয়ে বেড়ায় তাকে। বিশ্বকাপের আগে যদি কোন অঘটন ঘটে! যদি দেশের মাঠে ২০১১ সালের বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ না হয়!

মানসিক এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে বাঁহাতটা একটু দেখিয়ে আসতে চান তামিম ইকবাল। পরীক্ষা করে দেখার পর চিকিৎসক অভয় দিলে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবেন। আর অস্ত্রোপচার করাতে হলে এখনই মোক্ষম সময় মনে করেন জাতীয় দলের উদ্বোধনী এই ব্যাটসম্যান।

বিসিবির কাছে তাই অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার বায়না ধরেছেন তামিম। ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগে মৌখিক আবেদনও জানিয়েছেন। অথচ আশানুরূপ সাড়া মেলেনি। বোর্ডের ওপর তাই একটু বিরক্তই মারকাটারি এই ব্যাটসম্যান। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলছিলেন,“এখন চিকিৎসার জন্য আমাকে অস্ট্রেলিয়া পাঠাচ্ছে না। অথচ এটাই ছিলো উপযুক্ত সময়। অপারেশন করাতে হলে বিশ্বকাপের আগে পুরো সুস্থ হয়ে যেতাম। কিন্তু আমার কথা কেউ শুনছেই না। ”

২০০৯ সালের নভেম্বরে ভারতের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ের সময় হাঁতে চোট পান তামিম। পরীক্ষা করে দেখা যায় বাঁহাতের ম্যাটাকার্পালের হাড়ে চিড় ধরেছে। সেই থেকে ভুগছেন এই বাঁহাতি। আন্তর্জাতিক ব্যস্ত সূচির কারণে কোন সময়ই পুরো সুস্থ থেকে খেলতে পারেননি। এই তো এবছর মে-জুন মাসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডস টেস্ট খেলা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছিলো। শেষ পর্যন্ত কোচ জেমি সিডন্স এবং অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের (সাবেক) কল্যাণে টেস্ট খেলেন তামিম।

পেছন থেকে ভয় কিন্তু তাড়িয়ে নিয়েছে তামিমকে। যদিও জাতীয় দলের অস্ট্রেলিয়ান ফিজিও মাইকেল হেনরি প্রতিনিয়তই বলে এসেছেন তামিমের হাতে কোন সমস্যা নেই। সোমবারও বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বললেন,“তামিমের হাড়ে কোন সমস্যা নেই। ব্যাটিংয়ে কোন সমস্যা হবে না। অপারেশনেরও প্রয়োজন হবে না। ”

ফিজিওর কথার ওপর ভরসা রাখতে পারছেন না তামিম। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন,“যদি সমস্যাই না থাকবে তবে হাতের হাড় উঁচু থাকবে কেন? ব্যাথাই বা হবে কেন?”

হাত দুটি সামনে প্রসারিত করে ধরেন তামিম। এরপর পরখ করে দেখার জন্য অনুরোধ করেন। বাঁহাতের ম্যাটাকার্পালের উঁচু জায়গাটি স্পষ্ট বোঝা যায়।

অভিমানের সুরে বলেন,“বিশ্বকাপে খারাপ খেললে তখন সবাই বলবে বাহানা তৈরি করছি। হাতে যে চোট আছে সেটা নিয়ে কারো ভাবনা থাকবে না। ”

জাতীয় দলের নির্ভরযোগ্য ওই ব্যাটসম্যানের অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা কমিটির প্রধান এনায়েত হোসেন সিরাজ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে জানান,“প্রধান কোচ জেমি সিডন্স এবং ফিজিও মাইকেল হেনরি যদি মনে করে তামিমের অস্ট্রেলিয়া চিকিৎসার জন্য পাঠানো দরকার তবে অবশ্যই পাঠাবো। সে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। তার সমস্যা গুরুত্বসহকারেই দেখা হবে। ”

জেমি সিডন্স ছুটি কাটাতে দেশে আছেন (অস্ট্রেলিয়া)। ফিজিও মাইকেল হেনরি ছুটি কাটিয়ে ফিরে এসেছেন। জেমি ফিরলেই একটা সিদ্ধান্ত হবে সে আশাতে আরো কয়েকটি দিন অপেক্ষায় থাকতে হবে তামিমকে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৯ ঘন্টা, আগস্ট ১৬, ২০১০

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।