বিছানাকান্দি (সিলেট) থেকে: পানকৌড়ি যেভাবে পানিতে ডুব দিয়ে শিকার ধরে ঠিক তেমনই পানির ভেতর মাথা ডুবিয়ে ঘাস খাচ্ছে মহিষ। এমন দৃশ্য চোখে পড়ে বিছানাকান্দি যাওয়ার পথে তোয়াকুল নামক স্থানে।
এক পাল মহিষ বুক ডোবা পানির মধ্যে ডুবে ডুবে খাবার খাচ্ছে। দূর থেকে যখন মাথা দেখা যাচ্ছিল না তখন মনে হচ্ছিল মহিষগুলো মারা গেছে!
এমন দৃশ্য দেখে পর্যটকরা তাজ্জব হয়ে দাঁড়িয়ে যান। আসলে মহিষগুলো জীবিত নাকি মৃত। মিনিটের মধ্যেই সবাইকে অবাক করে দিয়ে মাথা তোলে মহিষ। তখন দেখা যায় মুখ ভর্তি কাঁচা ঘাস চিবাচ্ছে। বুক সমান পানির মধ্যে মুখ ডুবিয়ে এভাবে খাবার খায় মহিষ।
এমন দৃশ্য দেখার পর অল্প দূরত্বেই দেখা যায় চারদিকে পানি বেষ্টিত একখণ্ড জমিতে ঘাস খাচ্ছে কয়েকটি গরু। তবে মহিষ যেখানে ঘাস খাচ্ছিল সেখানে তার মনিবও ছিলেন ছাতা মাথায়। দেখে মনে হচ্ছিল মহিষগুলোকে নির্দেশ দিচ্ছেন এখানে মাথা ডুবাও, খাবার খাও! আর মহিষগুলো মনিবের কথা মতো পানিতে নাক-মাথা ডুবিয়ে খাচ্ছে।
কিছু পথ যাওয়ার পর খালিয়াজুড়ি গ্রামের পাশে আরও একটি বিলে দেখা যায় শতাধিক মহিষ একইভাবে খাবার খাচ্ছে। মূলত যেসব জমিতে মহিষ বিচরণ করছে সেখানে বর্ষার আগে ধান খেত ছিলো। বর্ষার কারণে পুরো জমিতে এখন থই থই পানি।
খালিয়াজুড়ি গ্রামের মহিষ পালক ফয়সাল আহমেদ জানান, আমাদের গ্রামে সব ঘরেই মহিষ রয়েছে। তার নিজের রয়েছে ৪টি। তিনি বলেন, শুধু ডুব দিয়ে নয়, মহিষ সাঁতরাতে পারে আর তার পায়ে যদি ঘাস বা লতা-পাতা আটকায় তাতেও ডুব দিয়ে খেতে পারে।
‘মহিষগুলো পায়ের স্পর্শে বুঝতে পারে এখানেই তার খাবার। আর তাতেই মাথা ডুবিয়ে দেয়। এভাবেই সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খাবার খায় তারা,’ যোগ করেন ফয়সাল আহমেদ।
আরেক মহিষ পালক মামুনুর রশিদ জানান, মহিষ দিয়ে আমরা হাল চাষ করি, এর দুধ খাই। দুধ বেশি পেতে হলে কাঁচা ঘাস খাওয়াতে হয়। তাই বৃষ্টি হোক আর রোদ হোক এভাবেই পানির মধ্যে ঘাস খাওয়ানো হয় মহিষকে। এ সবই তাজা ঘাস।
তিনি বলেন, টাটু হলো ঘাসের নাম (স্থনায়ী নাম)। পানিতে ডুবা এসব ঘাস খেয়ে মহিষগুলো বেশ তরতাজা হয়ে উঠছে। বড় মহিষের সঙ্গে তাদের বাচ্চাগুলোও অনুসরণ করছে এমন পদ্ধতি।
**ছয় মাস কৃষক, ছয় মাস বেকার
** বর্ষায় মাঝি, শুকনায় রাজমিস্ত্রি
** পানি নয়, সাতছড়ির ছড়ায় এখন শুধুই বালু
**প্রকৃতিপ্রেমিদের জন্য অনন্য সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান
** ভাড়াউড়া লেকের সৌন্দর্যে কালো মেঘ যোগাযোগ ব্যবস্থা
**লাউয়াছড়ায় ১৫ হেক্টরের মধ্যেই দর্শনার্থী সীমাবদ্ধ
**লাউয়াছড়ায় অর্থকরী ফসলের আত্মকথা
**নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন মিহির কুমার দো
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৬
এসএম/আইএ