ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

লাউয়াছড়ায় ১৫ হেক্টরের মধ্যেই দর্শনার্থী সীমাবদ্ধ

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৬
লাউয়াছড়ায় ১৫ হেক্টরের মধ্যেই দর্শনার্থী সীমাবদ্ধ ছবি: শুভ্রনীল সাগর

লাউয়াছড়া (শ্রীমঙ্গল) থেকে: শ্রীমঙ্গল শ্রীমণ্ডিত (সৌন্দর্যপূর্ণ) বনভূমি। বিশেষ করে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান।

এখানে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা ঘুরতে আসেন। স্বচক্ষে বিভিন্ন বন্যপ্রাণি দেখে নিয়ে যান মুগ্ধতা।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার ও অসংখ্য প্রজাতির জীববৈচিত্র্যে আবাসস্থল লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান তথা লাউছড়া বন। এ বন ভানুগাছ রির্জাভ ফরেস্টের অংশ।

বনের গহীনে যেতে অনেকে ভয়ে পান। বেশিরভাগ দর্শনার্থী লাউয়াছড়া বন বিভাগের রেস্ট হাউজ পর্যন্ত গিয়ে ফিরে আসেন। অনেকে আবার এই রেস্ট হাইজের পেছনের ট্রেইল ওয়ে দিয়ে হেঁটে বেড়ান। কেউবা আবার ঘুরতে-ঘুরতে চলে যান রেস্ট হাউজের পাশ দিয়েই খাসিয়াপুঞ্জি এলাকা। মুগ্ধতার রেশ নিয়ে আরও বেশি বন্যপ্রাণি দেখতে কেউবা আবার পৌঁছে যান জানকিছড়া।

যারা বন্যপ্রাণি নিয়ে গবেষণা করেন বা ভালোবাসেন তারা গহীন বনের ভেতরেই বিচরণ করতে পছন্দ করেন। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের আয়তন ১২৫০ হেক্টর। এরমধ্যে পর্যটকবান্ধব এরিয়া মাত্র ১৫ হেক্টর এলাকা।

বন্যপ্রাণি রক্ষা ও জাতীয় উদ্যানের সৌন্দর্য ধরে রাখতেই পর্যটকদের বিচরণ বাড়াতে নারাজ বন কর্মকর্তারা।

সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও-বন্যপ্রাণি ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ) মিহির কুমার দো জানান, ওয়াইল্ড লাইফের জন্য আমরা পর্যটন এলাকা বাড়াতে চাই না। আমরা চাই বন্যপ্রাণিকে অবাধ ও স্বাধীনতা দিতে। যে ১৫ হেক্টর জায়গায় পর্যটকরা ঘোরাঘুরি করেন, এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকুক। এর বাইরে ঘুরবার সুযোগ দিলে বন্যপ্রাণির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। দেওয়া ঠিকও হবে না।

জানকিছড়া পর্যটকদের জন্য নিষিদ্ধ করার পক্ষে এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, জানকিছড়া এলাকায় বেশি বন্যপ্রাণি থাকে, তাই এই এলাকায় মানুষের পদচারণা যতো কম হবে ততোই ভালো।


 
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার কমলগঞ্জ, রহিমপুর ও মাধবপুর এই তিনটি ইউনিয়ন এবং শ্রীমঙ্গল উপজেলার শ্রীমঙ্গল ও কালামপুর ইউনিয়নের মধ্যবর্তী অংশে এই সংরক্ষিত বনের অবস্থান। বনটি শ্রীমঙ্গল উপজেলা সদর ও কমলগঞ্জ উপজেলা সদরের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। ১৯৯৬ সালে সরকারি গেজেটের মাধ্যমে এই বনকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করা হয়।

লাউয়াছড়া চিরহরিৎ ও মিশ্র চিরহরিৎ ধরনের বন। এখানে বড়-বড় বৃক্ষ গুল্ম, ঝোপঝাড়, বাঁশ, বেতসহ বিভিন্ন লতাগুচ্ছ দেখা যায়। এই উদ্যানে প্রায় ১৬৭ প্রজাতির বৃক্ষ, চার প্রজাতির উভচরপ্রাণি, ছয় প্রজাতির সরীসৃপ, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী ও ২৪৬ প্রজাতির পাখিসহ শতাধিক প্রজাতির প্রজাপতি ও কীটপতঙ্গ রয়েছে। সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্যের এক অপরূপ আধার এই লাউয়াছড়া বন।

আরও পড়ুন..

লাউয়াছড়ায় অর্থকরী ফসলের আত্মকথা

নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন মিহির কুমার দো

বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৬
এসএম/টিআই/এসএনএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ