ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভোটের-কথা

স্বপনে পুড়বে আওয়ামী লীগের কপাল!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২৪ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০১৭
স্বপনে পুড়বে আওয়ামী লীগের কপাল! আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন

জয়পুরহাট থেকে ফিরে: আওয়ামী লীগের ছড়াছড়ি এখন জয়পুরহাটে। যে জেলা ছিলো বিএনপির ঘাঁটি, সেখানে এখন শত শত আওয়ামী লীগার, যাদের পূর্ব পরিচয় ছিলো বিএনপি-জামায়াত! এ অবস্থায় কালাই উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে থাকা একজন নেতা বলছেন, তিনি ভোট দেবেন বিএনপিতে। আরেকজন আওয়ামী লীগের উপজেলা পর্যায়ের সদস্য ক্ষোভে বলছেন, তিনি ভোটই দিতে যাবেন না।

জয়পুরহাট-২ (আক্কেলপুর, ক্ষেতলাল ও কালাই) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন। তাকে এখানকার জেলা আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা পছন্দ করেন না।

বিএনপি-জামায়াত তারই প্রশ্রয়ে দলে ভিড়েছে-এমন অভিযোগ করছেন নেতাকর্মীরা। আর পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের একাংশকে নিয়ে তিনি আলাদা একটি বলয় তৈরি করেছেন। এর ফলে জেলার মূল ধারার আওয়ামী লীগের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপনের দূরত্ব তৈরি হয়েছে।

 

স্থানীয় আওয়ামী লীগ বলছে, স্বপন কেন্দ্রীয় নেতা। তার এখানে গ্রুপিং মানায় না। কিন্তু তারপরও নিজের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করেন। যে কারণে তৃণমূল আওয়ামী লীগে স্বপনের ঠাঁই নেই। ক্ষমতার ব্যবহার করেই তিনি টিকে আছেন- এমন অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সামছুল আলম দুদু এমপি স্বপনের গ্রুপিং করে দলে বিশৃ্ঙ্খলা সৃষ্টির কথা স্বীকার করে বলেন, ‘বড় দলের মধ্যে এ রকম সমস্যা একটু থাকেই’।

গত জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রাথী ঠিক করা নিয়ে দ্বন্দ্ব বড় আকার ধারণ করে। এখন মুখোমুখি দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন জেলা আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন।

প্রতিপক্ষের নেতাদের দাবি, দলের মধ্যে জেলা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের কোনো কথাই মানা হচ্ছে না। স্বপন একাই সব করতে চান। এসব কাজে জেলা আওয়ামী লীগের গুটিকয়েক নেতাকে সঙ্গে রাখেন।  

এ কারণে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে স্বপনের দূরত্ব বেড়ে গেছে। ফলে জয়পুরহাট-২ আসনে আগামীতে তার পক্ষে জয় নিশ্চিত করা কঠিন হবে। তার পক্ষ হয়ে অনেক আওয়ামী লীগ নেতা নামবেন না মাঠে। এমনিতেই নির্বাচনী আসনে যাওয়া-আসা কম স্বপনের। নিজ বাড়িও অন্য আসনে। তার ওপর বিএনপি যদি শক্ত প্রার্থী দিয়ে দেয়, তাহলে পরাজয় হবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামছুল আলম দুদু এমপি  বলেন, ‘আমি এমপি হওয়ার আগে পাঁচবিবি পৌরসভার মেয়র ছিলাম। এলাকায় যাই, মানুষের কথা বলি। মনোনয়ন যখন, তখন এলাকায় যাবো, আর পরে যাবো না- এমন নীতি আমার নেই। সময় সময় আমি এলাকার সঙ্গেই যোগাযোগ রাখি’।

এমপি স্বপন দা‌বি ক‌রেন, জয়পুরহাট আওয়ামী লী‌গের ৯০ শতাংশ নেতা বর্তমান সভাপ‌তি-সাধারণ সম্পাদকের ওপর অনাস্থা দি‌য়ে‌ছেন। দ‌লের নিয়ম অনুসারে বর্তমান সাধারণ সম্পাদ‌কের কা‌ছে অনাস্থার বিষয়টি লি‌খিতভা‌বে দি‌য়ে‌ছেন তারা।  

‌তি‌নিও আরও ব‌লেন, ‘আমার নির্বাচনী আস‌নে বিএন‌পির পদধারী কেউ এ‌সে আওয়ামী লী‌গে যোগ দেননি। যারা যোগ দি‌য়ে‌ছেন, তারা  বিএন‌পির সাধারণ কর্মী ছি‌লেন। নাশকতা ও আগু‌নের রাজনীতি তাদের পছন্দ হয়‌নি ব‌লেই আওয়ামী লী‌গে যোগ দি‌য়ে‌ছেন। এ‌তে দো‌ষের কিছু নেই’।

তবে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, ‘দ্বন্দ্ব জিইয়ে রেখে এক দলে মুখোমুখি দুই পক্ষ থাকলে আগামী নির্বাচনে অতীতের মতো বিএনপি ঘাঁটি গড়ে ফেলতে পারে। তখন আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই গ্রুপকেই খেসারত দিতে হতে পারে’।

বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০১৭
এসএ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।