মিলান (ইতালি) থেকে: কোন কাউন্টার থেকে বোর্ডিং পাস নিতে হবে, কোথায় সিকিউরিটি, চেকিং, কতো কেজি মালামাল কার্গো হোল্ডে দিতে হবে, হাতে কতো কেজি বহন করা যাবে প্রভৃতি বিষয়গুলো দেশে ফেরা বাংলাদেশি প্রবাসীদের আন্তরিকতার সঙ্গে বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন আলিম উল্লাহ সরকার রকেট (৪৬)।
বোর্ডিং ডোর খুলে দিয়েছে।
রকেটের গতিতেই এগিয়ে আসেন আলিম উল্লাহ সরকার রকেট। কোনো মালামালই যেনো রেখে যেতে না হয়, এজন্য দ্রুততার সঙ্গে ল্যাগেজ থেকে কিছু মালামাল সরিয়ে হাতে নেওয়ার মতোই ব্যবস্থা করে দেন।
আর এভাবেই ইতালির মিলানে মালপেন্সা এয়ারপোর্টে বাংলাদেশিদের নিঃস্বার্থ সেবা দিয়ে আসছেন রকেট।
আলিম উল্লাহ ব্যস্ততম এ বিমানবন্দরে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। প্রবাসীদের আসা-যাওয়ার সময় দেখা হয় তার সঙ্গে। নিজের সবটুকু ঢেলে দিয়ে তাদের সেবায় নিয়োজিত করেন নিজেকে। ঢাকার সাভারের দক্ষিণপাড়ার শরাফত উল্লাহর ছেলে রকেট ২০০২ সালে পাড়ি জমান এদেশে।
শ্বশুরবাড়ির স্বজনদের সুবাদে ফ্যামেলি ভিসায় চলে আসেন ইতালিতে। এরপর থেকেই আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে উড়োজাহাজে এ শহরের প্রবেশ আর গমনের পথ মালপেন্সা এয়ারপোর্টে কাজ করছেন তিনি।
দুই কন্যার জনক রকেটের বড় মেয়ে সরকার ব্রাসিয়ানা দুলারী (২১) ডিপ্লোমা করেছেন ইতালি থেকেই। আর স্ত্রীসহ ছোটমেয়ে সরকার লুনা (১১) থাকেন যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে।
রকেট বাংলানিউজকে বলেন, যখন এ বিমানবন্দর দিয়ে স্বদেশের কোনো প্রবাসী ফিরে যায়, তখন বুকের মধ্যে হু হু করে। মনটা ছুটে যায় দেশে। কিন্তু কর্তব্য-কর্মের বাঁধায় থাকতে হয় এখানে।
তবে এভাবে আর বেশিদিন সেবা দিতে পারবেন না প্রবাসীদের রকেট। বলেন, আমি স্ত্রীর সঙ্গেই স্থায়ী হচ্ছি যুক্তরাজ্যে। আগামী সেপ্টেম্বরে আমিও চলে যাবো সেখানে।
পরোপকারী এ প্রবাসবন্ধু না থাকলেও প্রবাসীদের প্রতি আন্তরিকতার পরশ মাখানো স্মৃতিগুলো নিশ্চয় থেকে যাবে। মালপেন্সা এয়ারপোর্টই অনেক স্মৃতি মনে করিয়ে দেবে প্রবাসীদের।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৩ ঘণ্টা, মে ০২, ২০১৬
এসএনএস