তার সংস্পর্শে এসে সমালোচিত সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদও। বিএনপিপন্থী মেয়র মহসীনের সঙ্গে দহরম-মহরম থাকায় সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে দুই ঘরানার এ দু’জন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মৌলভীবাজার-৪ আসনে আওয়ামী লীগের টিকিট নিয়ে ৫বার বিজয়ী উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ। এলাকায় তাঁর প্রভাবও তাই ব্যাপক। কমলগঞ্জ উপজেলায় সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও দু’টি সেতুর নামকরণ করেছেন নিজের নামে। আওয়ামী লীগকে পরিবারতান্ত্রিক দলে পরিণত করে ফেলেছেন তিনি। আর তাই নিজ এলঅকাতেই ব্যাপক সমালোচিত উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ।
আরো একদফা সমালোচিত হচ্ছেন তিনি জনগণবিমুখ মেয়র মহসীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার কারণে। বিষয়টি ভালভাবে নিচ্ছেন না দলের নেতাকর্মীরাও। এনিয়ে তাদেরও কথা শুনতে হয়।
দলীয় নেতাকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই বলেছেন, সরকারি অর্থে এলঅকার উন্নয়ন করার বদলে নিজের আখেরই গোছাচ্ছেন মেয়র মহসীন। নিজের বাড়ির আশপাশের সৌন্দর্য বর্ধন করে যাচ্ছেন তিনি। সরকারি অর্থে নির্মিত অডিটরিয়াম করেছেন। কিন্তু সেটা করেছেন নিজের নামে। এসব কারণে ব্যাপক সমালোচিত এই মেয়র। মধুর সঙ্গে দহরম মহরত থাকায় সমালোচিত হচ্ছেন সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদও।
মহসীন মিয়া মধুর সঙ্গে সাংসদ আব্দুস শহীদের দহরম মহরমের পেছনে জোরালো কারণও আছে। শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জে মধু মিয়ার চা বাগান আছে। চা-শ্রমিক ইউনিয়নে আধিপত্য ধরে রাখতে মেয়র মহসীনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে চলেন সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদ।
সরেজমিন দেখা গেছে, পৌরসভার ঠিক বিপরীত দিকের সড়কে ঢুকতেই চোখে পড়ে আলিশান বাড়ির প্রধান ফটকে লেখা ‘মহসীন নিবাস’। মহসীন মিয়া মধুর দু’তলা এই বাড়ির প্রধান ফটকই জানান দেয় ভেতরের শানশওকতের কথা। নজরকারা কারুকাজে নির্মিত বাড়ির সীমানাপ্রাচীর। ফটকের সামনেই তিন রাস্তার মোড়ে নান্দনিক কারুকাজে গড়ে তোলা হয়েছে নৌকার মাস্তুল ও পাল সম্বলিত ভাস্কর্য। প্রধান ফটক পেরিয়ে বামের পুকুরটিকে আরও নান্দনিক করে তুলতে নির্মাণ করা হয়েছে কারুকাজ খচিত প্রাচীর। পুকুরের দু’টি ঘাটের সিঁড়ির বসার বেঞ্চ স্টীলের আর্চ দিয়ে ঘেরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব সৌন্দর্য বর্ধনে সরকারি অর্থের অপব্যবহার করেছেন মহসীন মিয়া মধু। স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদ সরকারি অর্থে মেয়র মধুর কথিত এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে কখনো স্বোচ্চার হননি। উল্টো তাকে প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছেন। এই কারণে এমপি ও মেয়র দু’জনকেই সমালোচনা করছেন সাধারণ মানুষ, ভোটার এবং তাদের অনুসারীরাও।
আগামী সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-৪ আসনে বিএনপির উপযুক্ত প্রার্থীর সংকটও প্রকট। পৌরসভার মেয়র হওয়ার পর মহসীন মিয়ার দৃষ্টি সংসদ সদস্য পদের দিকে। অথচ নিজের জ্ঞাতসারেই প্রতিদ্বন্দ্বী গড়ে তুলছেন আব্দুস শহীদ।
নিজের অলক্ষ্যে নিজের বিরুদ্ধেই মহসীন মিয়া মধুকে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হবার সুযোগ করে দিচ্ছেন নাতো সাংসদ আব্দুস শহীদ?
নিজের ইমেজ সংকট আর প্রতিদ্বন্দ্বী তৈরীর খেসারত আব্দুস শহীদকে দিতে হতে পারে-- সংসদীয় আসন ঘুরে এমন কথাই শোনা গেল স্থানীয় অনেক বাসিন্দার মুখে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৭
এনইউ/জেএম