ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা

পাতায়াকে ছাড়িয়ে যেতে পারে কক্সবাজার

রমেন দাশগুপ্ত, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫০ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৬
পাতায়াকে ছাড়িয়ে যেতে পারে কক্সবাজার ছবি: সোহেল সরওয়ার-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

পাতায়া সিটি (থাইল্যান্ড) থেকে: সাগরের ঢেউ আছড়ে পড়ছে পাহাড়ে। পরিচ্ছন্ন সাগর তীর।

মধ্য দুপুরের কড়া রোদে হীরক খন্ডের মতো চিক চিক করছে বালিয়াড়ি। কেউ সূর্যস্নানে, কেউ আবার সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে জলকেলিতে মগ্ন।

এ দৃশ্য থাইল্যান্ডের সমুদ্র নগর পাতায়ার। পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনায় ৩৪ কিলোমিটারের ছোট্ট এ দরিয়া নগর হয়ে উঠেছে থাইল্যান্ডের এক টুকরো হীরক খণ্ড।

সুবজ পাহাড় থেকে নেমে এসেছে ঝর্ণা ধারা। হাজার ফুট থেকে নেমে আসা পানির ঝিরিঝিরি সুর।   কোকিলের কুহু কুহু ডাক, পাখির কলতান।   সাগরের নীল জলরাশি।

ঝর্ণা ধারা এসে মিশেছে সাগরের নীল ঝলরাশিতে। সাগর তীরে রোদ্র স্নান করতে করতে উপভোগ করতে পারেন সবুজের সমারোহ, পাখির কুহুতান, ঝর্ণার ঝিরিঝিরি। রয়েছে কয়েক’শ প্রজাতির জীব বৈচিত্র্য। সমুদ্রের বালিয়াড়িতে লাল কাকড়ার সুনিপুন আল্পনা।

এ দৃশ্য ১২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের। অপরিকল্পিত নগরায়ন ও অব্যবস্থাপনায় যেটি পরিণত হচ্ছে জঞ্জালের নগরীতে।
 
ঢাকায় বসবাসরত চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার কড়লডেঙ্গা গ্রামের সন্তান সজল চৌধুরী পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসেছেন ব্যাংককে।

ব্যাংককের একটি রেস্তোরাঁয় বসে বাংলানিউজের কাছে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘পাহাড়, নদী ও সাগরের এক মহামিলন চট্টগ্রামে। রয়েছে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও।   কক্সবাজারে আছে বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত। অথচ ডলার খরচ করে আমাদের সমুদ্র দেখতে আসতে হয় থাইল্যান্ডে। আমাদের দেশের নেতারাতো নিজেদের আখের গুছাতে ব্যস্ত। এসব নিয়ে ভাবার সময় কই তাদের। ’

‘একটু পরিকল্পনা নিয়ে গড়ে তুললে কক্সবাজার পাতায়াকে ছাড়িয়ে যেতো। কারণ কক্সবাজারে যা আছে তা পাতায়ায় নেই। অথচ প্রশাসনের নাকের ডগায় কক্সবাজারের বালিয়াড়ি পর্যন্ত দখল করে হোটেল গড়ে তোলা হচ্ছে। ’

ঢাকার যাত্রাবাড়ীর ছেলে মোহাম্মদ মামুন। দীর্ঘদিন ছিলেন কক্সবাজারের টেকনাফে।   এখন ব্যাংককের বিখ্যাত রাঁধুনী রেস্টুরেন্টের প্রধান শেফ।  

তার রান্না করা সুস্বাদু খাবার খেতে বাংলাদেশি, ভারতীয়, পাকিস্তানিদের পাশাপাশি ছুটে আসেন স্বয়ং থাইল্যান্ডের বাসিন্দারাও।   বাংলাদেশ থেকে এসেছি শুনে আক্ষেপ ঝরে পড়লো মুখে।

আফসোস করে বললেন,‘শুধু টেকনাফে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের যে অপার সম্ভাবনা রয়েছে তা থাইল্যান্ডের কোনো সমুদ্র সৈকতে নেই।

পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলায় প্রতিদিন হাজার পর্যটক থাইল্যান্ড দেখতে আসে আর পরিকল্পনার অভাবে সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পর্যটক হারাচ্ছে বাংলাদেশ।   পরিকল্পিত পর্যটন স্পট গড়ে তোলা হলে আমাদেরকে কি এখানে এসে চাকরি করতে হয়?

বাংলাদেশ সময়: ২০৪১ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৬
আরডিজি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।