গ্রিন টি, লেমন টি, অর্গানিক টি, রোজ টি, অরেঞ্জ টি, পাইনঅ্যাপল টি, তুলসী টি, পিওর নেপাল টি, মাসালা টি, ইলম ব্ল্যাক টি, হোয়াইট টি, স্ট্রবেরি টি, দার্জিলিং টি, আসাম টি, লেমনগ্রাস টি, সিনামন টি, আমলা টি, মিন্ট টিসহ বিচিত্র পদের চা দেখা গেছে দোকানে। এ ছাড়া কিছু স্পেশাল দোকানে স্টিলের কৌটায় ভরা খোলা চা-পাতাও বিক্রি হয়।
পোখারার লেকসাইডের কর্নার টি অ্যান্ড ন্যাচারাল শপের একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, নেপালের পূর্বাঞ্চলে ভারতের দার্জিলিং সংলগ্ন ইলমে প্রচুর উন্নতমানের চা উৎপাদন হয়। কানিয়াম সেখানকার সবচেয়ে বড় চা-বাগান। সেখানে অর্গানিক চা হয়ে থাকে। যার বেশিরভাগই রপ্তানি হয় ইউরোপে। ইলমের প্রথম চা-বাগানটি এখনও হেরিটেজ হিসেবে সংরক্ষিত আছে।
তিনি জানান, কাপড়ের সুদৃশ্য থলে, চা-গাছের সাদা কাঠের বাক্স, কিংবা কারুকার্য খোদাই করা শৈল্পিক কাঠের বাক্সে উন্নতমানের চা প্যাকেট করে পর্যটকদের কাছে বিক্রি করা হয়। বাক্সের আকার, চা’র পরিমাণ ও মান ভেদে নেপালি রুপিতে ২০০ থেকে ১০ হাজার রুপিতে পর্যটকরা একেকটি চার থলে বা কৌটা কিনতে পারেন। এ ছাড়া খোলা চা পাতার মধ্যে প্রতিকেজি ৩০০ রুপি থেকে ১৫ হাজার টাকা দামের চা পাতা বিক্রি হয় নেপালের চায়ের স্টলগুলোতে।
কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে রোববার (১২ মার্চ) বিকেলে ফ্লাইটে ওঠার জন্য অপেক্ষা করছিলেন বাংলাদেশ থেকে বেড়াতে আসা কামাল আহমেদ। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ডিউটি ফ্রি শপে দেখলাম বিদেশি পর্যটকেরা প্রচুর নেপালি চা কিনছেন। এত সুন্দর বাক্স দেখলেই হাত বাড়াতে ইচ্ছে করে, মন ভরে যায়। আমি ৭০০ রুপিতে সুদৃশ্য কারুকাজ করা একটি কাঠের বাক্সে ভরা তিনটি ফ্লেভারের চা কিনলাম। চা’র স্বাদ কেমন হবে জানি না। তবে বাক্সটিতে মূল্যবান গহনা রাখা যাবে।
নেপালের মতো বাংলাদেশেও বিদেশি পর্যটকের আনাগোনা বাড়লে সুদৃশ্য মোড়কে কিংবা কাঠের কারুকার্যখচিত বাক্সে চা বাজারজাত সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন কাপ্তাইয়ের ওয়াগ্গা টি এস্টেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ‘চা দেশে দেশে’ বইয়ের লেখক আমিনুর রশীদ কাদেরী।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, টুরিস্টরা ১০ টাকার জিনিস ১০০ টাকায় কিনে থাকে। নেপালে মাউন্ট এভারেস্ট দর্শনে আসা পর্যটকেরা স্মারক হিসেবে প্রচুর চা নিয়ে যান। উঁচু জায়গায় চা চাষ করা হয় বলে নেপালি চায়ের ফ্লেভার ভালো। সবচেয়ে বড় কথা, এত সুন্দর মোড়কে, বাক্সে উপস্থাপন করা হয় পর্যটকরা নিতে দ্বিধা করেন না।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাংলাদেশেও যদি বিদেশি পর্যটকদের ঢল নামে তবে নেপাল, দার্জিলিংয়ের মতো এখানেও পর্যটন কেন্দ্র, বিমানবন্দর, স্থলবন্দরের দোকানে, উন্নত শপিং মলে কাঠের বাক্সে আমাদের দেশের উন্নতমানের চা বাজারজাত করা সম্ভব। তবে দাম বেশি হবে। এটি হলে বাংলাদেশের চায়ের সুনাম বিশ্বের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়বে।
** পর্যটনে নেপালকে ছাড়াতে পারবে বাংলাদেশ, যদি...
** 'সম্প্রীতির শহরে অস্থির রাজনীতি, তবুও পর্যটক টানছে নেপাল'
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৭
এআর/টিসি/জেডএম